বসন্ত এলেই বাংলার আকাশে বাতাসে মিশে যায় এক অনন্য রঙের আবহ। শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব হোক বা হোলির উদযাপন, বাঙালি নারীদের সাজগোজের বিশেষ একটি পর্ব থাকে এই উৎসব ঘিরে। হলুদের উজ্জ্বলতা, লালের আবেগ, সবুজের সতেজতা আর সাদা-গোলাপির সৌন্দর্য—এই সব রঙই উঠে আসে বসন্ত উৎসব ও দোলের ফ্যাশনে।

১. শান্তিনিকেতনী বসন্ত উৎসবের ট্র্যাডিশনাল সাজ
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
হলুদ বা গেরুয়া রঙের শাড়ি: শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসবে প্রথাগতভাবে নারীরা গেরুয়া, হলুদ বা মাটি রঙের শাড়ি পরেন, যা বসন্তের উজ্জ্বলতার প্রতীক।
হাতের কাজ করা ব্লাউজ: কাঁথা স্টিচ, সুতি বা সিল্কের ব্লাউজ যা হাতের কাজ করা থাকে।
গোলাপ বা বেলফুলের মালা: খোঁপায় ও হাতে ফুলের মালা পড়া বসন্ত উৎসবের ঐতিহ্যগত চিহ্ন।
টিপ ও আলতা: গাঢ় লাল টিপ আর আলতা পরলে পুরো ফ্যাশন সম্পূর্ণ হয়ে ওঠে।

২. হোলির জন্য ক্যাজুয়াল ও কমফর্টেবল ফ্যাশন
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
সাদা কুর্তি ও পালাজো / লেহেঙ্গা: হোলির দিন হালকা, আরামদায়ক সাদা বা অফ-হোয়াইট কুর্তি বা লেহেঙ্গা পরলে রঙের ছোঁয়ায় তা আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
বান্ধনী বা টাই-ডাই দোপাট্টা: উজ্জ্বল রঙের বান্ধনী বা টাই-ডাই ওড়না বা দোপাট্টা হোলির আনন্দ আরও ফুটিয়ে তোলে।
সানগ্লাস ও অক্সিডাইজড জুয়েলারি: বড় ঝুমকা, অক্সিডাইজড নেকলেস এবং কালারফুল চুড়ি ট্রেন্ডিং।

৩. ইন্দো–ওয়েস্টার্ন টাচ বসন্ত ও হোলির জন্য
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
ফিউশন ধাঁচের শাড়ি ড্রেপিং: বেল্ট বা ডেনিম জ্যাকেটের সাথে কটন বা লিনেন শাড়ি দারুণ ফিউশন লুক তৈরি করে।
ধুতি-প্যান্ট ও শর্ট কুর্তি: আরামদায়ক অথচ স্টাইলিশ বিকল্প হিসেবে ধুতি-প্যান্ট ও শর্ট কুর্তি দারুণ মানানসই।
কালার ব্লকিং ও হাতের কাজের পোশাক: রঙের বৈচিত্র্য যেন বসন্ত উৎসবের প্রাণ। লাল-হলুদ, নীল-গোলাপি কম্বিনেশন স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি করে।
ফ্যাশনে সাবধানতা ও যত্নের পরামর্শ
কৃত্রিম রঙ ব্যবহারের কারণে পোশাকের ক্ষতি হতে পারে, তাই পরার আগে কাপড়ে হালকা নারকেল তেল লাগিয়ে নিন।
সুতির ও আরামদায়ক পোশাক পরুন, যাতে সারাদিন মজা করা সহজ হয়।
খোলা চুলের বদলে খোঁপা বা বেণী বাঁধা ভালো, এতে চুল রঙ থেকে অনেকটা বাঁচবে।
বসন্ত উৎসব ও হোলি মানেই শুধুই রঙ নয়, এটা আমাদের সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের অংশ। তাই এবারের ফ্যাশনে যোগ হোক রঙিন ট্র্যাডিশন আর আধুনিকতার মেলবন্ধন!
শেয়ার করুন :