দুগ্গাপুজোর আশ্চর্য অজানা ইতিকথা -

তৈলচিত্র -উইলিয়াম প্রিন্সেপ ১৮৪০ উইকিমিডিয়া কমন্স

দুগ্গাপুজোর আশ্চর্য অজানা ইতিকথা

রঘুনন্দনের লেখা দূর্গাপূজার পদ্ধতি, উৎপত্তি,ব্রিটিশ আমলের বনেদী ও বারোয়ারি পুজো, স্বাধীনতা সংগ্রাম….

সুদেষ্ণা ব্যানার্জি

দুর্গাপুজাকে নিয়ে পুরাণ,শাস্ত্রে ,রামায়ণ,মহাভারতে অজস্র আকর্ষণীয় গল্প বাঙালি ঐতিহ্য  পুজোপ্রেমীদের কাছে খুব একটা অজানা নয় বিশেষত যারা পুজোর সৃষ্টি,ইতিহাস সম্বন্ধে আগ্রহী ও উৎসাহী, এবং আজকের প্রজন্মের কাছে দুর্গোপূজো শুধু ৫দিনের বৎসরান্তিক আনন্দ উৎসব,কোন থিম এবছর সেরার সেরা,ঠাকুর দেখা,ফেস্টিভ পার্টি,কব্জি ডুবিয়ে পান ভোজনের বাইরে ,কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের দুর্গোপূজোর অনেক আশ্চর্য অজানা ইতিকথা।

ছবি-সুব্রহ্মণ্য মন্দির ভাস্কর্য মহিষাসুরমর্দিনী,তাঞ্জোর(অ্যালামি )

শুরুতেই এ কথা পরিষ্কার করে বলা দরকার যে মা দুর্গার যে রূপ আমরা দেখি সেটা ব্রাহ্মণ্য রূপকল্পনা এবং আঞ্চলিক দেব-দেবীর সমাহার।খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দী থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত প্রান্তিক দেবী থেকে বৈষ্ণব,তান্ত্রিক বৌদ্ধ ও জৈন,শৈব নানা রূপের সাম্প্রদায়িক পরিচয় পেরিয়ে আসতে হয়েছিল।গুপ্ত সাম্রাজ্যে দেবী দুর্গা প্রথম অস্পষ্ট থেকে প্রতিভাত হয়েছেন।

মার্কেন্ডেয়পুরাণে কথিত আছে রাজা সুরথ নিজ রাজ্যপাট গভীর অরণ্যে সমাধি বলে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁরা দুজনে মেধামুনির দেখা পান যিনি ওঁদের দুর্গাপুজোর কথা ব্যাখ্যা করায় রাজা সুরথ পৃথিবীতে প্রথম দুর্গাপুজো করেন।প্রত্নতাত্ত্বিক সূত্র অনুসারে মোগল সাম্রাজ্যকালে ১৬শ শতাব্দীতে রাজা উদয়নারায়ণ দুর্গাপুজো  শুরু করতে উদ্যোগী হন ১৫৮০ সালে।কিন্তু অধিকাংশ ইতিহাসবিদের মতে উদয়নারায়ণের সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি।তার নাতি কংসনারায়ণ রাজশাহী জেলার তাহেরপুরে সেই সময় ৮ লক্ষ টাকা ব্যয় করে দুর্গাপুজো করেন।অন্যমতে ১৬০৬ খ্রিস্টাব্দে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বংশধর ভবানন্দ মজুমদার এবংকলকাতায় সাবর্ণ রায়চৌধুরী বংশের প্রতিষ্ঠাতা লক্ষীকান্ত মজুমদার দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন।এর পর কালে কালে অন্যান্য হিন্দু রাজারা যেমন গৌড়,রাজমহল,মুর্শিদাবাদ,কৃষ্ণনগর দুর্গাপুজো আড়ম্বরসহ পালন করার ফলে তখন থেকেই এই পুজো সারা বছরে বাঙালির প্রধান এবং বড়ো উৎসবে পালিত হয়।          

  আরও পড়ুন :

প্রথমদিকে এই পুজোর আয়োজন কেবল মাত্র রাজা,মহারাজা এবং জমিদাররাই করতেন এবং তাতে সারা গ্রামের মানুষ সাধ্যমতো সানন্দে যোগদান করতেন।

ছবি- শোভাবাজার রাজবাড়ী দুর্গাপুজো -শাটারস্টক

দুর্গাপুজোয় উৎসব ও আমোদ আহ্লাদের প্রচেষ্টা সম্ভবত নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় (১৭১০-১৭৮২)।সেই সময় উল্টোরথের দিনে কামান ছুঁড়ে মা দুর্গার মূর্তির মাটি আনা হতো।মাকে পুরুষদের যুদ্ধসাজে সাজানো হত।১৮২৯ সালে প্রকাশিত ‘সমাচার দর্পণ’ এ প্রকাশিত নদিয়ার রাজা দুর্গাপুজোকে প্রকান্ড উৎসবে পরিণত করেছেন এবং শুধু নিজে নন তাঁর অধীনস্থ জমিদারদেরও দুর্গোপূজো করতে উৎসাহ এবং উৎসাহভাতাও দিতেন।

সেই সময় দুর্গোৎসব রাজা এবং জমিদারদের কাছে পুজোর আয়োজনের বাইরে ইংরেজ শাসকদের তোষামোদ এবং মনোরঞ্জনের প্রধান উৎসব হয়ে দাঁড়ায়। শোভাবাজারের মহারাজ নবকৃষ্ণ দেব (১৭৩৩-৯৭) পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে থাকার সুবাদে লর্ড ক্লাইভের তাঁদের দুর্গাপুজোয় যোগদানের কথা সুবিদিত।এছাড়া রানী রাসমণির বাড়ি, কুমোরটুলির ‘ব্ল্যাক প্রিন্স’ গোবিন্দরাম মিত্র ১৭২০ -১৭৫৬)র পুজো,শিবকৃষ্ণ দাঁ,অভয়াচরণ মিত্র, বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরী,হাটখোলার  দত্ত,ছাতুবাবু লাটুবাবু,ভবানীপুরের মল্লিক বাড়ি,দর্পনারায়ণ ঠাকুর, এমন অনেক বিখ্যাত পুজো বিখ্যাত ছিল।সেই সময়ের কথা অনুযায়ী মা দুর্গা গয়না পরতেন শিবকৃষ্ণ দাঁর বাড়ি,আহার করতেন কুমোরটুলির অভয়াচরণ মিত্রের বাড়ি আর নাচ গান শুনতেন শোভাবাজারের দেব বাড়িতে।    

দুর্গাপুজোকে উপলক্ষ করে সায়েবদের তোষামোদ ও খাতিরের জন্য বেলাগাম উচ্ছৃঙ্খল উৎসবে ভারতের নামকরা বাইজি,সংগীতশিল্পী,বাংলা রঙ্গ রসিকতা,সঙ্গে মহার্ঘ মদিরা ও সুখাদ্য  সব ধরণের    ব্যবস্থার আয়োজন ছিল। ক্যালকাটা গেজেটে ২০ সেপ্টেম্বর ১৮১৭ সালে চুঁচুড়ার প্রাণকৃষ্ণ হালদারের পুজোর বিজ্ঞাপন :

Baboo Prankrishna Holdar of Chinsurah :

Begs to inform the Ladies & Gentlemen and the public in general that he has commenced giving a Grand Nautch from this day that it will continue till 29th inst.Those ladies and gentlemen who have received invitation tickets are respectfully solicited to favour him with their company ……every attention and respect will be paid….he will be happy to furnish them with tiffin (sic),Diner (Sic),Wine & etc …during their stay there.

তবে দিনে দিনে এইসব দুর্গোপুজোতে পুজো উপলক্ষ এবং আমোদ,উচ্ছাস,খানা পিনা ,শ্বেতাঙ্গ ইংরেজ প্রভুদের খাতিরদারি আসল লক্ষ্য হয়ে ওঠায় সেই সময় শিক্ষিত এবং গোঁড়া পন্ডিত ,ব্রাহ্মণদের প্রতিবাদ অসন্তোষ বাড়তে থাকে এবং সেই সময়ের ইংরেজ সরকার এই বিষয়কে ভালো চোখে দেখেনি।১৮২৩ সালে ভবানীচরণ মুখোপাধ্যায় কলিকাতা কমলালয় প্রবন্ধে লিখলেন

‘Durga Puja in Calcutta is better described as a festival of chandeliers,lamps,poets,nautch girls or even the wife’s ornaments and clothes.’  এর স্বপক্ষে ১৩ই অক্টোবর ১৮১৯ সালে ক্যালকাটা জন বুলের সংবাদ,’ The nautches ,it must be confessed ,have of late acquired rather bad name.’

১৮৪০ সালের ইংরেজ সরকারের প্রমালগামেশন ল –‘Prohibiting  Company officials from attending native social occasions .

পাটনা দুর্গাপুজো ওয়াটারকালার ১৮০৯ -শাটারস্টক

 বাংলায় দূর্গাপূজার পদ্ধতিগুলি আমরা রঘুনন্দনের লেখা থেকেই পাই, তাই রঘুনন্দনকে দুর্গাপূজার প্রথম বিধানদাতা বলা যেতে পারে। পূর্বে দেবী দুর্গা ছিলেন প্রস্তর নির্মিত মাতৃমূর্তি। পৃথিবীর অনেকগুলি দেশে বহু প্রাচীন দেবী দুর্গার প্রস্তরমূর্তি পাওয়া গেছে। যেমন-নবম থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ইন্দোনেশিয়ার অঙ্করভাট এবং কম্বোডিয়ায় অনেকগুলি প্রস্তর নির্মিত মহিষমর্দিনী মূর্তি পাওয়া গেছে। মায়া সভ্যতাতেও যে দেবী মূর্তি পাওয়া গেছে তিনি সিংহবাহনা।মা দুর্গার সিংহবাহিনী রূপের ইতিহাস নানা মতে বিভক্ত।মথুরায় প্রাপ্ত কুষাণযুগে মহিষাসুরমর্দিনীর মূর্তি পাওয়া গেছে যে মূর্তির ওপর পশ্চিম এশিয়ার সিংহবাহিনী এবং মাতৃত্ব ও প্রজননের দেবীর সাদৃশ্য ও প্রভাব রয়েছে।কিন্তু কিন্তু কলকাতা ও অন্যান্য অঞ্চলে ১৯৩৩ সালের আগে শুধু প্রথাগত মা দুর্গার মূর্তি পূজিত হত। মা দুর্গার মাতৃরূপ থেকে যুদ্ধাংদেহী মহিষাসুরমর্দিনী রূপের পরিবর্তনে কুমোরটুলি সার্বজনীন পথিকৃৎ।১৯৩৩ সালে তৎকালীন কুমোরটুলির শ্রেষ্ঠ সন্তান গোপেশ্বর পাল ইতালি থেকে ভাস্কর্যের দীক্ষা নিয়ে ফিরেছেন এবং ঠিক করলেন যে প্রথাগত আটচালা ভেঙে আলাদা আলাদা মূর্তি এবং পুরাণকথা অনুযায়ী মা দুর্গার মহিষাসুরমর্দিনী রূপে মূর্তি গড়বেন।বলা বাহুল্য এই নিয়ে সেই সময় তিনি অত্যন্ত চাঞ্চল্য ও বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখি হলেন,মূল ভাস্কর জগদীশ পাল অসুস্থতার অজুহাতে কাজ ছেড়ে দিলেন ,পন্ডিতেরা প্রবল বাধা দিয়ে হুমকি দিয়েছিলেন যে এই মূর্তির পুজা করবেন না ,কিন্তু এত বাধার বিপক্ষে থেকে গোপেশ্বর নির্মাণ করলেন যে মহিষাসুরমর্দিনী রূপ তা দিনে দিনে প্রবল জনপ্রিয় হল এবং জনমত নির্বিশেষে সবাই সাদরে গ্রহণ করল।   

জমিদার এবং উচ্চবিত্ত  ধনী সম্প্রদায়ের আয়োজিত দুর্গাপুজোয় সাধারণ বাঙালির কোনো অবদানের সুযোগ ছিলনা,আর উৎসব আমোদ আহ্লাদ  নাচ গান খানাপিনার আসরে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।১৭৯০ সালে কলকাতা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরত্বে গুপ্তিপাড়ায় ১২ জন ব্রাহ্মণ বন্ধু দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন।বারো ইয়ার থেকে বারোয়ারি শব্দের উৎপত্তি।ফ্রেন্ডস অফ ইন্ডিয়া কাগজে ১৮২০ সালে প্রকাশিত ‘’…a new species of Pooja has been introduced in Guptipara,…a number of Brahmins formed an association for the celebration of Pooja independently….’

সেই সময়ের প্রেক্ষিতে এটি একটি যুগান্তকারী দৃষ্টান্তমূলক কাজ ছিল কারণ তার আগে দুর্গাপুজোর আয়োজন কেবল ধনী প্রতিপত্তিশালী ক্ষমতাবান উচ্চবিত্তদের আয়ত্তে ছিল।প্রথম বছরে ৭০০০ টাকা  চাঁদা উঠেছিল এবং সেই পুজো প্রবল জনপ্রিয় হওয়ার পর কাছাকাছি শান্তিপুর,কাঁচরাপাড়া আর চুঁচড়োয় বারোয়ারি পুজো শুরু হয় ও অল্পদিনের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়তা এবং সাফল্য অর্জন করে,হুতুম প্যাঁচার নকশায় উল্লেখ পাওয়া যায় যে চুঁচড়ো,শান্তিপুর পুজোর আড়ম্বর, জাঁক জমক,বিশাল  প্রতিমা দেখতে কলকাতা থেকে নৌকো করে বিপুল দর্শক সমাগম হতো।         

ছবি-১৯২৮ ,নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও শরৎচন্দ্র বসু সিমলা ব্যায়াম সমিতি পুজোয় প্রসাদ খাচ্ছেন।সিমলা ব্যায়াম সমিতি ডট কম।  

দুর্গাপুজোর সঙ্গে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতক্ষ্য যোগ ছিল।অষ্টমীর দিন বীরাষ্টমী পালনের প্রচলন ছিল যেখানে সকাল থেকে লাঠি খেলা,ছুরি খেলা,জুজুৎসু ,কুস্তি ও বক্সিং প্রতিযোগিতা চলত যা ব্রিটিশের চোখে ধুলো দিয়ে পুজোর সময়ের অনুষ্ঠানের মোড়কে হত।সিমলা ব্যয়াম সমিতি ১৯২৬ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনকে উজ্জীবিত করতে অতীন্দ্রনাথ বসুকে প্রেসিডেন্ট করে শুরু হয় এবং এই পুজোর সঙ্গে শরৎচন্দ্র বসু,স্বামী বিবেকানন্দের ভাই ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত,উপেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় ,কিরণ মুখার্জির মতন স্বদেশীদের প্রতক্ষ্য যোগদান ছিল।পূজা মণ্ডপে পলাশীর যুদ্ধ,সিপাহী বিদ্রোহের ইতিহাসের দৃশ্যসজ্জা সাজিয়ে তোলা হত এবং  দুর্গাপুজোকে জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতোনা সংগ্রামের সক্রিয় দৃপ্ত উদ্ভাসের জন্য ইংরেজ সরকারের রোষানলে পড়ার কারণে ১৯৩২-১৯২৫ এই পুজো বন্ধ করে দেওয়া হয়,আবার ১৯৩৯ সালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট  নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর তত্ত্বাবধানে সুদীর্ঘ ২১ ফুট উচ্চতার প্রতিমা তৈরী হয় এবং প্রথম একচালা ভেঙে আলাদা আলাদা মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল।সিমলা ব্যায়াম সমিতি ছাড়া সেই সময় বীরাষ্টমীর প্রচলন ছিল বাগবাজার সার্বজনীন ও কুমোরটুলি সার্বজনীন দুর্গাপুজোয়।সেই সময়ে বঙ্কিমচন্দ্র লিখেছেন আনন্দমঠ।রাজশাহী জেলের বন্দিরা দুর্গাপুজো শুরু করলে সেই নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় কারণ ইংরেজ সরকার অনুমতি দিচ্ছিলেন না বলে শেষে শাসককে ভূপেন্দ্রনাথ দত্তের প্রতিবাদী চিঠি যে জেলবন্দি কয়েদিদের ধর্মাচরণে বাধা দেওয়ার অধিকার কতৃপক্ষের নেই এবং পরে বেঙ্গল গবর্মেন্টের আধিকারিক স্যার হিউ স্টিফেনসন জেলে দুর্গাপুজো করার অনুমতি দিতে বাধ্য হন।হিজলি জেলে নারী স্বাধীনতা সংগ্রামীরা,শান্তি দাশ,বনলতা দাশগুপ্ত,ইন্দুসুধা ঘোষ,বিনা দাশেরা রবীন্দ্রনাথের তপতী নাটক মঞ্চস্থ করেন।স্বাধীনতার পর দুর্গাপুজোর উন্মাদনা ও উচ্ছাস প্রবল ভাবে বেড়ে ওঠে।                        

তথ্যসূত্র:সুদেষ্ণা ব্যানার্জির ‘দুর্গা পুজা-ইয়েস্টারডে,টুডে অ্যান্ড টুমরো বইটির আংশিক বঙ্গানুবাদ।বিহানি সরকার – হিরোইক শক্তিজম- কাল্ট অফ দুর্গা ইন এনশিয়েন্ট ইন্ডিয়ান কিংশিপ।সুরথ চক্রবর্তী – ইতিহাস ও গবেষণায় দেবীদুর্গা

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *