ছোটবেলায় চুলের যত্নে মা ঠাকুমা গাঢ় সবুজ কেশুত পাতা মাথায় ঘষে লাগিয়ে দিতেন আর রিঠে দিয়ে চুল শ্যাম্পু করে দিতেন কারণ তখন এত হেয়ার নারিশিং কন্ডিশনার বেরোয়নি। চুলের যত্নে সেইসব ভেষজ ভেলকি টিপস :
১ ) আধ কাপ নারকেল তেলের সঙ্গে ৮/৯ জবা ফুলের পাতা মিশিয়ে ২ ঘন্টা ফুটিয়ে রাখুন।তারপর চুলের গোড়ায় মালিশ করে আধ ঘন্টা পরে শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুল শক্ত হয় আর ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে চুলের পুষ্টি বাড়ায়।
২) সপ্তাহে একদিন জবা ফুলের পাপড়ি বাটা মাখতে পারেন। এতে মিউসিলেজ আছে যা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার ।ড্রাই স্ক্যাল্পের সমস্যা মিটিয়ে চুলের আদ্রতা ও তেলের ব্যালেন্স ঠিক রাখে।
৩)চুল নরম রাখতে ২ চামচ পাতিলেবুর রস নারকেল তেলে মিশিয়ে সপ্তাহে দুদিন ২ ঘন্টা লাগিয়ে স্নান করে নিন।
৪) জুঁই ফুল গরম জলে ২ ঘন্টা ভিজিয়ে ছেঁকে বেটে নিন।নারকেল অথবা আমন্ড অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করলে চুলে পুষ্টি করায় আর চুল নরম থাকে।
৫) গোটা ধনে ধুয়ে রোদে ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নারকেল তেলে ভিজিয়ে রেখে মাখুন।এই তেলের ম্যাসাজ ফলিকলসের ক্ষতি সারায়,চুল পড়া বন্ধ করে।
৬)সপ্তাহে একদিন গরম নারকেল তেলের সঙ্গে আধ চামচ দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করলে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে পুষ্টি বাড়বে।
বাড়িতে হার্বাল শ্যাম্পু
৭ ) ৮/১০ শিকাকাই,১০ টি রিঠা ফল,৫-৬ টুকরো শুকনো আমলকি ৭৫০ মিলি জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন এই মিশ্রণ ৫ মিনিট ফুটিয়ে আর সিমে আরও ১৫/২০ মিনিট সেদ্ধ করে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিলেই শ্যাম্পু তৈরী।
৮) ৭/৮ টা স্ট্রবেরি,১ টেবিল চামচ মধু,১ টেবিল চামচ নারকেল তেল ব্লেন্ডারে ভালভাবে ফেটিয়ে শ্যাম্পু করে ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিলে নোংরা ধুয়ে চুলে সুগন্ধ,উজ্জ্বলতা ,স্ক্যাল্পের পি এইচ ব্যালেন্স আর তৈলগ্রন্থির ফ্লো ঠিক থাকে।
হার্বাল কন্ডিশনার ও মাস্ক
৯) শ্যাম্পুর পরে পাতা চায়ের লিকারের সঙ্গে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে চুল ধুয়ে নিন।কন্ডিশনারের কাজ হবে।
১০)পাকাকলা,অলিভ অয়েল আর মধু ব্লেন্ডারে ফেটিয়ে শ্যাম্পু করার আগে আধ ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন।রুক্ষ চুলের জন্য খুব উপকারী।
১১) আধ কাপ নারকেলের দুধ ,২ টেবিল চামচ মধু,১ টেবিল চামচ নারকেল তেল,আর অল্প দইয়ের মিশ্রণ রুক্ষ চুলের খুব ভাল মাস্ক।
১২)পাকা পেঁপে চটকে আধকাপ টকদইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে আধঘন্টা মেখে রাখলেই চুলের জেল্লা বেড়ে যাবে ।
১৩) এক মুঠো কলাইয়ের ডাল,১ চামচ মেথি একসঙ্গে বেটে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে মাখলে কন্ডিশনারের কাজ করবে আর চুলের গোড়া ফাটা আটকাবে।
১৪) ২ ডিমের কুসুম আর ২ চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মাখুন ,রুক্ষ চুলের জন্য খুব উপকারী।
১৫) চুলে ডিম মাখার পর সবসময় ঠান্ডা জলে চুল ধুতে হবে নইলে প্রোটিন চুলে বসে যায়।
১৬) ৬/৮ টি জবাপাতা,৩-৪ টি তুলসীপাতা,২ টি জবাফুল,৩ টেবিল চামচ মুগডাল বাটা,১ টেবিল চামচ নারকেল তেল আর এক কাপ জল মিশিয়ে ব্যবহার করুন,ফ্রেশ মানে টাটকা ব্যবহার করুন,বানিয়ে রেখে দেবেন না।
১৭) রুক্ষ চূলের সমস্যায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল মাসাজ উপকারী।এর সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিলে উপকার ডবল।
১৮) এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলের ডগা ফাটা,স্প্লিট এন্ড বন্ধ হয়ে যাবে।
১৯)আমন্ড ওলেলের সঙ্গে পাকা কলা চটকে মাখলে চুল সিল্কি মোলায়েম হবে।
২০)দই আর মধুর মিশ্রণ দিয়ে চুল ম্যাসাজ করলে চুলের শাইন ও সিল্কি হবে।
শেয়ার করুন :