শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বিশেষ পরামর্শ।
বর্ষা মানেই জীবাণুর বাড়াবাড়ি!
ডঃ বিকাশ প্রকাশ, গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট,অ্যাপোলো হসপিটালসের অভিমত, “বর্ষাকালে ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ বেড়ে যায়। জলবাহিত রোগ যেমন টাইফয়েড, হেপাটাইটিস A, ডায়েরিয়া খুব সাধারণ।”
বর্ষাকালের আর্দ্রতা ও খাদ্যদূষণ শিশুর থেকে বড়, সবাইকেই করে তোলে সংবেদনশীল। একদিকে হজমশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে, অন্যদিকে দূষিত জল ও খাদ্য থেকে সংক্রমণ ঢুকে পড়ে শরীরে। তাই এখনই চাই সতর্কতা ও সচেতনতা।
ডঃ প্রতীক পোদ্দার, শিশু বিশেষজ্ঞ, পিয়ারলেস হসপিটালসের পরামর্শ :
শিশুদের পেটের যত্নে করণীয়:
পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ জল দিন
খিচুড়ি, ডিমসেদ্ধ, সেদ্ধ সবজি—এইসব সহজ হজমযোগ্য খাবার দিন
অপরিষ্কার রাস্তার খাবার, কাটা ফল ও আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন
হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
“বাচ্চাদের ডিহাইড্রেশন খুব দ্রুত হয়। ডায়ারিয়া বা বমি হলে অবহেলা নয়—ওআরএস দিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।”
ডঃ সঞ্জয় বসু, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ,আমরি হসপিটালস বলেন,”অনেকেই ভাবেন, একদিন বাইরের খাবার খেলে কিছু হবে না। কিন্তু এই অনিয়মই পেটের বড় সমস্যার সূচনা করে।”
বড়দের খাদ্যতালিকায় যা রাখা উচিত
✅ দিনে অন্তত ২.৫ লিটার বিশুদ্ধ জল পান করুন
✅ প্রোবায়োটিক (দই, ঘোল) হজমে সহায়ক
✅ জিরে জল বা আদা-তুলসির ক্বাথ পান করুন
✅ হালকা, সুষম ও কম মশলাযুক্ত খাবার খান
✅ বাইরের ফুচকা, পাকোড়া, বিরিয়ানি এড়িয়ে চলুন
বর্ষাকালে সাধারণ পেটের সমস্যা ও প্রতিকার
সমস্যা | লক্ষণ | করণীয় |
ডায়ারিয়া | ঘন ঘন পাতলা পায়খানা | ওআরএস, বিশ্রাম, পরামর্শ মতো অ্যান্টিবায়োটিক |
ফুড পয়জনিং | বমি, জ্বর, পেটব্যথা | তরল খাদ্য, চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ |
অ্যাসিডিটি / গ্যাস্ট্রিক | পেট ফোলা, ঢেঁকুর, বুকজ্বালা | আদা-জল, হালকা খাবার, প্রয়োজনে অ্যান্টাসিড |
হেপাটাইটিস টাইফয়েড | জ্বর, বমি, ক্লান্তি, চোখ-চামড়া হলদে | রক্ত পরীক্ষা,প্রয়োজনে হাসপাতাল ভর্তি |
ঘরোয়া টিপস যা সত্যিই কাজে দেয়
“জিরে-জল, হিং মেশানো গরম দুধ, লেবু-তুলসি-আদার জল—বর্ষাকালে হজমে দুর্দান্ত সহায়ক। তবে ঘরোয়া উপায়ে উপশম না হলে ডাক্তার দেখাতে দেরি করবেন না।”
ডঃ সন্দীপ পাল, গ্যাস্ট্রো বিশেষজ্ঞ, ফোর্টিস হসপিটাল বলছেন, ‘অবচেতনভাবে ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বিপজ্জনক। বর্ষাকালে রোগের প্রকৃতি দ্রুত বদলায়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাবেন না।’
*এই নিবন্ধটি সাধারণ তথ্যের জন্য যা কোনোভাবে ওষুধ আর চিকিৎসার বিকল্প নয়। অসুখ বা কোন উপসর্গ ,লক্ষণ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
শেয়ার করুন :