পূর্ব ভারতের প্রথম কম্প্রিহেন্সিভ ফ্যাটি লিভার ক্লিনিক -

পূর্ব ভারতের প্রথম কম্প্রিহেন্সিভ ফ্যাটি লিভার ক্লিনিক

আন্তর্জাতিক JCI অ্যাক্রেডিটেড অ্যাপলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালসের উদ্যোগ।

লিভার সিরোসিস অসুখের কথা ব্যাপক ভাবে সকলে জানতে পারে যখন শ্রী অমিতাভ বচ্চন এই অসুখে আক্রান্ত হন। এই লিভার সিরোসিসের শুরু কিন্তু ফ্যাটি লিভার থেকে।প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী শুধু  অ্যালকোহলিকদেরই নয় তাদেরও ফ্যাটি লিভার হতে পারে বিশেষত যদি ডায়াবেটিস,ওবেসিটি ও হাই ব্লাড কোলেস্টরল থাকে।

এখন যে রোগগুলির প্রাদুর্ভাব পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে অন্যতম নন -অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার যাতে পৃথিবীর ৩০% মানুষ আক্রান্ত। ন্যাশনাল হেলথ পোর্টাল ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী নন -অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD ) পৃথিবীর ক্রনিক লিভার অসুখের অন্যতম প্রধান কারণ। পৃথিবীর জনসংখ্যার ২৫% NAFLD  আক্রান্ত।আফ্রিকার ১৩.৫% থেকে মিডল ইস্টের ৩১.৮% এই রোগের শিকার।ভারতে ৩০% মানুষ NAFLD  আক্রান্ত এবং যাদের ওবেসিটি আর ডায়াবেটিস রিস্ক আছে তাদের ৫০% মানুষের কাছে এই রোগ পৌঁছে গেছে।

অধিকাংশ সময়ে ফ্যাটি লিভার অসুখের সিম্পটম না থাকায় ধরা পড়ে না কারণ আক্রান্তদের কোনও ব্যাথা বা অস্বস্তি হয় না। এই মারাত্মক অসুখ সম্পর্কে সচেতনতা ও সামগ্রিক চিকিৎসার জন্য অ্যাপলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস পূর্ব ভারতে প্রথম ‘কম্প্রিহেন্সিভ ফ্যাটি লিভার ক্লিনিক লঞ্চ করল। এই ক্লিনিক অ্যাসিম্পটোম্যাটিক  ফ্যাটি লিভার নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য সর্বাধুনিক পরীক্ষানিরীক্ষা ভিত্তিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করবে।

যেহেতু এই অসুখ নীরবে কোনো ব্যাথা বা ডিসকমফর্ট ছাড়াই বাড়তে পারে যাতে সতর্কতার অবকাশ কম তাই সময়ে যথাযথ পরীক্ষা -নিরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। সেইজন্য লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT ) ও আল্ট্রাসাউন্ডের (USG ) মতন স্বতঃপ্রণোদিত পরীক্ষা জরুরি। পূর্ব ভারতের একমাত্র আন্তর্জাতিক JCI অ্যাক্রেডিটেড অ্যাপলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস প্রথম  ফাইব্রো স্ক্যান এবং MRI PDFF এবং MR ইলাস্টোগ্রাফির মতন MRI ভিত্তিক পরীক্ষা সমেত ফ্যাটি লিভারের সবচেয়ে উন্নত প্রসিজিওরের পরীক্ষা গুলি শুরু হল।এই টেস্টের মাধ্যমে অসুখকে প্রাথমিক স্তরে ধরে ফেলে আক্রান্ত  রোগীদের তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে এবং রোগ গুরুতর হয়ে ওঠা থেকে প্রতিরোধ করতে পারে। 

যখন লিভারে ফ্যাট ৫% এর বেশি হয়ে যায় তখন লিভারকে ফ্যাটি লিভার বলে। ডায়াবেটিস, কোলেস্টরল,হাই ব্লাড প্রেশার আর ওবেসিটিতে ভোগা মানুষের ফ্যাটি লিভার হওয়ার সম্ভাবনা ৫০-৬০%।সাধারণত ফ্যাটি লিভারের তিনটি স্তর আছে,ফ্যাটি লিভার- স্টেয়াটোসিস (NAFL ),লিভার স্টেয়াটোহেপাটাইটিস (NASH ) এবং লিভার সিরোসিস। NAFL রোগীদের ২০-২৫% NASH স্তরে পৌঁছে যায় আর এর মধ্যে ১০-১৫% লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন যা সারা পৃথিবীতে লিভার ট্রান্সপ্ল্যাটের সবচেয়ে বেশি কারণ।

Bril F et al.Diabetes Care 2017, Finkelstein AJPM ২০১৭ রিসার্চের সূত্র অনুযায়ী আশঙ্কার কারণ ২০৩৫  সালের মধ্যে  সারা পৃথিবীতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা ৫৫% এবং ওবেসিটিতে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা ৩৩% বাড়তে পারে।সেক্ষেত্রে লিভারের অসুখের বৃদ্ধির হার  ২০১৫-৩০ এর মধ্যে ৬৩% বাড়তে পারে।(source: Younossietal.J Hep 2018, Estes et al. Hepatol 2019)

ডিএমই অ্যান্ড ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড ইনস্টিটিউট অফ গ্যাস্ট্রোসায়েন্সেস অ্যান্ড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট,অ্যাপলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস ডঃ মহেশ কে গোয়েঙ্কা বলেন,সাম্প্রতিক রিসার্চ ফাইন্ডিংসে দেখা গেছে প্রায় ৩৫% ফ্যাটি লিভারের রোগী নন অ্যালকোহলিক এবং তাদের চিকিৎসা করা খুব দুরূহ কারণ স্রেফ সচেতনতা আর ঠিক সময়ের অভাবে তাদের রোগনির্ণয় অনেক দেরিতে হয়।গত দু দশকে ভারতে আর একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে যার নাম লিন ফ্যাটি লিভার।এটা সে অর্থে ওবেসিটির কোনও চিহ্ন না থাকা মানুষের মধ্যে।এই রোগীরাও অসুখের প্রাথমিক স্তরে ডিটেক্টেড হন না প্রো অ্যাক্টিভ টেস্টের অভাবে।আর্লি ডিটেকশন আর লাইফস্টাইল মডিফিকেশনের মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার সরিয়ে তোলা যায় কিন্তু সিরোসিস দেরিতে ধরা পড়লে তার চিকিৎসা ও আরোগ্য কঠিন।

উপস্থিত মান্য ডি এম এস (ডিরেক্টর মেডিকেল সার্ভিসেস ) ডঃ সুরিন্দর ভাটিয়া বলেন,যদিও ফ্যাটি লিভার তরুণদের মধ্যেই বেশি লক্ষ্য করা যায়,ডায়াবেটিস ও ওবেসিটিতে ভোগা শিশুদের মধ্যেও এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।আমাদের এই কম্প্রিহেন্সিভ ফ্যাটি লিভার ক্লিনিকে অ্যাসিম্পটোম্যাটিক ফ্যাটি লিভার টেস্ট করার সমস্ত ধরণের অত্যাধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতির সুযোগ আছে যাতে এই অসুখকে গোড়াতেই নির্মূল করা যায়।অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে ওষুধই একমাত্র চিকিৎসা নয়।নিয়মিত পরীক্ষার ফলাফল দেখে তার মূল্যায়ন করে চিকিৎসা করা হয়।ডক্টর কনসালটেশন, লাইফস্টাইল মডিফিকেশন,কাউন্সেলিং এবং মেডিকেল বিভাগের বিভিন্ন বিভাগ এবং ক্ষেত্র যেমন প্রাইমারি কেয়ার ,ইন্টার্নিস্ট, নিউট্রিশনিস্ট ,এক্সারসাইজ কাউন্সেলরস, কার্ডিওলজিস্ট, বেরিয়াট্রিক সার্জনের মতন ব্যাপক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও পদ্ধতিতে এই ফ্যাটি লিভার কম্প্রিহেন্সিভ কেয়ারের মাধ্যমে শুশ্রূষা করা হয়।’    

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *