‘ পূজার প্রাক্কালে শরতের বাতাসে এমন একটা কিছু আছে যাহা ঘরবাসী বাঙালিকে পশ্চিমের দিকে ও প্রবাসী বাঙালিকে ঘরের দিকে নিরন্তর ঠেলিতে থাকে।’
-ব্যোমকেশ ও বরদা /শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়
এই করোনাকালে যখন মন প্রাণ হাঁপিয়ে উঠছে,মনে হচ্ছে ‘চল যাই চলে যাই দূর বহুদূর,গায়ে মেখে জরি বোনা সোনা রোদ্দুর ‘এর মধ্যে সুখবর উত্তরবঙ্গের পাহাড় খুলছে,তরাইয়ের জঙ্গল খুলছে তাই এই উইকেন্ডে ‘এই শহর থেকে আরো অনেক দূরে’ ঘুরে আসতে পারেন।
বাংলা,ভুটান আর আসামের বর্ডারে এই রিজার্ভের পথচলা শুরু ১৯৮৩ সালে।৭৫৯ স্কোয়ার কিলোমিটার ঘেরা। অনেক নদী নালা ঘেরা এই অপূর্ব নৈসর্গিক ল্যান্ডস্কেপের মধ্যে সিঞ্চুলা রেঞ্জের মধ্যে এখনো এমন কিছু জায়গা আছে দুর্গমতার জন্য সেখানে নাকি আজও মানুষের পায়ের ছাপ পড়েনি।
এই রিসার্ভ এলিফ্যান্ট মাইগ্রেশন ইন্টারন্যাশনাল করিডোর হওয়ার জন্য এখানে পর্যাপ্ত পরিমানে হাতির দর্শন হয়। এখানে ৬৭ রকম রডেন্টস,৩৬ প্রজাতির সরীসৃপ আর ২৩০ প্রজাতির পাখিদের আস্তানা।
NH 31 হাইওয়ের রাস্তায় পড়বে দমণপুর ( বক্সা এর জঙ্গল যেখান থেকে শুরু), এখানে একটু দাঁড়িয়ে ধাবার ধোঁওয়া উঠা চা হাতে নিয়ে একটু মাঝেরদাবি চা বাগান,পাশে বয়ে চলা নোনাই নদী টা ভোরের মিষ্টি আলোয় দেখে নিলে মন্দ হবে না,দেখে পর সোজা রাজাভাতখাওয়া ( বক্সা টাইগার রিজার্ভ এর কোর এরিয়া শুরুর আগের গ্রাম)।
কি করবেন :
বক্সা ফোর্ট : বক্সা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে বক্সা দুর্গ নামে একটি পুরনো দুর্গ আছে। এই দুর্গের আয়তন ২৬০০ বর্গফুট। দুর্গটিতে ব্রিটিশ যুগে একবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। এছাড়া জাতীয় উদ্যানের মধ্যে একটি শিব মন্দিরও আছে। স্থানীয় মানুষজন শিব মন্দিরটিকে খুব পবিত্র মনে করেন।
জঙ্গলে ট্রেকিং: ৫ কিলোমিটার ট্রেক করে পৌঁছে যান বক্সাদুয়ার বাংলো তে।এখানে থাকার ব্যবস্থাও আছে।নাম না জানা পাখি দেখতে ৪৫০০ ফিট ওপরে পৌঁছে যান ৪ কিলোমিটার কাছের রোভার’স পয়েন্টে।সেখান থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে রূপম ভ্যালি।এই যাত্রাপথে আপনার জন্য অপেক্ষা করে আছে রোমাঞ্চ আর সাসপেন্স এবং দেখা পেতে পারেন হলদে কালো ডোরার বা হলদে কালো ছোপ ছোপ আর নানা বিশুদ্ধ জংলী প্রাণীর।
এখানে এসে জঙ্গল সাফারি মাস্ট ।
যারা ঘাপটি মেরে আছেন: বেঙ্গল টাইগার,ক্লাউডেড লেপার্ড,শ্লথ বিয়ার, জায়ান্ট স্কুইরেল,সিভেটস গৌর,চিতল,বুনো শুওর,হাতি, জংলী বুনো এশিয়াটিক গোল্ডেন ক্যাট,৪১ প্রজাতির সরীসৃপ।
পাখি :ম্যাকাও,রেড জাঙ্গল ফাউল,স্প্যারো হক,ঈগল,হর্নবিল,রেড ষ্টার ওয়াগটেল,
কোথায় থাকবেন :
WBFDC র ফরেস্ট রেস্ট হাউস আছে রাজাভাতখাওয়া, নিমাতি, বড়বিশা, রায়ডাক,রায়মাটাং।এছাড়া ফরেস্ট ইন্সপেকশন বাংলো খোঁজ নিতে পারেন।WBDFC ওয়েবসাইটে খোঁজ করুন।হাতিপোতা বক্সা টাইগার রিসার্ভ ফিল্ড ডিরেক্টর,ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর বক্সা টাইগার রিসার্ভ,ইস্ট ডিভিশন,আলিপুরদুয়ার কোর্ট ,ফোন: (03564) 256005
ডুয়ার্সের এর সব জায়গা তেই ‘ NEST ‘ এর নিজস্ব হোম স্টে আছে ,নেস্ট সরকারের ‘ ব্লু হোম স্টে ‘ প্রকল্পের হোম স্টে গুলো কে নিয়ে তৈরি একটা প্রজেক্ট , কম খরচে থাকা খাওয়ার সুবিধা পাওয়া যায়, এদের কে বলে সাফারি স্লট বুক করার সুবিধা ও রয়েছে , তাই সাফারি এর জন্য লাইন দিয়ে অপেক্ষা করার অসুবিধা টাও হয় না সেই রকম । এতে প্ল্যানিং এ রীতিমতো সুবিধা হয় ।নেস্ট হোম বুকিং +916294924252/ +91 7001789498
জঙ্গলে প্লাস্টিক ব্যাগ বা কোনও কিছু ফেলে আসবেন না।
শেয়ার করুন :