১ ) আপনার স্ট্রেস,দুশ্চিন্তা আতঙ্ককে আইডেন্টিফাই করুন
অস্বীকার করে লাভ নেই যে এটা একটা ভয়ঙ্কর সময়। আমরা বিশ্বব্যাপী মহামারীর মধ্যে আছি। আমাদের বন্ধু,কলিগ,আত্মীয় স্বজন,পরিচিতরাও আক্রান্ত হয়েছে।বাড়ির পাশে,কাজের জায়গার আসে পাশেও অনেকে আক্রান্ত।এতে স্ট্রেস,আতঙ্ক,দুশ্চিন্তা অস্বাভাবিক নয়,তাই মনে মনে আইডেন্টিফাই করুন এর মধ্যে কোন বিষয়গুলো সবচেয়ে বিষণ্ণ করছে কিন্তু তাতে আপনি আচ্ছন্ন হবেন না, মনকে শক্ত করে বোঝান এখন এই দুঃসময়ে ভেঙে না পড়ে একে কনফিডেন্টলি হ্যান্ডেল করতে হবে,মোকাবিলা করতে হবে।
২) অনিশ্চিত চাকরি ,স্বাস্থ্য আর অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ
এই সময়ের স্ট্রেসের প্রধান ৩ কারণ হলেও পজিটিভ থাকতে হবে।অফিসে ছাঁটাই আপনার,নিজের আয়ত্বে নেই তাই ও নিয়ে টেনশন করে লাভ নেই ,আপনি কনফিডেন্ট থাকুন নিজের এবিলিটির, এক্সপিরিয়েন্সের প্রতি।নিজেকে,পরিবারকে ম্যাক্সিমাম সুরক্ষায় রাখুন,খরচের ক্ষেত্রে কেয়ারফুল থাকুন,কতটা সম্ভব কমে চালানোর চেস্টা করুন কিন্তু এই নিয়ে অযথা টেনশন স্ট্রেস নেবেন না,প্র্যাকটিকাল থাকুন।লোকে কি মনে করবে ভাবনা এই সময়ে জানলা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিন।
৩) ইনফর্মড থাকুন,কিন্তু সর্বদা করোনা আপডেট নিউজ অবসেশন নয়
আপনার চারিদিকে,দেশে কী ঘটছে সে সম্পর্কে খবর রাখা জরুরী, যাতে আপনি সতর্ক থাকুন কিন্তু সর্বক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়া ,নিউজ আপডেট দেখা এক্ষুনি বন্ধ করুন কারণ সেখানে প্রচুর ফেক নিউজ আর আতংঙ্ক বিক্রির চাঞ্চল্যকর কভারেজ থাকে যার প্রধান কাজ ভয় দেখানো। আপনি কী পড়েন এবং কী দেখেন সেটাই আপনার স্ট্রেস ,দুশ্চিন্তা কম বাড়ার কারণ এটা মনে রাখবেন।
৪) অথেন্টিক,বিশ্বাসযোগ্য সোর্সে ভরসা রাখুন
সি,ডি,সি ( সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল),হু (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন), আই,সি,এম,আর, সরকারি,পুলিশ,কর্পোরেশন বিজ্ঞপ্তির ওপর আস্থা রাখুন,বাকি সব ঘন্টায় ঘন্টায় নিউজ আপডেট দেখা বন্ধ করুন I
৫)সোশ্যাল মিডিয়ায়,হোয়াটসাপে কন্টিনিউয়াস করোনা খবর দেখা বন্ধ করুন I
যা পেলেন তার সোর্স চেক না করে ফরওয়ার্ড করা বন্ধ করুন কারণ ব্রাজিলের মৃত্যুর ছবি বরানগর বলেও ফরওয়ার্ড হচ্ছে। আর সমীক্ষায় প্রকাশ এই করোনা সংক্রান্ত পোস্টে ভীষণ ভাবে স্ট্রেস বাড়ছে।
৬)যা আপনার আয়ত্বের মধ্যে সেই নিয়ে থাকুন
দেশজুড়ে করোনা মৃত্যুহার,সংক্রমণ বৃদ্ধি আপনার কন্ট্রোলে নেই কিন্তু নিজের ,পরিবারের সুরক্ষা আপনার আয়ত্বে ,সেটার দিকে নজর দিন I প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোনো,মাস্ক, ফেস শিল্ড,স্যানিটাইজার নিয়ে বেরোনো,ভুল করেও মাস্ক না খোলা,ভিড় এড়িয়ে থাকা,বাইরে থেকে ফিরে সাবান জলে হাত,পা ধোয়া, যত পরিচিত,আপনজন হোক না কেন ,তিনি এলেও যেন সব সুরক্ষা মেন্টেন হয় সেদিকে কঠোর ভাবে লক্ষ্য রাখা, এই সব আপনার আয়ত্বের মধ্যে, সেইদিকে নজর রাখুন।
৭) ফ্যামিলি,বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে কানেক্টেড থাকুন,পজিটিভ থাকুন
সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন,ভিডিও চ্যাট করুন,অনেকদিন যে আত্মীয় বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই এই সযোগে আবার সম্পর্ক রিফ্রেশ করুন,লেক গার্ডেন্সের ছোটোমাসি,সোনাঝুরির বুলানের সঙ্গে দেখবেন মন ভাল হয়ে উঠছে I
৮ )আপনি সোশ্যাল মিডিয়া কন্ট্রোল করুন -সোশ্যাল মিডিয়া আপনাকে নয়
নিজের অজান্তে দীর্ঘক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়া অবসেশন আমাদের অজান্তে আমাদের কন্ট্রোল করছে।অনেকের ঘুম থেকে ওঠার পড়ে ব্রাশ করার আগে সোশ্যাল মিডিয়া, গভীর রাতে ঘুম না এলে ফোন ঘাঁটা আজই বন্ধ করুন।যে কোনও আসক্তি প্রথমে ছাড়তে কষ্ট হয় কিন্তু অসম্ভব নয়।না না সোশ্যাল মিডিয়া,ফোন ছাড়তে বলা হচ্ছে না, কমাতে বলা হচ্ছে।
৯) কথাবার্তা ,আলাপচারিতায় করোনা আলোচনা প্রাধান্য নয়
অফিসে,বাড়িতে,পরিবারে বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে আলোচনা যেন করোনা ডমিনেটেড না হয়।হলে আপনি নিজে প্রসঙ্গ পাল্টে দিন i দেখবেন মুড চেঞ্জ হয়ে গেছে।
১০)সাধ্যমতো হেল্প,ডোনেট করুন
এতে একসঙ্গে দুটো কাজ হবে i এই বিপর্যয়ের সময় আপনার সাধ্যমতো তা যৎসামান্যই হোক না কেন করলে কারুর উপকার তো হবেই আর দেখবেন দুশ্চিন্তা ছেড়ে আপনার নিজের মন ভাল লাগছে I
১১ ) রিলাক্স থাকা প্র্যাকটিস করুন
প্রতিদিনে এক দুবার সময় করে ডিপব্রেথিং,প্রাণায়াম,ধ্যান,যোগ,ফ্রিহ্যান্ড,গান শোনা,বই পড়া শুরু করে দেখবেন ম্যাজিকের মত ফল পাচ্ছেন, টেনশন পেনশন নিতে চলে যাবে।
১২) রুটিন, নিয়মের মধ্যে থাকুন
একটা নির্দিষ্ট রুটিন আপনাকে স্ট্রেস আর দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখে।একটা ডিসিপ্লিন আপনাকে পজিটিভ রাখে।এই ৬ মাস ধরে চলা মহামারী আতঙ্কর মধ্যে আপনার পজিটিভিটি আপনার আসে পাশেও ছড়াবে আর তাতে আপনার আর পুরো ফ্যামিলির মঙ্গল।
তথ্যসূত্র:মেলিন্ডা স্মিথ-হেল্প গাইড ইন্টারন্যাশনাল,নারায়ণা হেলথ,
শেয়ার করুন :