এখন নিউ নর্মাল পরিস্থিতিতে সমস্ত কোভিড প্রিকশন নিয়েও হার্টের সুরক্ষা আর যত্নের প্রতি উদাসীন থাকা মোটেই ঠিক নয়।সাম্প্রতিক কালে সেলেব থেকে পরিচিত অনেকেই সাডেন ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে বিনামেঘে বজ্রপাতে অকালে চলে গেছেন।আবার অনেক কোভিড আক্রান্ত রুগীর হার্ট কন্ডিশন ভাল না থাকায় সারভাইভ করতে পারেন নি।
অভিজ্ঞ কার্ডিওলজিস্টদের এক্সপার্ট পরামর্শ-
১)ডিপ্রেশন কে দূরে রাখুন-এছাড়া কাজের ক্লান্তিকেও আপনাকে যেন প্রভাবিত না করতে পারে।আপনার পছন্দকে গুরুত্ব দিন।সুইৎজারল্যান্ডের একটি গবেষণায় প্রমাণিত ডিপ্রেশন দূরে রাখার তৎপরতা হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক ফ্যাক্টর ৫৭% কমিয়ে দেয়।
২)আখরোট-প্রতিদিন আখরোট ডায়েটে রাখলে শরীরের ব্লাড সার্কুলেশন ঠিক থাকে।ওমেগা থ্রি থাকার ফলে হার্টের গতিকে স্বাভাবিক রাখে।
৩)শিম,বরবটি -ডায়েটে নিয়মিত শিম,বরবটি ব্লাড প্রেসার কমাতে খুব সাহায্য করে।
৪)মুঠোর ব্যায়াম-প্রতিদিন মুঠোর ব্যায়াম অভ্যেস করলে উপকার পাবেন। ‘হাইপারটেনশন জার্নাল’ অনুযায়ী টানা ৪ সপ্তাহের মুঠো সঞ্চালন প্রসারণের ব্যায়াম ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
৫)ডিম খান-বেশি ডিম খেলেই কোলেস্টরল বেড়ে যাবে এই ধারণা ঠিক নয়।ব্রাজিলীয় গবেষকরা জানিয়েছেন ডিমের কুসুমে থাকা ভিটামিন -ই,বি-১২ এবং ফোলেট করোনারি আর্টারিকে পরিষ্কার রাখে,কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত ডিম খাওয়া যাবে না।
৬)নিয়মিত হাঁটা -হার্ট ঠিক রাখতে নিয়মিত তিন কিলোমিটার হাঁটুন।
৭)প্রাণায়াম-নিয়মিত প্রাণায়াম করলে হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।প্রথমে ৩০ সেকন্ডে ৬টি পূর্ণাঙ্গ শ্বাস প্রশ্বাস নিন।এরপরে সময়ের পরিমান কমাতে থাকুন।
৮)ফ্লু কে বিদায়-যে সব ওষুধ ফ্লু জাতীয় ভাইরাস দূর করতে ব্যবহার করা হয় তা হার্টের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সারাতেও কাজে লাগে।
৯)ঘুমোনোর সময়-একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে ঘুমোতে হবে।যারা অনিদ্রায় ভোগেন অন্যান্যদের তুলনায় তাদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা ৪৫% বেশি।অনিদ্রা দূর করতে প্রতিদিন বেশি শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
১০) বেশি ঘুম-বেশি ঘুমও হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর।দিনে ৮/৯ ঘন্টার বেশি ঘুমোলে শরীরে এক্সেস ফ্যাট জমে স্থুলতার প্রবণতা বেড়ে যায়।
১১)ডায়েটে ফ্যাট পরিহার-রেগুলার ডায়েটে চর্বিজাতীয় খাবার কমাতেই হবে।খাবারে থাকা চর্বি হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর।
১২)পটাশিয়াম যুক্ত খাবার- প্রতিদিনের ডায়েটে পটাশিয়াম যুক্ত খাবার রাখতে হবে।যেমন-গম,জোয়ার,সয়াবিন,রাজমা,সবুজ শাক,বাঁধাকপি,উচ্ছে, কলা, পেয়ারা, ধনেপাতা,পেস্তা,বাদাম।
১৩)সানশাইন-প্রত্যেকদিন অন্তত ২০ মিনিট সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে শরীরে নাইট্রিক অ্যাসিডের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
১৪)সাইলেন্স– নীরবতা হার্টের পক্ষে ভাল।সাধারণ থেকে হাই ডেসিবেলে প্রতি ১০ ডেসিবেল বাড়লে হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক ১২% করে বেড়ে যায়।
১৫)পোষ্য- যাদের বাড়িতে পোষ্য আছে তাদের হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে।
১৬)একসঙ্গে ব্রেকফাস্ট-হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় প্রকাশ যারা একসঙ্গে রোজ ব্রেকফাস্ট মিস করেন তাদের হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক ২৭% বেড়ে যায়।
১৭)এনার্জি ড্রিঙ্কস নয়-শক্তিবর্ধক এই সব পানীয় হার্টের শত্রু।উল্টে ব্লাড প্রেসার বাড়িয়ে হার্টের ক্ষতি করে।
১৮)দুধ -গরুর দুধে থাকা লো ফ্যাট হার্টের ক্রিয়াবিরোধী কম ঘনত্বসম্পন্ন লিপোপ্রোটিনের হার কমাতে সাহায্য করে।এর সঙ্গে দুধে থাকা ক্যালসিয়াম চর্বির পুরু স্তর কাটতেও সাহায্য করে।
১৯)গান ভালোবেসে গান-হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে গলা ছেড়ে গান গাইতে,গান শুনতে আর হাসিখুশি থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা।
২০)দারচিনি-খাবারে দারচিনির ব্যবহার রক্তে শর্করার পরিমান কমিয়ে হৃৎপিণ্ড সতেজ করে তোলে।
২১)শাকাহারী-ডায়েটিশিয়ানরা জানাচ্ছেন যাদের রোজের ডায়েটে শাকসব্জি থাকে তাদের হার্ট অন্যদের তুলনায় ১২% বেশি সতেজ থাকে।
২২)সাইক্লিং-প্রতিদিন ১০/১৫ মিনিট সাইকেলে ঘুরলে হার্টের সঞ্চালন খুব ভালো থাকে।
২৩)রঙিন সবজি-রেগুলার ডায়েটে রঙিন কমলা আর সবুজ সব্জির,প্রতি আগ্রহ বাড়ালে ব্লাডপ্রেসারের ফ্লাকচুয়েশনকে নিয়ন্ত্রিত রাখবে।
২৪)স্যালাড-বেশি করে স্যালাড খেলে রসনা তৃপ্তির সঙ্গে হার্টও খুশি থাকবে।
২৫)কম তেল মশলা-কম তেল মশলা আর ভাজাভুজি যত অ্যাভয়েড করা যায় ততই হার্টের পক্ষে মঙ্গল।
শেয়ার করুন :