উলু, উলু, উল্লুক -

ছবি- শুভেন্দু সরকার

উলু, উলু, উল্লুক

‘প্রথম রাতে বিছানার অর্ধাংশ যিনি দখল করেন তিনিই অর্ধাঙ্গিনী ৷’

সঞ্জীব চট্টেপাধ্যায়

অনেকদিন পরে চিত্ত আড্ডায় এল৷ বেশ ফিটফাট, ঝকঝকে৷ আগে মাসে একবার দাড়ি কামাত৷ আজ একেবারে মোম পালিশ করা মুখ৷ চেহারাটা ফিরেছে৷ সেই তেলেভাজা মুড়ি খাওয়া অঞ্চলের রুগিমার্কা চেহারাটা নেই৷ ঝট করে চাকরিটা পেয়ে গেছে৷ জুতো জোড়া কমসে কম হাজার তিনেক টাকা হবে৷ পায়ে থাকলেও সেই জুতোর কি অহংকার, পারলে আমাদের মাথায় ওঠার ইচ্ছে৷ আমাদের জুতোগুলো লজ্জায় আসনের আরো ভেতর দিকে মুখ লুকোতে চাইছে৷ চিত্তর জামা আর প্যান্ট, দুটোই ব্র্যান্ডেড ৷ হাতঘড়িটাও জবরদস্ত৷ চিত্ত কাছে বসে থাকলেও দূরত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে৷ একটা সেন্ট মেখেছে৷ মৃদুগন্ধ ৷ অভিমানীর অভিমানের মতো ৷ চিত্তর কি হল কে জানে? পতন না উত্থান!

চিত্ত বললে, “কি হল? সব চুপ মেরে গেলি! যেন শোকসভা!”

আশু বললে, “না, তা নয়৷ তবে ঘরে একটা সোফা নেই কেন, ভাবছি৷ আমাদের আড্ডার অবস্থা ফেরেনি, যা ছিল তাই আছে৷”

চিত্ত বুঝলেও, না বোঝার ভান করে বললে, “নাম পালটাতে গেলে কি করতে হয় রে?”

“এফিডেবিট ৷ কার নাম পাল্টাবি ?”

“আমার নাম ৷ এই চিত্ত নামটা কেমন যেন থপথপে, এক নাদা গোবরের মতো৷ তেমন স্ট্রেংথ নেই, ভাইব্রেশান নেই ৷ একসঙ্গে দুটো ত ৷ তারপরেই থ, দ, ধ৷ বর্ণমালার এই সারিটা খুব দুর্বল ৷ জলে ভেজা খবরের কাগজের মতো ৷’

আশু বললে, “রঞ্জনটা ফেলে দিলি কেন? চিত্তরঞ্জন !”

“আরে ধুর আমি কেন ফেলবো! কেউ না বললে আমি কি করব? কেউ বলছে চিত্তবাবু, কেউ চিত্তদা৷ এই চিত্তদা বললেই মনে হয় কবিরাজি কাটলেট, ডবল হাফ চা, ফিস ফ্রাই৷’

“এই রকম মনে হওয়ার কারণ? মানসিক রোগ নয় তো?”

“এই কোলকাতায় কিছু নামের সঙ্গে কিছু জিনিস এমন ভাবে জড়িয়ে গেছে জীবনেও ছাড়ানো যাবে না চিত্তদার রেস্তোঁরা , অনাদির মোগলাই, ভীমনাগের সন্দেশ ৷’

“ব্যাপারটা কি৷ একটু খুলে বল না ৷ হঠাৎ এমন মনে হওয়ার কারণ? যেমন ধর একটা গাধা জন্ম থেকে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত গাধা ৷ কোনো গাধা কোথাও ঘোড়া হয়ে মরেছে শুনেছিস? আমার মনে হয় গাধাকে ঘোড়া বললে সে অপমানিত বোধ করবে ৷’

“তুই অন্যদিকে চলে গেলি ৷ গাধা একটা জাতি৷ আসিতেও গাধা, অন্তেও গাধা৷ আমি মনুষ্য, মানব ৷ অবশ্যই আমি দানব হতে চাইব না ৷ আবার দানবও মানব হতে চাইবে না ৷ আমি বলছি নামের কথা ৷ তুই একটা কুকুরকে কালুয়া বলে ডাকতিস ৷ তার সে বোধ থাকলে তোকে এসে ঘ্যাঁক করে কামড়ে দিত ৷ আমি মামার বাড়ি যাওয়া ছেড়ে দিয়েছি ৷”

“সে কি রে! নেই কলেজে পড়ার সময় সবাই আমরা দল বেঁধে গিয়েছিলুম৷ ফ্যান্টাসটিক জায়গা আর সেই রকম উপুড় করা খাতির ৷ চিৎ করে দিলি? কারণটা কি?”

“আরে আমি ঢুকছি ৷ তখন কটা হবে! সকাল দশটা সাড়ে দশটা ৷ বড় মামা ওই গাড়ি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ৷ বললেন, “কি রে চিত্ত, বাঁশ এনেছিস?” আমি অবাক ৷ বাঁশ কেন আনব! তারপর দেখি আমার পেছনে একজন ৷ সেও চিত্ত ৷ ভারা বেঁধে বাড়ি রঙ করবে ৷ বড় মামার তার সঙ্গেই যত কথা ৷ বাঁশ ছাড়া এই চিত্তর সঙ্গে একটি কথাও বললেন না ৷ ভীষণ অভিমান ৷ বাঁশওলা চিত্তর যত খাতির ৷ আমাকে যেন দেখতেই পেলেন না ৷’

“এটা কোনো ব্যাপার নয়৷ তুই বাড়ির একজন ৷তোকে আলাদাভাবে খাতির করার কোনো কারণই নেই৷’

“এর পরেরটা শোন ৷ সেদিন সন্ধেবেলা এদিক-সেদিক ঘুরে ফিরে এসেছি৷ বড় মাইমা মেজমাইমাকে বললেন, চিত্ত এসেছে৷ বড়মামা ঘর থেকে বললেন, “ওর টাকাটা মিটিয়ে দাও৷ আর বলো, কম যেন আরো দুটো বাঁশ আনে, পশ্চিম দিকের বেড়াটা ঠিক করতে হবে ৷ গরু ঢুকছে ৷’ তুই বল, এরপর আর ওই বাড়িতে যাওয়া উচিত! চিত্ত মানে বাঁশ, বেড়া গরু ৷’

“তুই নাম পালটালে, ওরা তোকে নতুন নামে ডাকবে? কেউ ডাকবে? তোর এখন বয়েস কতো?”

“”গতকাল পঁচিশে পড়লুম৷ দেখছিল না, যা পরে আছি সব নতুন ৷ এবারে বেশ জমাটি করে হল!”

“কেন? কারণটা কী?”

“বাঃ, রৌপ্য জয়ন্তী তো ৷ পঁচিশে ঢুকে গেলুম ৷ পাঁচ বছরে বিরাট একটা ফাঁড়া ছিল ,তারপর সব সোজা ৷ স্ট্রেট ড্রাইভ”।

“ফাঁড়াটা কী? কি হয়েছিল?”

তেমন কিছু হয়নি ৷ বাড়ির সবাই অপেক্ষা করে রইল কি হয়, কি হয় ! ফাঁড়া হল তিনটে হয় সাপে কামড়াবে, না হয় জলে ডুববে, না হয় আগুনে পুড়বে ৷”

“তাহলে ওগুলোকে কি বলা হবে গাড়ি চাপা, ওপর থেকে পড়ে যাওয়া?”

“ওসব দুর্ঘটনা৷ কেউ যদি ইচ্ছে করে ঝাঁপ মারে, গলায় দড়ি দেয় তাহলে আত্মহত্যা ৷ খুব বাজে ব্যাপার ৷ সারা জীবন ভূত হয়ে নিজেও জ্বলবে, পরকেও জ্বালাবে ৷”

“জীবন বললি? সারা জীবন, জীবনই তো নেই৷ প্রেতের আবার জীবন কী? গ্যাসের মতো, ভেপারের মতো একটা গা ছমছমে ব্যাপার ৷ একে জীবন বলে না ৷’

“ওটাও এক ধরনের জীবন ৷ একটা ভীষণ অস্বস্তি৷ ধর কোনো কিছু চিবিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু দাঁত নেই৷ প্রেমিকার জন্যে আত্মহত্যা করে প্রেত হলি, তারপর প্রেমিকাকে জড়িয়ে ধরলি৷ তার দাঁতে দাঁতে লেগে গেল৷ চোখ উলটে অজ্ঞান ৷ রোজা এসে ঝ্যাঁটা পেটা ৷’

“কাকে পিটবে? ভূতের তো দেহ নেই৷ শুধু বদমাইসি আছে৷ তুমি আত্মহত্যা করলে কি হবে? তোমার বদমাইশি তো আত্মহত্যা করেনি ৷ এই তো সব পুরনো বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট করে দিলে, আরশোলা, ইঁদুর মরেছে ? ঝাঁটা খাবে বেচারা প্রেমিকা ৷ প্রেমিক ভূত হয়ে তার ভেতর ঢুকে অনবরত সুসসুড়ি দিচ্ছে ৷ ভূত যাকে ধরেছে রোজা বা ওঝা এসে তাকেই ঝ্যাঁটা দিয়ে পেটাচ্ছে, লোহা লাল করে ছ্যাঁকা  দিচ্ছে ৷ দুনিয়ার কি বিচার? রোদের একটা ব্যাপারে আমি সাবধান করব, অবশ্যই বন্ধু হিসেবে ৷ প্রেম থেকে সাবধান ৷ ভগবানের সঙ্গে প্রেম কর সে ঠিক আছে৷ কৃষ্ণ-রাধা, রাধা-কৃষ্ণ৷ একটা বাঁশি সে বাঁশি  বাজে না৷ কোথায় রাধা, কোথায় কৃষ্ণ? কীর্তনীয়া “সখি গো’, “সখি গো’ করে গলা চিরে ফেললে ৷ এ মন্দের ভালো৷ মোটামুটি নিরাপদ ৷ কিন্তু জ্যন্ত রাধার পাল্লায় পড়েছ, কি মরেছ!”

“হঠাৎ প্রেমের কথায় এলি কেন! ও তো ভীষণ খরচের ব্যাপার ৷ জমিদারি চাই ৷ কত উপহার লাগাতে হয় জানিস!”

“সম্প্রতি জেনেছি৷”

“কি ভাবে জানলি?”

“প্রেমে পড়ে ৷ একেবারে চিৎপাত৷ আমার প্রেম, জুতো, চুলের কাট্৷ গোঁপটা উড়িয়ে দিয়েছি৷’

“আরে তাই তো৷ গোঁফটা ফেললি কেন? তোদের ফ্যামিলিটাই তো গোঁফের জন্যে বিখ্যাত ৷”

“সে বললে ৷’

“সে আবার কে?”

“সে হল সে ৷সে বললেই বুঝতে হবে, কি বুঝতে হবে তুহি জীবন, তুহি মরণ ৷’

“তার মানে অনেক দূর এগিয়ে গেছিস ৷ আর একটু গেলেই সামিট ৷ চূড়ায় আরোহন ৷

“পতনও হতে পারে ৷ পা পিছলে আলুর দম ৷’

“তুই তো মেয়েদের তেমন পাত্তা দিতিস না ৷ হঠাৎ ঘুরে গেলি?”

“ঘুরিয়ে দিলে যে! আমাকে তো কিছু করতে হল না ৷ আমি তো এখনো বলছি , প্রেম করার মতো কষ্টকর, বিরক্তিকর কাজ বা প্রক্রিয়া দুটো নেই ৷ এরচেয়ে বিয়ে করা অনেক অনেক সহজ ৷ গট্গট্ করে গেলি৷ পিঁড়েতে বসলি ৷ খানিকটা শব্দ সহ্য করতে হবে শাঁক, উলুউলু, হুলুহুলু ৷ খুব বেশি না হলেও কিছু মন্ত্র তো পড়বেই ৷ সে উঁ উঁ করে ম্যানেজ করে দেওয়া খায়৷ একটা কলা গাছ, এক দুটি দুব্বো ঘাস ৷ লাল সুতো, সাদা সুতো, গুচ্ছের মেয়েলি ব্যাপার ৷ ওই রাতটা একটু সহ্য করতে হবে ৷ যেই সকাল হবে বউ নিয়ে বাড়িতে ল্যান্ড করলে ৷ অ্যার এক প্রস্থ এটা ওটা সেটা ৷ বউকে “ইন’ করিয়ে দিয়ে তুমি “আউটে’ চলে এলে ৷ এইবার চা খাও ৷ ধূমপানের অভ্যাস থাকলে একটা ধরাও ৷ চানটান করে খেয়েদেয়ে একটি সুন্দর দিবানিদ্রা ৷ শেষ অধিকার ৷’

“শেষ অধিকার মানে?”

“মানে পরের দিন থেকে শয্যার আধখানা তো তাঁকে ছেড়ে দিতে হবে ৷ সেই অধিকার হারানোর বেদনা চাপা দেওয়ার জন্যেই তো ফুল, মালা, রোশনাই, সানাই, ফুলশয্যা ৷ প্রথম দৃশ্য আর শেষ দৃশ্য একই রকম৷’

“মানে?”

“তোরা এত মানে’, “মানে’ করছিস মনে হচ্ছে এটা একটা ক্লাসরুম ৷ ফুল দিয়ে সাজানো খাটে সংসার শুরু ৷ টিকটিক টিকটিক ৷ কিসের শব্দ বল তো?”

“তোর মুখের ৷”

“আজ্ঞে না, টাইম বোম ৷ সময় এগোচ্ছে৷ চলেছে ৷ আর শব্দ নেই৷ আবার ফুল দিয়ে সাজানো একটি খাট। এবার সব সাদা ৷ লাল গোলাপের রাত ভোর ৷ আর শব্দ নয় ধ্বনি – বলো হরি ৷ প্রথম রাতে বিছানার অর্ধাংশ যিনি দখল করেন তিনিই অর্ধাঙ্গিনী ৷’

আশু বললে, “শোন, তুই একটা অপরাধবোধে ভুগছিস, তাই এত বকর বকর করছিস ৷ তুই তো দল ছাড়া ৷ আমরা অনেক আগেই খবর পেয়েছি ৷ তোকে পার্কস্ট্রিটে সুবল দেখেছে, বেশ একটু ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ট্যাক্সির পেছনের আসনে ৷’

“ভাহা মিথ্যে কথা ৷ এইটা জেনে রাখ, আমি প্রেমিক হতে পারি, লম্পট কখনোই নই ৷ ট্যাক্সিপ্রেম, রেস্তরাঁর  কেবিন প্রেম , পার্কের ঝোপের আড়ালে প্রেম আমার বিষয় নয় ৷ আমি দায়িত্বশীল প্রেমিক ৷ প্রেমে দায়িত্ব না মেলালে প্রেমের ওজন বাড়ে না ৷’

আশু জিজ্ঞেস করলে,’তোর প্রেমিকার ওজন কত? তুলে দেখেছিস?’ 

‘ আরে ধুর, আমি প্রেমিকার ওজনের কথা বলছি না ৷ অসভ্যের মতো একটা মেয়েকে তুলতে যাবো কেন?”

“সিনেমায় দেখেছি তো ৷ প্রেমিকাকে পাঁজাকোলা করে তুলে একটা মাঠে গোল হয়ে ঘুরছে ৷গান ছাড়া প্রেম হয় না৷ গান আর Gun ৷ প্রতিদ্বন্দ্বী তো থাকবেই ৷ তখন গান গেয়ে তো তাকে তাড়ানো যাবে না৷ তখন চাই Gun ৷ তখন হয় ফাঁসি, না হয় যাবজ্জীবন ৷ মৃত্যুর পর প্রেমিক, প্রেমিকাদের দাহ করতে নেই ৷ সমাধি ৷ তবেই না এই গান তোমার সমাধি ফুলে ফুলে ঢাকা ৷ প্রেমিক, প্রেমিকাদের অস্বাভাবিক মৃতু্টাই গৌরবের ৷ হয় নিজে ঝুলে পড়, না হয় ঝুলিয়ে দিক ৷ সেই কারণেই তো “ঝুলন’ উৎসব ৷ প্রেম ঝুলবে, প্রেম দুলবে ৷”

চিত্ত বললে, “বুঝতে পারছি, তোদের একটু জেলাসির ভাব হচ্ছে, স্বাভাবিক৷ যেই আমি বিয়ে করব, তোর৷ স্বাভাবিক হয়ে যাবি ৷ আমার নামটা চেঞ্জ করতে হবে ৷ একটা কারণ তো বললুম, আর একটা কারণ বলছি ৷ গতকাল আমার জন্মদিন ছিল৷ ও বললে সেলিব্রেট করব৷’

“কি বললি? ও! তার মানে হয়ে গেছে ৷’

“কি আবার হল?”

“ও হল! ও মানে সবটাই দখলে চলে গেছে ৷ ওই একটা শব্দেই লুকিয়ে আছে জীবনের সব কথা ৷’

“রাখ তো তোর যত কবিতা ৷ আমাকে একটা রেস্তোরায় নিয়ে গেল ৷ তার আগে আমাকে এই সব কিনে দিলে ! জুতো, মোজা,জামা, প্যান্ট, বেল্ট ৷ ট্রায়ালরুমে গিয়ে সব পরতে হল ৷ আপাদমস্তক দেখে বললে, ছোট্ট একটা ভুঁড়ি হলে ভালো হয় ৷ রেস্তরাঁয় ঢুকেই বললে “চিত্তদা, আজ এক নম্বর কবিরাজি চাই৷’ সেই চিত্তদা এই চিত্তর দিকে তাকিয়ে বললেন, “বুঝেছি !” একটা কেবিনের পর্দা সরিয়ে ইশারা করলেন, আমরা ঢুকে গেলুম ৷ পর্দাটা পরিপাটি করে টেনে দিলেন ৷ জীবনে এই প্রথম একটি মেয়ের সঙ্গে কেবিনে…”

“রোমান্স!”

“চুপ কর৷ রোমান্স নয়, রোমাঞ্চ৷ পাশে বসেছে, গা ঘেঁষে ৷ ভীষণ ভয় করছে ৷ গলা শুকিয়ে গেছে ৷ বুকের কাছটা কেমন করছে ৷’

“কার বুক!”

আমরা সমন্বয়ে প্রতিবাদ করলুম, “আশু!” তুই কেবিনের বাইরে থাক ৷ প্রাইভেসি ভঙ্গ করিস না ৷’

চিত্ত বললে “ঢুকুক না, অ্যাডাল্ট সিন কিছু পাবে না ৷ একবারই আমার কানটা কুটুস করে কামড়ে দেবে৷ ও কিছু না ৷’

আশু বললে, কেমন লাগল?”

চিত্ত বললে, “কেন বলব? যার যার তার তার ৷ আসল কথাটা বলি, যে কারণে তোদের কাছে আসা ৷ এত বড় বড় দুটো কোবরেজি এল ৷ ঝুরঝুরে, মুচমুচে ঝালর পরা ৷ খেতে খেতে ও কি বললে জানিস “চিত্ত বললেই কাটলেটের কথা মনে পড়ে, জিভে জল আসে৷ চিত্ত মানেই কাটলেট, কাটলেট মানেই চিত্ত৷’ তাহলে কি দাঁড়াল ? চিত্ত কাটলেট, কাটলেট চিত্ত ৷ না, না, নামটা পালটাতেই হবে৷ কিন্তু কি নাম?”

আশু বললে, “এইবার রেগে যাচ্ছি, সিরিয়াসলি৷ অনেক ভ্যানতাড়া করেছিস, নামটা বল ৷ নামে নামে মেলাতে হবে ৷’

“রঞ্জনা ৷’

“রঞ্জনা! সুন্দরী?”

“তা বলা যেতে পারে৷’

“চিবুকে ছোট একটা তিল?”

“ঠিক৷ তুই কি করে জানলি? মানে…৷’

“আমি জানবো না তো কে জানবে? রঞ্জনা আমার মামাতো বোন ৷ ব্রিলিয়ান্ট ৷ স্ট্যাটিসটিকসে এমএসসি ৷ দাঁড়া আজই যাচ্ছি ৷ সিঙ্কিং সিঙ্কিং ড্রিঙ্কিং ওয়াটার৷ শোন, তুই তোর নামের শেষটা ফেলে দিয়েছিলিস ৷ এখন ওটা তুলে নিয়ে সামনেরটা পরিত্যাগ কর-চিত্তহারা রঞ্জন! কার্ড করবি তো? আলো দিয়ে লিখবি তো! “রঞ্জন ওয়েডস রঞ্জনা’৷ কিন্তু আমার সঙ্গে তোর সম্পর্কটা বাজে হয়ে গেল৷’

“কেন? কেন?” আশু বললে, “শালা, আমি যে তোর শালা হয়ে গেলুম রে! উলু, উলু, উলু৷ তুই না চিরকালের একটা উল্লুক ৷ এতদিনে মানুষ হবি ৷ কার্টেসি আমার কাজিন রঞ্জনা ৷”

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *