গত ২৪শে নভেম্বর একাডেমিতে আবার মঞ্চস্থ হল মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের রচিত নাটক ‘সক্রেতাস ‘। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের (৪৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ – ৩৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ ) তথ্য লিখিতভাবে পাওয়া যায় তার শিষ্য প্লেটোর সংলাপ ও সৈনিক জেনোফনের রচনা থেকে।শাসকের রোষে তাঁকে হেমলক বিষ পানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।পশ্চিমি দর্শনের ভিত্তি স্থাপনকারী সক্রেটিস এমন চিন্তাধারার জন্ম দিঁয়েছেন যে সুদীর্ঘ ২০০০ বছরের ওপর পাশ্চাত্য সংস্কৃতি,দর্শন ও সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছে।
রানা বসু পরিচালিত ও নাম ভূমিকায় দৃপ্ত অভিনেতা রজতাভ দত্ত।এই নাটক ঠিক বায়োপিক নয়,বলা যেতে পারে এই নাটকের প্রয়াস সক্রেটিসের নির্মাণ,অবিরত ন্যায়ের পথে নিজের রাস্তা খুঁজে নেওয়া এবং নানা ঘাত প্রতিঘাত স্বত্তেও সেই বিশ্বাসে অটল থাকা যা তাঁকে নিয়ে যায় গভীর বিষণ্ণ ট্র্যাজেডির দিকে।
নাট্যদল ‘ নাট্যশালা’র এই নাটকে অসামান্য অভিনয় করেছেন রজতাভ দত্ত।সংলাপনির্ভর নাটকে স্বরক্ষেপণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি রজতাভ ও পরিচালক রানা বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন যা প্রশংসনীয়।প্রৌঢ় দার্শনিকের ভূমিকায় তাঁর ব্যক্তিত্ব ,দ্বন্দ্ব, হতাশার মধ্যে সুক্ষ রসবোধ এই নাটকের বড় পাওনা। নাটকের দলগত অভিনীত অন্যান্য নজরকাড়া চরিত্রদের মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হয় দক্ষ অভিনেতা সৌমিত্র বসু, ক্রিটিয়াসের চরিত্রে শুভ গুপ্তভায়া,প্রবীণ নাগরিকের চরিত্রে বিশ্বজিৎ রায় ও সমীর কুন্ডুর অভিনয়।চমকে দেয় মান্য ডাক্তার শুভাশিস গাঙ্গুলির পেলেউস চরিত্র।দুটি নাটকীয় মুহূর্তে তাঁর চমৎকার অভিনয় মনে থাকবে।পরিচালক রানা বসু ও নাট্যশালা দলের সকলকে অভিনন্দন ,বিশেষত এত কম উপাদানে এত সুন্দর মঞ্চসজ্জা,আবহ আর আলোর ব্যবহার খুব ভালো লেগেছে।
শেয়ার করুন :