ডঃ অমর নাথ ঘোষ, সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওথোরাসিক,ভাস্কুলার সার্জন- অ্যাপলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস।
২৯ সেপ্টেম্বর সারা বিশ্বে পালিত হয় ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে।এই দিনে যেমন পৃথিবী তথা ভারতে বিপুল সংখ্যায় হার্টের অসুখে আক্রান্ত ও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে চলেছেন তাদের সুচিকিৎসা ও সদুপদেশ দেওয়ার জন্য আজ আমাদের আরও দৃঢ় সংকল্প হয়ে এই মহামারীর সঙ্গে যুদ্ধ করার অঙ্গীকারের দিন। সাম্প্রতিক রিসার্চে প্রমাণিত শতকরা ১০০ জনের মধ্যে ৩২ জনকে আমরা হার্টের অসুখের জন্য হারাই ।সেইজন্য আজকের দিনে প্রত্যেক মানুষকে এই অসুখ সম্পর্কে শিক্ষিত ও সচেতন হয়ে এর প্রাথমিক সিম্পটম সম্বন্ধে সতর্ক ও সাবধান হতেই হবে।এই যেমন বুকে ব্যাথা হলে সেটা অ্যাসিডিটি বলে উপেক্ষা,শ্বাস প্রশ্বাসের কষ্ট,একটুতেই ক্লান্তি,শরীর ফুলে যাওয়া (ওডেমা),বুক ধড়পড় করা,হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া (সিনকোপ) এমন প্রাথমিক লক্ষণকে একদম তাচ্ছিল্য করে এড়িয়ে গেলে চলবে না। স্পেশালিস্ট ডক্টর কনসাল্ট করা একদম এড়িয়ে যাবেন না প্লিজ।নতুন অত্যাধুনিক টেকনোলজি যেমন কার্ডিয়াক সিটি এবং কার্ডিয়াক এম আর আই এর কল্যাণে অত্যন্ত হাই রিজলিউশন ইমেজিংয়ের মাধ্যমে জটিল এবং সূক্ষ্য হার্টের সমস্যার সনাক্তকরণ সম্ভব যা দৈনন্দিন সাধারণ পরীক্ষায় ধরা পড়ে না।এরই পাশাপাশি মডার্ন মেডিসিন,কার্ডিওলজিস্ট দ্বারা নতুন ইন্টারভেনশন টেকনিক আর কার্ডিয়াক সার্জেনদের সঠিক প্রসিজিওরের মাধ্যমে হার্টের অসুখ ম্যানেজমেন্টের পৃথিবীকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে।প্রাণঘাতী রিদম ডিসঅর্ডারে সংকটাপন্ন রোগী AICD ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে।টার্মিনাল হার্ট ফেলিওর রোগী CRRT/মিট্র্যাক্লিপ/ভেন্ট্রিকুলার অ্যাসিস্ট ডিভাইস আর হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট অথবা আর্টিফিসিয়াল হার্টের মাধ্যমে বেঁচে উঠেছে এমনটাও হচ্ছে।
কিন্তু আসল কথা হল আপনার নিজেকে মনে রাখতে হবে, হার্টের সমস্যার ওপর আপনার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে।রাতারাতি না হলেও নিজের প্রতি যত্ন নিয়ে স্ট্রেস আর টেনশন কমিয়ে ফেলার অভ্যাস তৈরী করুন।জীবনে আনন্দ, শান্ত হয়ে পজিটিভ থাকার চেষ্টা করুন।ব্যায়াম আর এক্সারসাইজের অভ্যাস করুন,সম্ভব হলে গ্রূপ এক্সারসাইজ যেমন যোগব্যায়াম,জগিং,ফিটনেস ডান্স গ্রূপস আপনাকে উদ্দীপ্ত আর অনুপ্রাণিত করবে।সহজে হজম হয় এমন হাল্কা ডায়েট অভ্যাস করুন যাতে কম ফ্যাট,কম জাঙ্ক ফুড,কম নুন-চিনি আছে।ধূমপানের অভ্যাস থাকলে একদম ছেড়ে দিন। অ্যালকহল অভ্যাস কমিয়ে রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস করুন।এই সব আপনার হার্টকে দারুণ সতেজ আর ভালো রাখবে।
শেয়ার করুন :