পুরাণ ও আয়ুর্বেদে,গাছের মূল,শেকড়,পাতা,জড়িবুটির প্রয়োগের ইতিহাস সুপ্রাচীন।আজকালের অত্যাধুনিক বহু ওষুধের ইনগ্রেডিয়েন্টসও এই ভেষজ আর আয়ুর্বেদ কারণ বিজ্ঞানের আস্থা আয়ুর্বেদ আর ভেষজে।বহু বাড়িতে আজ সাধারণ জ্বর আর অসুখে এখনও পরিবারের আর প্রচলিত মা ঠাকুমার টোটকার ব্যবহার আছে।এই অতিমারীতে নিয়মিত বাসক,তুলসী,আদা,গোলমরিচ,লবঙ্গ মিশ্রিত ‘কড়া’র উপকারিতা অগ্রাহ্য করছেন না কেউই।এই অতিমারিতে কয়েকগুচ্ছ ঘরোয়া চিকিৎসার হদিশ রইল –
ব্রঙ্কাইটিস ও সিওপিডি -নিয়মিত কাঁচা রসুন খেলে এই সমস্যা থেকে উপশম পেতে পারেন।এছাড়াও যষ্টিমধু টুকরো করে মাঝে মাঝে মুখশুদ্ধির মত আর রসুনের কোয়া নিয়মিত খেলে বার্ধক্যকেও ঠেকিয়ে রাখা যায়।
সাধারণ জ্বর কাশি,অ্যাজমা– অশ্বগন্ধা পাতার মূল বীজ,বাসক পাতা সাধারণ জ্বর জারি সর্দি কাশি নিরাময়ে কাজে লাগে।কিন্তু এখন দ্রুত এর সঙ্গে কোভিড টেস্ট করিয়ে নেওয়া আবশ্যক।
কোষ্ঠকাঠিন্য-আমলকি,বহেড়া,হরিতকি,পিপুল,আদাশূট,বিট নুন ৫০গ্রাম করে নিয়ে রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে রাতে শোয়ার আগে ২ চামচ গরম জলে মিশিয়ে খেলে ফল পাবেন।
হাই ব্লাডপ্রেসার-উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সজনেপাতা বেটে বা সেদ্ধ করে খান।এছাড়া পার্সলে পাতা,সেলেরি পাতা,রসুন,দারচিনি নিয়মিত খাওয়া উপকারী।
আলসার-থানকুনি পাতা, কালোমেঘের পাতা,হেলেঞ্চার পাতা, নিমপাতা, দূর্বা ও আম পাতার প্রত্যেকটির ২ চামচ করে রস করে একটি কাপে রাখুন।লোহা গরম করে তাতে ডুবিয়ে ওই রস সকালে খালি পেটে ২ চামচ করে খান।
লিভারের সমস্যা-খালি পেটে রোজ সকালে কালমেঘপাতার রস খেতে হবে/এছাড়া কাঁচা হলুদ,রসুন আর আদা কুচি খেলে উপকার পাবেন।
অজীর্ণ (হজমের সমস্যা)-হরিতকি,আমলকি, বহেড়া, ৫০ গ্রাম জোয়ান, পিপলু, আদা শুঠ ১০ গ্রাম, ৫ গ্রাম বিট নুন রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে ১ টি শিশিতে রাখুন।রোজ দু বেলা খাবার পর এই মিশ্রণের ১ চামচ করে খেয়ে ১ গ্লাস জল খান। ১০ দিনে হজম শক্তি বাড়বে।
কোলেস্টরল-তুলসীপাতা ও মধু কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়।এছাড়া তিসি (ফ্ল্যাকসিড), ধনে ভেজানো জল,আমলকির রস উপকারী।
ডিপ্রেশন-কচি নিমপাতা ভাজা ভাতের প্রথম পাতে,অশ্বগন্ধা পাতার গুঁড়োর সঙ্গে ঘি,মধু দিয়ে খাওয়া উপকারী।
গ্যাস্ট্রাইটিস-৫ গ্রাম আমলকির সঙ্গে ধনে মৌরি ৪কাপ জলে ফুটিয়ে ১ কাপ করে ঢাকা দিয়ে রেখে পরের দিন সকালে ছেঁকে খালি পেটে খেতে হবে।
অরুচি- ২৫ গ্রাম আমলকীর সঙ্গে ২৫ গ্রাম কিসমিস মিশিয়ে বেটে আচারের মত ৩ দিন খেলে অরুচিতে রুচি আনে।নিয়মিত আমরুল শাকের টক খেলেও অরুচি দূর হয়।
অনিদ্রা– শুষনি শাকের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।১ চামচ ব্রাহ্মী আর অশ্বগন্ধা পাউডার ২ গ্লাস জলে ফুটিয়ে ১ গ্লাস করে দিনে একবার খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
ডায়রিয়া-ভাট ফুল বা বনজুঁই পাতার রসের সঙ্গে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেলে উপশম হবে।
কিডনির সমস্যায়-রক্ত চন্দন কিডনি রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ।পাথরকুচি পাতার নির্যাস কিডনি পাথর ধ্বংস করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
অ্যালার্জি-১ কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো নিম পাতা পিষে গুঁড়ো করে একটি কৌটায় ভরে রাখুন। এক চা চামচের ৩ ভাগের ১ ভাগ নিমপাতার গুঁড়া এবং ১ চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ১ গ্লাস জলে আধঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে আধ ঘণ্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোওয়ার আগে খেয়ে ফেলুন। ২১ দিন একটানা খেতে হবে।
শেয়ার করুন :