ইন্টেরিয়র ডিজাইনে এই মেটেরিয়াল কত জরুরি জানেন ? -

Green kitchen with bar close up

ইন্টেরিয়র ডিজাইনে এই মেটেরিয়াল কত জরুরি জানেন ?

স্ট্রাকচার,ইনস্টলেশন,টেকশ্চার,রঙ,অন্দরসাজের নিখুঁত সৌন্দর্য্য….

আমাদের বাড়ির ইন্টেরিয়র ডিজাইনের প্ল্যান করতে অনেক চিন্তা ভাবনা করে থাকি যা করা উচিত।বাড়ি হল এমনই একটি জায়গা যেখানে আমরা জীবনের বেশিরভাগ সময় থাকি।সেইজন্য এখানে প্রাণের আরাম আর শান্তির প্রয়োজন।বাড়ির পরিবেশ আর আবহ মূলত ইন্টেরিয়র ডেকরের রূপটানে নির্ভর করে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণের সমাহারে একটি বাড়ির নিখুঁত সৌন্দর্য্য সৃষ্টি হয় যেমন ফ্লোরিং,ওয়ালস,ডোরস এবং চার দেয়ালের মধ্যে আরো যা থাকে তাই দিয়ে।

অন্দরসাজের সৌন্দর্য্যবৃদ্ধির জন্য যে মেটেরিয়াল প্রয়োজন তা হল ল্যামিনেট।এর বিষয়ে আপনি বেশি  কিছু না  জানলেও ল্যামিনেট আপনার বাড়িকে ঝলমলে,পলিশড আর ফিনিশড করে সাজিয়ে তোলে। এই রচনায় ল্যামিনেট মেটেরিয়াল নিয়ে বিশদে এবং বাড়িতে এর উপকারিতা বিষয়ে আলোচনা করব।

ল্যামিনেট শিটস

ল্যামিনেট শিটস একপ্রকার জনপ্রিয় সারফেস মেটেরিয়াল যা বাড়ির আর অফিসের অন্দরসাজে ব্যবহার করা হয়।ল্যামিনেট শিটস সহজেই সারফেসের যেমন দেওয়ালের,ফার্ণিচারের রূপসৌন্দর্য্য বাড়িয়ে তোলে।এর নান্দনিক সৌন্দর্য্যের গুণ ছাড়াও বাইরের ক্ষতি থেকে বাড়ির সুরক্ষা যেমন রুক্ষ আবহাওয়া আর অন্যান্য উপদ্রব থেকে বাড়িকে সুরক্ষিত রাখে।

ল্যামিনেট শিটসের ধরণ :

ল্যামিনেট শিটসের পার্থক্য দুভাবে বোঝা যায় ,প্রথমত এর গড়ন বা স্ট্রাকচার দ্বিতীয়ত এর কার্যকারিতা।

স্ট্রাকচারের বিষয়ে:

১)সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড ল্যামিনেট শিটস আর কম্প্যাক্ট ল্যামিনেট শিটস এই দুই রূপে পাওয়া যায়।স্ট্যান্ডার্ড আর কম্প্যাক্ট ল্যামিনেটস শিটসের প্রধান পার্থক্য এর থিকনেসে। রেগুলার ল্যামিনেটসের অনেক ছোট ম্যাক্সিমাম ঠিকনেস ১.৫ মিমি। এর বিপরীতে কম্প্যাক্ট ল্যামিনেটসের থিকনেস ৩০ মিমি পর্যন্ত হতে পারে।এটা ল্যামিনেটস নির্মাতাদের ওপর নির্ভর করে।

২) ল্যামিনেট শিটস তৈরির সময় এতে কতটা প্রেশার দেওয়া হয়েছে সেই অনুযায়ী পার্থক্য বুঝতে পারা যায়। লো প্রেশার ল্যামিনেট ল্যামিনেট পেপার যা একটা পার্টিকল বা ফাইবারবোর্ডের সঙ্গে গ্লু দিয়ে সাঁটা তা থেকে তৈরী হয় ,আর হাই প্রেশার ল্যামিনেট এক্সট্রিম প্রেশার দিয়ে জোড়া হয় যাতে এর গড়ন অত্যন্ত বলিষ্ঠ হয়।

কার্যকারিতার বিষয়ে:

১) ইন্ডাস্ট্রিয়াল ল্যামিনেটস – ইন্ডাস্ট্রিয়াল ল্যামিনেটস খুব শক্তিশালী আর ধকল সহ্য করতে পারে।দুর্দান্ত ভালো কাজের ল্যামিনেটস যা ফায়ার রিটার্ডেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল আর কেমিক্যাল রেসিস্টেন্ট।অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল আর কেমিক্যাল রেসিস্টেন্ট বৈশিষ্টের কারণে হসপিটালের জন্য আদর্শ।

২) ডেকোরেটিভ ল্যামিনেটস – নামেই বোঝা যাচ্ছে যে এই ল্যামিনেটসের প্রধান বৈশিষ্ট্য যেখানেই কোট করা হয় তার সৌন্দর্য্যবৃদ্ধি করা।।ডেকোরেটিভ ল্যামিনেটস অনেক প্যাটার্ন আর স্টাইলে পাওয়া যায়। ডেকোরেটিভ ল্যামিনেটস মূলত নানা ধরণের ফার্ণিচারের ডেকোরেটিভ কোটিং তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

বাড়িতে ল্যামিনেট শিটের ব্যবহার:

আমরা ল্যামিনেশন শিটের কার্যকারিতা সম্পর্কে জেনেছি – নান্দনিক আকর্ষণ আর সুরক্ষা। কিন্তু এর ব্যবহার কোথায় করতে হবে ?আর এই ল্যামিনেট আমাদের বাড়িতে কতটা কাজে দেবে ? একে তো কিছুর বা কারোর ওপরে লাগাতে হবে ,তাই না?দেখে নেওয়া যাক কি করে আর কোথায় এই ল্যামিনেট শিটস লাগাতে হয়।

১) ল্যামিনেট ফ্লোরিং: ল্যামিনেট ফ্লোরিং প্রচলিত হার্ডউড ফ্লোরসের তুলনায় অনেক সহজেই ইনস্টল আর মেন্টেন করা যায়। এর আরো সুবিধে হল তুলনায় কম খরচ আর অন্যান্য ফ্লোরিং ইনস্টলেশনের তুলনায় অনায়াসে ইনস্টল করা যায়।এই কারণে ল্যামিনেট ফ্লোরিং অত্যন্ত সুবিধাজনক আর বাঞ্ছনীয়।মোটামুটি দীর্ঘস্থায়ী,স্বাস্থ্যকর (অনেক ধরণের মধ্যে  অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল রেসিন থাকে ) এবং সহজ মেন্টেনেন্স।

এখানে বলা দরকার ,যদিও ল্যামিনেট ফ্লোরিং খুব সহজ ও সুবিধাজনক হলেও একে পরিষ্কার রাখা খুব জরুরি।কারণ যেখানে ভিড় বেশি ,সেখানকার ধুলো,ময়লা,স্যান্ড পার্টিকলস রোজকার ব্যবহারে এর ক্ষতি করতে পারে।বাড়ির জন্যও ফ্লোরিংকে ভালো রাখতে নিয়মিত একটু যত্নের প্রয়োজন।

২) ল্যামিনেটেড ডোরস: দরজা ল্যামিনেট করার দু রকম পদ্ধতি আছে,দরজা বানানো বা ইন্স্টলেশনের পরে তাতে ল্যামিনেট লেয়ার লাগানো।এটা সেইসব বাড়ির জন্য যেখানে আগেই দরজা আছে তাতে ল্যামিনেট করা হচ্ছে।অন্য পদ্ধতি হল ল্যামিনেট কভার দিয়েই দরজা তৈরি করা হয়েছে।

ল্যামিনেটেড ডোরস দরজার সারফেসে ফ্ল্যাট পেপার আর রেসিন প্রেস করে তৈরি হয়,যাকে এর পরে শক্তিশালী করতে ক্লিন – সিজন্ড আর সলিড ফিলার্স দেওয়া হয় যা সুন্দরভাবে একে ওপরের সঙ্গে ফিট করে যায়। ল্যামিনেটেড ডোরস অনেক ভ্যারাইটি আর স্টাইলে পাওয়া যায়।

৩)কিচেন ক্যাবিনেটস আর কাউন্টারটপস: ল্যামিনেট শিটস আগেকার প্রচলিত ধারণা ছেড়ে কিচেনকে কম খরচে রিডেকোরেট করার আজকের আধুনিক পদ্ধতি।ল্যামিনেটেড ক্যাবিনেটস,কাউন্টারটপস আর ফ্লোরিং অনেকদিন চলে আর এই জায়গাকে অবাঞ্ছিত স্ক্র্যাচ,কালো হয়ে যাওয়া মেটেরিয়াল /উড থেকে রক্ষা করে।

ল্যামিনেটিং মেটেরিয়াল বিভিন্ন ধরণ,টেকশ্চার আর রঙে পাওয়া যায় আর এর বিপুল সম্ভারের আর একটা কারণ হল প্রত্যেকটি টেকশ্চারের মধ্যে আলাদা ডিজাইন থাকে।কিচেনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত টেকশ্চারস হল  টেকশ্চার্ড ফিনিশ,হাই গ্লস ফিনিশ,ম্যাট ফিনিশ আর সলিড কালার্স।

৪.ওয়ার্ডরোবস: বাড়িতে সর্বত্র ওয়ার্ডরোব থাকে,বেডরুমে,লিভিং রুমে,হল,কিচেন এমনকি বাথরুমেও।যেহেতু ওয়ার্ডরোবের প্রয়োজনীয়তা সর্বত্র,তাই বাড়ির অন্দরসাজে এর ভূমিকা অপরিসীম।

নান্দনিকতার জন্য ক্যাবিনেটসকে একটা ঝকঝকে দেখার জন্য ল্যামিনেটেড করে নিতে হয়।আর শুধু নান্দনিকতাই নয় এর স্বাস্থ্যকরী সুবিধা আছে।ল্যামিনেটেড কোটিংস থাকার জন্য ক্যাবিনেটের  ধুলোবালি খুব সহজেই পরিষ্কার করা যায়।

যেহেতু ল্যামিনেটেড মেটেরিয়াল ময়েশ্চার আর আবহাওয়ার ওঠা নামাতে প্রতিরোধী বলে এই ওয়ার্ডরোবস দীর্ঘস্থায়ী হয়। ল্যামিনেটেড কোটিং আর আগে থেকেই ল্যামিনেটেড ওয়ার্ডরোবস একইসঙ্গে দৃষ্টিনন্দন আর সুরক্ষা বিধি গুণমান সমৃদ্ধ।

পরিশেষে

বাড়ির অন্দরসাজে ল্যামিনেশনের এত উপকারিতার কারণে দিনে দিনে ভারতে ল্যামিনেট শিটসের চাহিদা ঊর্ধ্বগামী। সবাই বাড়ির সব জায়গায় ল্যামিনেটেড কোটিংয়ের সুবিধা,রূপমাধুর্য,সুরক্ষা আর উপযোগিতার বিষয়ে সচেতন হচ্ছেন।সেঞ্চুরি প্লাইয়ের ল্যামিনেটস রেঞ্জের বিশাল সম্ভার দেখে নিতে  চোখ রাখুন : 

https://www.centuryply.com/centurylaminates/

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *