বঙ্গভঙ্গ হওয়ার আগে পূর্ব বাংলার মানুষকে এই গোয়ালন্দ ঘাট থেকে কলকাতার ট্রেন ধরতে হতো। আর গোয়ালন্দ পৌঁছাতে পাড়ি দিতে হতো পদ্মা। সেই গোয়ালন্দ ঘাটের রেস্টুরেন্টে, কিংবা স্টিমারের পাচকদের হাতের রান্না খাওয়ার সুযোগ যাদের হয়েছিল, তাদের মুখে যেন এখনো লেগে আছে সেই রান্নার স্বাদ।
সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখায় এই গোয়ালন্দ চিকেন কারির বর্ণনা আছেঃ
“ত্রিশ বৎসর পরিচয়ের আমার আর সবই বদলে গিয়েছে,বদলাইনি শুধু ডিসপ্যাচ স্টীমারের দল। এ-জাহাজের ও-জাহাজের ডেকে-কেবিনে কিছু কিছু ফেরফার সব সময়ই ছিল, এখনো আছে, কিন্তু সব কটা জাহাজের গন্ধটি হুবহু একই। কীরকম ভেজা-ভেজা, সোঁদা-সোঁদা যে গন্ধটা আর সবকিছু ছাপিয়ে ওঠে, সেটা মুর্গী-কারি রান্নার। আমার প্রায়ই মনে হয়েছে, সমস্ত জাহাজটাই যেন একটা আস্ত মুর্গী, তার পেটের ভেতরে থেকে যেন তারই কারি রান্না আরম্ভ হয়েছে। এ-গন্ধ তাই চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, গোয়ালন্দ, যে-কোন স্টেশনে পৌঁছানো মাত্রই পাওয়া যায় । পুরনো দিনের রূপ রস গন্ধ স্পর্শ সবই রয়েছে, শুধু লক্ষ্য করলুম ভিড় আগের চেয়ে কম।”
রেসিপি :
উপকরন :
১ কেজি মুরগি,১০০ গ্রাম কুচো চিংড়ি,১ কাপ পেঁয়াজ, স্লাইস,৩ টেবিল চামচ আদা কুচি,৩ টেবিল চামচ রসুন কুচি,৩-৪ টে শুকনো লঙ্কা,২ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ১/২ কাপ সর্ষের তেল,নুন: স্বাদ অনুযায়ী,৬টি সেদ্ধ ডিম ।
প্রণালী:
প্রথমে পেঁয়াজ,আদা-রসুন,কাঁচা লঙ্কা কুচি করে রাখুন। এর পরে মুরগিতে পেঁয়াজ,আদা-রসুন,লঙ্কা,হলুদ ,স্বাদ অনুযায়ী নুন,পরিমাণমতো সর্ষের তেল দিয়ে ভাল করে মেখে ২ ঘন্টা রেখে দিন। এর পর কুচো চিংড়ির মাথা আর খোলা বাদ দিয়ে খুব হালকা ভেজে মাখা মুরগিতে মিশিয়ে দিন।
এরপর কড়াই/ফ্রাই প্যানে বাকি সর্ষের তেল গরম হলে মুরগি ছেড়ে ৪/৫ মিনিট কষে অল্প আঁচে গ্যাস সিমে দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন।আধঘন্টা বাদে ঢাকা খুলে ১ কাপ জল ডিম সেদ্ধ দিয়ে আবার ঢাকা দিয়ে গ্যাস সিম করে ১৫ মিনিট রান্না করুন।এর পর গ্যাস অফ করে দিন কিন্তু ঢাকনা তখনি খুলবেন না ,১০ মিনিট বাদে খুলুন আর গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন, এবার পুজো জমে যাবে।
শেয়ার করুন :