এই সময়ের অন্যতম সেরা খবর দুর্গাপুর তথা আপামর পশ্চিমবঙ্গের গর্ব মাহি সরস্বতী রজক অল ইন্ডিয়া নিট (NEET ) পরীক্ষায় প্রথম হয়ে দিল্লির বিখ্যাত এইমস এ ডাক্তারি পড়তে যাচ্ছে।
সরস্বতীর এই দিগ্বিজয়ী কৃতিত্ব অনন্য কারণ তাকে ও তার পরিবারকে অভাব ও দারিদ্রের সঙ্গে অপরিসীম যুদ্ধ করে এই এই দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করতে হয়েছে।এই সাফল্য সর্বসমক্ষে আসার আগে এই সার্থক নাম্নী সরস্বতীর দৃষ্টান্তমূলক কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসা লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল।আড়ালে ছিল চাকরি হারিয়ে বাড়ি বাড়ি গ্যাস ওভেন সারানো বাবার পরিশ্রম আর মায়ের স্নেহ আর দু চোখ ভরা আশা।
সরস্বতী ছোট থেকেই ডাক্তার হতে চেয়েছিল।প্রথমে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র,পরে সাগরভাঙ্গা হাই স্কুল ও ডিপিএস ওল্ড গার্লস হাইস্কুলে পড়াশোনা,তারপর রানীগঞ্জ টিডিবি কলেজ থেকে বোটানিতে স্নাতক।
অ্যাসবেস্টসের ছাউনির একচালা ঘরে কাঠের উনুনে রান্না যাপনে সরস্বতীর দুর্দমনীয় যুদ্ধ কে কুর্নিশ জানাতে হয়।বিশেষত ডাক্তারি পড়ার এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি এমনিতেই যেখানে বেশ কঠিন সেখানে সরস্বতীর যুদ্ধ যেন পায়ে ২কেজির বাটখারার ওজন নিয়ে ম্যারাথন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতন যার মধ্যে নিজের চোখে বিনা চিকিৎসায় দিদিমার মৃত্যু প্রতক্ষ্য করতে হয়েছে তাই সরস্বতী বলেছেন ,’‘আমার লক্ষ্য চিকিৎসক হয়ে দীনদরিদ্র মানুষের সেবা করা। গরিব মানুষের চিকিৎসা পরিষেবায় যেন ঘাটতি না থাকে।’
আনন্দের খবর অনগ্রসর তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ায় তার পড়াশোনার দায়ভার বহন করবে এইমস কর্তৃপক্ষ। এমনকি এইমসের ডাক্তারি পরীক্ষায় সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রথম স্থান অধিকার করার সুবাদে ৩ মাস অন্তর সে ৫০ হাজার টাকা করে বৃত্তি পাবে।
সরস্বতী সেই সব অনামা অজানা লক্ষ লক্ষ অভাবী মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের প্রেরণা যারা লোকচক্ষু আর প্রচারের আড়ালে চূড়ান্ত অভাব,কষ্টের মধ্যে প্রাণপাত করে বিদ্যাশিক্ষা করছে বুকে একরাশ স্বপ্ন আর প্রত্যয় নিয়ে।
ইউরোপীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে শিক্ষিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নারী চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলী (১৮ জুলাই, ১৮৬১ – ৩ অক্টোবর, ১৯২৩) সরস্বতীর এই দুর্দান্ত সাফল্যর কাথা জেনে নিশ্চয়ই খুশি হতেন ও আশীর্বাদ করতেন।
ছবি ও আংশিক তথ্য ঋণ – আজকাল
শেয়ার করুন :