প্রলেহ,কাবাবমাহী,মৎস পলান্ন,কাটোয়া,বিষ্ণুপুর থেকে রাজশাহী,শ্রীহট্ট,চট্টগ্রাম,এপার ওপার বাংলা চষে ফেলে বরিশালের প্রখ্যাত পাচকঠাকুর বিশ্বেস্বর তর্কালঙ্কার বর্ধমান মহারাজার আগ্রহে সন্ধান করেছিলেন এমন অনেক বাঙালি রান্না। এছাড়া দুই বাংলায় মা ঠাকুমার হাতের কত সুস্বাদু জিহ্বায় লালাক্ষরণ রান্না আজ হারিয়ে গেছে।এর মধ্যে থেকে এই পয়লা বৈশাখে হেঁসেল হাতড়ে কিছু স্বতন্ত্র রান্না।
মৎস ঘন্ট
উপকরণ– রুই মাছের পেটি -৪০০ গ্রাম,ঘি-২ টেবিল চামচ,গোটা লবঙ্গ -৪/৫ টা,মরিচগুঁড়ো ১ চা চামচ,আদার রস-৩ টেবিল চামচ,ধনেবাটা-১ টেবিল চামচ,নুন-স্বাদমতো,কলাপাতা টুকরো-৫ টি।
প্রণালী- প্রথমে মাছ ভাল করে ধুয়ে নিয়ে অল্প করে থেঁতো করে নিন।এর পর থেঁতো করা মাছে আদার রস ও নুন মাখিয়ে দেড় ঘন্টা রাখুন।এরপর মাছের মধ্যে ধনেবাটা মাখিয়ে কলাপাতার মধ্যে ভাল করে জড়িয়ে তন্দুর করে নিন।তন্দুর করা মাছের মধ্যে থেকে কাঁটা বের করে কড়াইয়ে ঘি ও লবঙ্গ দিয়ে নাড়ুন।এর পরে মরিচ আর গরমমশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে একটু রেখে নামিয়ে নিন।
গন্ধরাজ চিংড়ি
উপকরণ:মাঝারি মাপের চিংড়ি মাছ -৫০০ গ্রাম,গন্ধরাজ লেবু-২ টো,লঙ্কাগুঁড়ো-১ চা চামচ,কাজুবাদাম-১০টা,কিশমিশ-১০টা,নারকেলের দুধ -১ কাপ,হলুদগুঁড়ো- আধ চা চামচ,টোম্যাটো পিউরি-২ টেবিল চামচ,সাদা সর্ষেবাটা -৩ টেবিল চামচ,সর্ষের তেল-৪ টেবিল চামচ।
প্রণালী- গন্ধরাজ লেবু ছাড়া সব উপকরণ চিংড়ি মাছের সঙ্গে মাখিয়ে নিন।এবার স্টিমারের বাটিতে মশলা মাখানো মাছ রেখে ১৫ মিনিট ভাপিয়ে নিন ,নামানোর পর গন্ধরাজ লেবুর রস ছড়িয়ে দিন।পরিবেশনের সময় গোল করে গন্ধরাজ লেবু কেটে দিন।
মাংস পুরিকা
উপকরণ– কিমা করা মাংস -২৫০ গ্রাম,ময়দা-৩ কাপ,ঘি-২৫০ গ্রাম,গরমমশলাগুঁড়ো-১ চা চামচ,আদা রসুনকুচি -আড়াই চামচ,পেঁয়াজবাটা -২ টো বড়,ধনেবাটা-১ চা চামচ,মরিচ-আধ চামচ,ধনেপুদিনাপাতা কুচি-২ চামচ,কাঁচা আমের রস -২ চামচ।
প্রণালী- প্রথমে কিমা করা মাংস ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে।তারপর পেঁয়াজবাটা,আদারসুনের কুচি ও নুন দিয়ে ভালো করে মেখে ৩০ মিনিট রেখে ঘি দিয়ে ভাজতে হবে।পরে গরমশলা গুঁড়ো,বাটা ধনে,ধনে পুদিনা পাতা, আমরস দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।এবার ময়দা জল ময়ান দিয়ে মেখে লেচি করে বেলে তার মধ্যে পুর দিয়ে অন্য একটা বেলা লেচি দিয়ে চারপাশ ভালোভাবে বন্ধ করে ভেজে ফেলে টিস্যু পেপারের ওপর রেখে দিন।তেল সোক করে নিলে তুলে পরিবেশন করুন।
কাসুন্দি ভেটকি
উপকরণ– ভেটকি -(৭৫০ গ্রাম -১ কিলো) আদাবাটা-৪ চামচ,পেঁয়াজ-৫/৬ টি,সর্ষে-১ চামচ,শুকনোলঙ্কা-৩/৪ টি,টক দই-১০০ গ্রাম কাগজি লেবু-১ টা,গোলমরিচগুঁড়ো -আধ চামচ রসুন-৩/৪ কোয়া,কাসুন্দি-৩০ গ্রাম,ঘি-১ টেবিল চামচ ,কলাপাতা ৪/৫ টুকরো।
প্রণালী- আদা,পেঁয়াজ,রসুন,সর্ষে ও শুকনোলঙ্কা মিহি করে বেটে একটা পাত্রে রাখুন।এতে গোলমরিচ গুঁড়ো,নুন,লেবুর রস,কাসুন্দি,দই,ঘি মিশিয়ে একটা পেস্ট করে সেটা মাছের গায়ে ভালো করে মাখিয়ে দেড় ঘন্টা রেখে দিন।এর পর এই মাছ কলাপাতায় ভালো করে জড়িয়ে সুতো দিয়ে বেঁধে নিন। এবার ফ্রাই প্যানে সিমে বসান/১০ মিনিট পর লক্ষ্য রাখুন কলাপাতার ধার পুড়তে শুরু করছে কিনা। তারপর উল্টে দিন।আবার ১০ মিনিট রেখে কলাপাতায় কাঁচা রং এলে বুঝতে হবে মাছ সেদ্ধ হয়ে গেছে। নামিয়ে পরিবেশন করুন।
সুত্র- আমিষ ও নিরামিষ-প্রজ্ঞাসুন্দরীদেবী,খানাতল্লাশি-পিনাকী ভট্টাচার্য,রান্নার বই-লীলা মজুমদার,কমলা চট্টোপাধ্যায়,মাছ ও বাঙ্গালি-রাধাপ্রসাদ গুপ্ত।
শেয়ার করুন :