সুশান্ত সিং রাজপুতের জীবন অকালে চলে যাওয়ার পর শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতে নয় , ডিপ্রেশন নিয়ে মনে ঝড় তুলেছে আমার, আপনার ,সবার I অভিজ্ঞ মনোবিদ ,সোশিওলজিস্ট এবং ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসা কিছু মানুষের খুব প্রয়োজনীয় কিছু কথা –
১) ডিপ্রেশন শুধু সমাজের উঁচুস্তরের স্বচ্ছল মানুষদের হয় এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল । সম্প্রতি করোনাকালে অভাবের , যন্ত্রণার জন্য যারা নিজেরদের জীবন নিয়েছেন তাদেরও ডিপ্রেশন থাকতে পারে ।
২) সাইকায়াট্রিস্ট এর কাছে যাওয়া মানেই আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি ,বন্ধু বান্ধব,পাড়া প্রতিবেশীকে সহজ ভাবে বলতে হবে ,’ আজ বিকেলে আমার সাইকায়াট্রিস্ট এর সঙ্গে আপোয়েনমেন্ট আছে । সহজ, সোজা, সপাট ।
৩) এই নিয়ে ফেসবুক আর হোয়াটস্যাপ বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান, খুন না আত্মহত্যা ,অংকিতা ,রিয়া নতুন কি বলল ,কি বেরোল এই নিয়ে ফালতু চাপ নেবেন না, লোকের গসিপও কান দেবেন না।
৪) ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারের নানা দিক আছে ,তা একমাত্রিক নয়। কখনও কগনিটিভ বিহেভেরিয়াল থেরাপি বা কখনও ওষুধে ,কাউন্সিলিং এ সেরে যেতে পারে । কারুর তাড়াতাড়ি ,কারুর দেরিতে । প্লিজ এটা পেটের অসুখ নয়,মনের অসুখ এটা মেনে নিতে হবে বিশেষত তার চার পাশের লোকেদের, পি আর গ্রূপ কে ।
৫) ‘মর্দ কো দর্দ নহি হোতা’মানে বীরপুরুষদের ডিপ্রেশন হয়না এই ভুল ধারণা থেকে বেরোতে বোধহয় সুশান্ত সিং রাজপূত চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেল । আর আমাদের ছোটবেলা থেকে শোনা ‘এ মা , মেয়েদের মত কাঁদছিস কেন ‘ শুনে তো আমরা অভ্যস্ত।
৬) এ বড় সুখের সময় নয়। যে আলু চাষি ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না , যার এই সময়ে চাকরি গেল, যার আর সঞ্চয় নেই ,আর এর মধ্যে সেভাবে প্রতিনিয়ত জানতে না চাইলেও মিডিয়া আর সোশ্যাল মিডিয়া ঘাড় ধরে জানিয়ে যাচ্ছে রোজ কত দ্রুতহারে সংক্রমণ বাড়ছে ,আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে স্বর্গ ,মর্ত, পাতাল সব লোকের ডিপ্রেশন হচ্ছে কিন্তু সে সেটা ফেসবুকে এক্সপ্রেস করতে পারছেনা।এর মধ্যে আবার আমার আপনার পাশের লোক খুব হাসিখুশি মনে হলেই সে দারুণ ভাল আছে এমন নাও হতে পারে কারণ সে হয়ত ‘স্মাইলিং ডিপ্রেশনে’ ভুগছে , যেখানে সে তার বিষন্নতা কে ডিফেন্ড করছে ।
এইসব নিয়ে আমাদের চলতে হবে । তাই –
‘ হাল ছেড়োনা বন্ধু,বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে,দেখা হবে তোমার আমার অন্য গানের ভোরে।’
শেয়ার করুন :