এখন এই অতিমারিতে বাড়ির চারবেলার রান্না শুধু ঝকমারি নয় যুদ্ধও বটে।সকালের ব্রেকফাস্ট লাঞ্চ,বিকেলের স্ন্যাক্স রাত্রের ডিনারের এত রান্নাবান্না যা আবার একঘেয়ে আর বিস্বাদ হলে পুরো পরিশ্রমই মাটি আর বিরক্তি।পুরো বিষয়টা একটা প্ল্যান করে নিলেই নির্ঝঞ্ঝাট সুখী গৃহকোণ।
‘গল্প হলেও সত্যি’ছায়াছবি মনে আছে?যেখানে এই রান্না নিয়ে অশান্তির মধ্যে দেবদূতের মত রবি ঘোষ ধনঞ্জয় রুপে এসেছিলেন?বাড়িতে গরমে রান্নাবানা যাতে সুস্বাদু,স্বাস্থ্যকর আর সুনিপুণ হয় তার জরুরি টিপস এখন আক্ষরিক অর্থে আপনার হাতের মুঠোয়।
১) বাড়ির সবার রুচি অনুযায়ী সারা সপ্তাহের বাজার এক দিনে করে নিন।তাতে সুরক্ষা আর সময়ের সাশ্রয় হবে।এই গরমে আর সংক্রমণের আশংকায় রোজ বাজারের ফ্রেশ জিনিস কেনার প্রয়োজন নেই।এখন অনলাইনে ডেলি বাজার,বিগ বাজার, স্পেনসার্স, গ্রফার্স,অ্যামাজনে মাছের মুড়োও পাওয়া যায়।
২)রান্নার একটা সাপ্তাহিক প্ল্যান করে নিন।মাছ,মাংস,ছানা,পনির,ডাল,সব্জি সেই অনুযায়ী বাজার করুন।এর মধ্যে ব্যালান্স করা খুব দরকারি।নিম পাতা আনলেন কিন্তু বেগুন ভুলে গেলেন,পাতলা হালকা কাটা পোনার ঝোল প্ল্যান করলেন কিন্তু ঝিঙে,পটল,বেগুন ভুলে গেলেন,কুমড়োর ছক্কা রান্নার ছোলা ভুলে গেলে হবে না।
৩) আগের দিন রাত্রে পরের দিনের রান্নার শাক সব্জি কেটে রেডি করে রাখুন।রান্নাকরতে অনেক সময় বাঁচবে।যাদের বাড়িতে রান্নার পরিচারিকা সকালে আসেন তাদের বাড়ির সাধারণত এই নিয়ম।
৪)সকালে রান্না সেরে নেওয়া ভাল।এই গরমে দুপুরে রান্নাঘর এড়ানো উচিত।
৫) বাড়িতে গ্লুকোজে লেবু মিশিয়ে এক গ্লাস জল খেলে রান্নার সময় ক্লান্তি আর বিরক্তি ভাব কেটে সতেজ থাকবেন।
৬) গ্যাস ফুল করবেন না ,এতে রান্নাঘরে বেশি হিট জেনারেট করে।মিড্ সিমে রান্না করুন।
৭) সুতির পোশাক পরে রান্না করুন।
৮) গাছে স্প্রে করার বটলে জল ভরে দু ফোঁটা ওডিকোলন দিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন।রান্না করার ফাঁকে মুখে স্প্রে করে নিন,আরাম পাবেন।এছাড়া রান্নার ফাঁকে ভেজা নরম কাপড়ে মুখ মুছলেও আরাম পাবেন।
৯) এই গরমে রান্নায় অনেক সময় লাগে আর তেল মশলা আর আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বেশি কাটা কোটার ঝামেলা বিহীন রান্না রোজকার মেনুতে রাখুন।এতে দ্বিগুন উপকার।রান্নার সময় আর শরীরের যত্ন।
১০) প্রয়োজনীয় বাসনকোসন,মশলাপাতি আগে থেকে গুছিয়ে রাখুন, রান্নার সময় সেগুলোর জন্য যেন ছোটাছুটি করতে না হয়।
১১) কোনো বেলায় কী খাবার পরিবেশন করতে চান, তা আগে থেকে ঠিক করে রাখা উচিত।
১২) মাছ বা মাংস ম্যারিনেট করে রাখার প্রয়োজন হলে সেটিও আগের রাতে করে রাখলে সময় বাঁচবে আর রান্নাও সুস্বাদু হবে।
১৩) গ্যাস ছাড়া অন্য গ্যাজেটস- রাইস কুকার,মাইক্রোওয়েভ, ইন্ডাকশানে রান্না ভাগ করে নিলে শুধু গ্যাসের সামনে দীর্ঘক্ষণ থাকতে হবে না।
১৪) রান্নাঘরের ভেন্টিলেশনের দিকে লক্ষ্য রাখুন।এখন প্রায় সব বাড়িতেই কিচেন চিমনি থাকা সত্ত্বেও রান্নার সময় অন করতে ভুল হয়।এছাড়া বাড়ির বাকি ভেন্টিলেশনের দিকেও নজর দিন।
১৫)এই সময়ে আর আবহাওয়ায় প্রত্যেকদিনের মেনুতে নানারকম নয়,কম পদ কিন্তু সকলের ভাল লাগবে এমন কিছু মেনু সিলেক্ট করে রাখুন আর বাড়ির সবাইকে এই ডিসিপ্লিন মেনে চলতে অনুরোধ করুন।এখন সবার নিজস্ব পছন্দের খাওয়ার রকমারি আইটেম রান্নার অসুবিধে বুঝিয়ে বলুন।প্রতিদিন নয় সপ্তাহে একদিন প্রত্যেকের নিজের পছন্দের ডিশ রান্না করা যেতেই পারে।আর একান্ত অসুবিধে হলে সেই ডিশ অনলাইনে অর্ডার করা যায়। .
শেয়ার করুন :