দশ দ্রুমের পুজো -

ছবি - নির্মলেন্দু মন্ডল

দশ দ্রুমের পুজো

বাংলায় পেরথম দশ ফুটের সোনার দুগগা। ভালো পাবলিসিটি পাওয়া যাবে মিডিয়ার কাচ থেকে।

রূপক সাহা

পুজো কমিটির মিটিন বসেছে আমাদের চমকাইতলার শক্তি সংঘে। ট্রেজারার পুরকায়স্থবাবুকে পরথমেই আমি বলে দিলুম, ‘বাজেট নিয়ে একদম চিন্তা করবেন না স্যার। এ বার এমন পুজো করতে চাই, যাতে এনটায়ার ক্যালকাটা জমে ক্ষীর হয়ে যায়।’

গেল বচর আড়াই লাখ ট্যাকা তুলতে পুরকায়স্থবাবুর জান কয়লা হয়ে গেসল। খুব বেশি ভদ্দরলোকোমি করলে, বড়  পুজো করা যায় না। এই কথাটাই পুরকায়স্থবাবুদের মতো লোকেদের মাতায় ঢোকে না। আমরা… পাড়ার ক্যাওড়া যুবকরা এগিয়ে এসে, হাল না ধরলে শক্তি সংঘের পুজো লাটে উটত। ভদ্দরলোকদের ছেঁটে দিয়ে তাই এ বার আমিই পুজো কমিটির পেসিডেন্ট। লোকে আমাকে আড়ালে তোলাবাজ, বাতোলবাজ বলে। তা বলুক গে, আসল জায়গায় আমরা দুষ্টু ছেলে হয়ে  থাকলেই হলো।

আমাদের পাড়াটার নাম আগে চমকাইতলা ছিল না। আমাদের জন্য লোকের মুকে মুকে নামটা ছড়িয়ে গ্যাচে । চমকে ধমকে আমরা কয়েকজন পাড়ার কন্ট্রোল নিইচি। মিটিনে আসার আগে ঠিক করে নিইচি, চমকাইতলায় আমাদের এগটা পেস্টিজ আচে। ঝাক্কাস  পুজো না করলে লোকে খিল্লি করবে। ট্যাকা অবিশ্যি জোগাড়  হয়ে গ্যাচে। বস্তায় করে রাকা আচে আমার বাড়ির ডিভানে।

পুরকায়স্থবাবু বাড়াবাড়ি রকমের ভালোমানুষ। স্টেট গভমেন্টে চাকরি করতেন। কী কারণে যেন একবার হুড়কো দিইচিলাম। তাপ্পর থেকে সোম্মান দিয়ে কতা বলেন। পুরকায়স্থবাবু জিগ্যেস করলেন, ‘ আপনার কথা ঠিক বুঝতে পারলাম না ভাই। কত টাকার  বাজেট, আইডিয়া দেবেন  ?’

বললুম , ‘ধরে নিন দশ দ্রুম। না কি আরও বাড়াব ?’

ভ্রুঁ কুঁচকে পুরোকায়স্থবাবু জিগ্যেস করলেন, ‘ দশ দ্রুম মানে !’

ভদ্দরনোকদের নিয়ে এই এক মুশকিল। আমাদের ল্যাঙ্গুয়েজ বুইতে পারেন না। মনে মনে মাফ করে দিয়ে বললুম, ‘এক দ্রুম  মানে, আবনাদের এক কোটি ।’

শুনে পেলাস্টিকের চেয়ার থেকে উল্টে পড়ে যাচ্চিলেন পুরকায়স্থবাবু। টেবিলডা দু’হাতে আঁকড়ে ধরে বললেন, ‘ অত টাকা কোত্থেকে জোগাড় করবেন ভাই ?’

‘ সে নিয়ে আবনাকে ভাবতে হবে না স্যার। আবনার আম খাওয়ার কতা, কোত্থেকে কিনে আনচি, তা জানার দরকার কি ? আবনারা সবাই মিলে জম্পেশ এগডা পেলান করুন। গড়িয়াহাটের ব্রতদা আর নাকতলার সার্থকদার পুজো তো ভোগে গ্যাচে। বাকি রইচে নিউ আলিপুরের স্বরূপদা, চেতলার রবিদা আর শ্রীভূমির  অজিতদার পুজো। ওদেরগে বিট করতে হবে।’

মিটিনে হাজির স্যার ও ম্যাডাম মিলিয়ে পাড়ার বিশ-তিরিশজন গণ্যমান্য ভোটার। বেশিরভাগই ফালটুস কোয়েশ্চেন করার লোক। দশ ট্যাকা চাঁদা বাড়ালে যাঁরা খচে যান। অতচ পুজোর দিনে পাত পাড়ার সময়, পুরো ফেমিলি নিয়ে এসে ফাস ব্যাচে বসে যান। তেনারা কী কোয়েশ্চেন করতে পারেন, আমার জানা আচে। তাই আগেভাগে বলে দিলুম, ‘ ট্যাকা কিন্তু আবনাদের পকেট থেকে দিতে হবে না। চিট ফান্ড থেকেও আসচে না। নিশ্চিন্দে থাকুন, দিদির ট্যাকারও দরকার নেই।  এক্কেবারে অথেনটিক, গান্ধীজির ছবি দেওয়া ট্যাকা। আমার ওপর বিশ্বাস রাকতে পারেন।মনে করুন, মায়ের পুজো, ট্যাকা মা-ই জোগাড় করে দিচ্ছেন।’

আরও পড়ুন:

কতায় কাজ হল। ভাব ভক্তি এনে কতা বললে বাঙালি বিশ্বাস করে। চোক ঘুরিয়ে বুঝলুম, সব্বার বডি ল্যাঙ্গুয়েজে এক পাইট গিলে ফেলার তৃপ্তি।কমিটির সেকরেটারি অপু ম্যাডাম কলেজে পড়াতেন। একন রিটায়ার্ড। খুজলি টাইপের নারীবাদী। একমাত্তর উনিই বললেন, ‘ এ বছর তো ভাই, পরিস্থিতিটা অন্য রকম। লোকে বলছে, উৎসব নয়, শুধু পুজো। এ বার দশ কোটি টাকা বাজেটের  পুজো করাটা কি ঠিক হবে ?’ 

শুনে মটকা গরম হতে শুরু করল। শালা, বাঙালির এই এক স্বভাব। বড় কিছু ভাবার কতা ভুলে গ্যাচে। শুধু ব্যাগড়া দেওয়ার মতলব। অপু ম্যাডামের বাড়িতে হাফ ডজন ভোটার। চটালে চলবে না। মুখে মিছরি মিশিয়ে তাই বললুম, ‘ অতসব ভাববেন না ম্যাডাম। হাতে যকন ট্যাকা আচে, তকন খরচে কার্পণ্য করে কী হবে?  আসুন না, সব্বাই মিলে অন্য রকম কিচু ভাবি। পোতিমা দিয়েই না হয় শুরু করুন। কুড়ি-পচিশ হাজার ট্যাকায় মাটির পোতিমা একন আর চলে না। অন্য কোনও মেটেরিয়ালের কতা ভাবুন।’

ভিড়ের মাঝখান থেকে কে যেন বললেন, ‘ কয়েক বছর আগে দেশপ্রিয় পার্কে ফাইবার গ্লাসের প্রতিমা হয়েছিল। চমকাইতলায় সোনার দুগগা করলে কেমন হয় ?’

শুনেই মনে হল, ব্যাপক। বাংলায় পেরথম দশ ফুটের সোনার দুগগা। ভালো পাবলিসিটি পাওয়া যাবে মিডিয়ার কাচ থেকে। কতাটা কইতে গিয়েও আমি চুপ করে গেলুম। স্যার আর ম্যাডামরা আচেন।দেখি, ওঁরা কী বলেন।

বিরিলিয়ান্ট। অসাম। একসেলেন্ট আইডিয়া। স্যার আর ম্যাডামদের মুখ থেকে ইনিজিরি শব্দগুলো ছিটকে বেরুতে লাগল। সব্বাই একমত। মনে মনে হিসেব করে নিলুম, পোতিমার বাজেটই পৌঁচে যাবে, তিন দ্রুমে। বোরোঞ্জের ঢালাই, তার ওপর সোনার কোডিং। তিন কোটির কমে হবে না। কিন্তু কাকে দিয়ে পোতিমা গড়ানো হবে, তা নিয়ে মিটিনে ধুন্ধুমার লেগে গেল। পি সি চন্দ্র, সেনকো, অঞ্জলি, কল্যাণ জুয়েলার্স না তানিস্ক ? এগেগজনের পচন্দ, এগেগ দোকানের কারিগর। বাওয়াল চলল পেরায় কুড়ি মিনিট ধরে। মনে হল বলি, খামোশ।কিন্তু কতাটা মুক দিয়ে বেরুল না।

শেষে, তেনাদের থামানোর জন্যই একডা সময় বললুম, ‘ মুম্বইয়ের জাভেরি বাজারে আমার চেনাশুনো আচে স্যার । সুরজমল নাগরমল জুয়েলার্স।  আমি জানি, মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে একবার ওরা সোনার গণেশ বানিয়ে দেচল। মূর্তিটা  বান্দ্রার মিউজিয়ামে আচে। সুরজমল নাগরমলকে বললে ওরা কলকাতায় এসেও কাজডা করে দিয়ে যাবে। তবে, একনই ওদের অর্ডার দিতে হবে। নইলে মহালয়ার আগে ডেলিভারি দিতে পারবে না।’

পুরকায়স্থবাবু বললেন, ‘ তা’লে তো খুবই ভালো হয় ভাই।’

পেরায় সঙ্গেসঙ্গেই এক ম্যাডাম উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ আমার একটা আবদার আছে ভাই। ’

ম্যাডামকে চিনতে পারলুম। বাইক ডিলারের বউ, শান্তা মাসিমা। গা ভর্তি গয়না পরে পুজো প্যান্ডেলে আসেন পোতি বচর। শক্তি সংঘের কালীপুজোয় পোতিমা কেনার পয়সা দেন । ম্যাডামকে হাতছাড়া করলে চলবে না। মুখে ফের মধু ঢেলে বললুম, ‘ বলুন না ম্যাডাম বলুন ।’

‘ সোনার দুগগা হলে যেন মায়ের গয়নার ডিজাইন আমার পছন্দমতো হয়।’

ওহ এই ব্যাপার ।বললুম, ‘ তাই হবে ম্যাডাম। আবনার সব গয়না, লকার থেকে আমার কাচে নিয়ে আসবেন।ছবি তুলে জাভেরি বাজারে  পাঠ্ঠে দেবো।’

মিটিনের পরবর্তী আলোচনা  প্যান্ডেল আর লাইট নিয়ে।ফি বচর শক্তি সংঘের প্যান্ডেল করে পাড়ারই তাতু বলে একডা ছেলে। সে বাদ চলে গেল,  অপু ম্যাডাম থিম পুজোর কতা তোলার পর। বললুম, ‘গুড আইডিয়া । বাজেট দুই দ্রুম। আবনারাই ঠিক করুন, থিম মেকার হিসেবে কাকে চান?’

ফের ক্যাচড়া শুরু হয়ে গেল। কেউ বলেন, গৌরাঙ্গ কুইল্যা, সনাতন দিন্দা, প্রশান্ত পাল। কেউ চান, ভবতোষ সুতার, পূর্ণেন্দু দে বা গোপাল পোদ্দারকে। মহা মুশকিল। কে কত অ্যাওয়ার্ড এনে দেচেন, তার ফিরিস্তি শুনতে শুনতে আমার কান ঝালাপালা। ঘড়ি ধরে মিনিট দশেক ওয়েট করার পর  হাত তুলে কড়া গলায় বললুম, ‘ সাইলেন্ট প্লিজ। আমার একডা সাজেশান আচে। থিম মেকার যদি আনতেই হয় তা’লে বলিউড থেকে নয় কেন? আবনারা যদি রাজি হন, হলিউডেও চেষ্টা করা যেতে পারে। মাইন্ড ইট, মা দুগগার সাথে ছয়-সাত রকমের জীব জন্তুও আসে। থিম পুজোয় তারা কেউ পমিনেন্স পায় না। আমরা যদি এস্পেশান এফেক্ট ইউস করে ওদের পমিনেন্স দি, তা’লে সেটা ইউনিক ব্যাপার হবে। ’ হইহই করে সব্বাই রাজি হয়ে গেলেন এই পোস্তাবে।

মিটিনে ঠিক হল, অন্যবারের মতো টুনি বাল্ব নয়। আলোকসজ্জা হবে লেজার বিম দিয়ে । লাইটম্যানরা আসবেন, চিনের গুয়াংঝাউ থেকে। পুজো প্যান্ডেলে এক কোটি ট্যাকার লাইটিন ক্যালকাটা আগে ককনও দেকেনি। যাক, ছয় কোটি ট্যাকা খরচের ব্যাওস্তা হয়ে গেল। হাতে রইল আর চার কোটি। চমকাইতলা টগবগ করে ফুটচে দেকে ভালো লাগচিল। সাজেশানের  বন্যা বয়ে যাচ্চে। পোতি বচর পেসাদ আর দধিকম্মা ডিস্টিবিউশন নিয়ে পাড়ায় ক্যাচাল হয়। আলোচনার মোড় ঘুরল সেই দিকে।

ঠিক হল, পোচুর ফল কেনা হবে ডাইরেক্ট কাশ্মীর থেকে। ভালো ফুল পাওয়ার জন্য যেতে হবে  উত্তরাখণ্ডে। দশকম্মা সামগ্রী কেনার বেস্ট জায়গা  তিরুপতি । সেখানে লোক পাটাতে হবে। পুরুতমশাই আনা হবে বারাণসী থেকে। সেখানে যদি না পাওয়া যায়, তা’লে রিকোয়ে্স্ট করা যেতে পারে কাঞ্চিপুরমের শংকরাচার্যকে। এইভাবে পুজোর গ্লামার বাড়ানোর কতা ক্যালকাটায় আগে কেউ ভাবেইনি। চমকাইতলায় যে এত টপ লেবেলের অ্যাডভাইসার থাকতে পারেন, তা জানতাম না। ইনোগেরেশনের জন্য কাকে আনা হবে, যকন সেই কথা হচ্ছে, তকন অপু ম্যাডাম বলে উটলেন, ‘ ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেল ছাড়া আমি আর কারোর কথা ভাবতে পারছি না। ইউনেস্কো আমাদের দুগগা পুজোকে হেরিটেজ তকমা দিয়েছে। না হলে পুজোর গুরুত্বই  আমরা বুঝতাম না।’

ভালোই আলোচনা হচ্চিল, ফের বাওয়াল শুরু হল পুজোর ভোজ নিয়ে। টানা পাঁচ দিন চমকাইতলার কোনও বাড়িতে গ্যাস আভেন জ্বলে না। তিনবেলা খাওয়া- দাওয়ার ব্যাওস্তা থাকে প্যান্ডেলে। কিন্তু আইটেম নিয়ে ফি বচর ঝামেলা। কারও এস্পাইসি রান্না পচন্দ, কেউ চান বিধবাদের ভেজ । মিটিনে বসার আগে ঠিক করেই রেকেচিলুম, কোনও ফাইভ এস্টার  রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার আনাব। কিন্তু কেটারার সিলেকশন নিয়ে এমন  ধুন্ধুমার শুরু হল, দু’চারজন ওয়াক আউট পর্যন্ত  করলেন।

টেবল চাপড়াতে বাধ্য হলুম। ‘স্যার, আমার একটা সাজেশন আছে। ষষ্ঠী থেকে দশমী … পনেরো বেলার খাবার আনা হবে পনেরোটা ডিফারেন্ট রেস্টুরেন্ট  থেকে। ষষ্ঠীর লাঞ্চ শুরু হবে  বিজলী গ্রিল দিয়ে। দশমীর ডিনার শেষ হবে  গোবিন্দার নিরামিষ খানায়। পঞ্চাশ-ষাট পেটির বেশি লাগবে না। এ বার কাউকে আমি কমপেলেন করার সুযোগ দেবো না। এগিড ?’ আমাদের ভাষায় পেটি কতাটার মানে হল এক লাখ। সেটা খোলসা করে বলে দিতে হল।

সব্বাই বলে উটলেন, ‘ এর থেকে ভালো ডিসিশন আর হয় না।’

মিটিন ডিসমিস করার জন্য যকন উটে দাঁড়িয়েচি, তকন অপু ম্যাডাম বললেন, ‘ ওমা, মিটিং শেষ না কি ? একনও তো কালচারাল ফাংশানের কথাই হল না। আমাদের হাতে কিন্তু এক দ্রুম রয়ে গেছে।’

ম্যাডামের মুকে দ্রুম কতাটা শুনে ভালো লাগল। চমকাইতলায় এই একজন ম্যাডাম, যার সংস্কৃতি আচে। কোনও ফাংশান ওকে বাদ দিয়ে হয় না। অন্যবার সাউন্ড বক্স আর মাইক ভাড়ার হাজার পাঁচেক ট্যাকা আদায় করতে ম্যাডামের কালঘাম ছুটে যায়। এ বার অভাব নেই। বললুম, ‘ কী করতে চান বলুন, ফানশান বাবদ আমি হাফ দ্রুম রেকে দিচ্চি। ’

ম্যাডাম কিচু বলার আগেই  এক ছোকরা হাত তুলে বলল, ‘ এ বার পুজোর যা স্ট্যান্ডার্ড, তাতে পাড়ার বুড়ো-বুড়িদের শ্রুতি নাটক, গীতি নাটক বাদ দিন। মাল যখন আচে, তখন  সিঙ্গার অরিজিৎ সিংকে আনার কথা ভাবুন । একটা ইভনিং অন্তত  মস্তি করা যাবে।’

ছেলে- ছোকরারা আজকাল পুজোয় ভিড়তে চায় না। এই ছেলেটা ইন্টারেস্ট দেকাচ্চে। দমিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। জিগ্যেস করলুম, ‘ অরিজিৎ কত নিতে পারে ভাই, আইডিয়া আচে ? ’

‘ পাঁচ কোটি। তার কমে হবে না।  আমি বলি কি,  সোনার দুগগা বাদ দিন। ভোজ – ফোজ কমান। লেজার লাইটিং করে কোনও লাভ নেই। সেই টাকা বাঁচিয়ে ফাংশানে লাগান। ইয়াং জেনরেশনের কথা না ভাবলে চলবে ? ’ সঙ্গে সঙ্গে দেকি, ঘাপটি মেরে বসে থাকা আরও কয়েকটা ইয়ং ছেলে মেয়ে ছোকরার সঙ্গে গলা মেলাচ্চে।

ব্যাক টু এস্কোয়ার এগেন। ফের তক্কাতক্কি শুরু হয়ে গেল। বাধ্য হয়ে বললুম, ‘ আজ এ পরযন্ত থাক। ফাংশান নিয়ে পরের মিটিনে  কথা হবে।’

চা-সিঙ্গারা, আর ডিমের ডেভিল খেয়ে সবাই বাড়ি ঢুকে গেলেন। পাড়ার লোকদের মুখে এত খুশি আগে কখনও দেকিনি। ভাগ্যিস গেল বচর মা দুগগাকে ধমকি দিইচিলাম। ভাসানের দিন বাবুঘাটে পষ্ট বলেচিলাম, ‘ আমাদের ট্যাকায় ফি বচর, ফ্রি-তে বাপের বাড়ি বেড়িয়ে যাবে,  পরের বার কিন্তু তা আর হবে না মামণি। তোমার পুজোয় তোমাকেই ট্যাকা দিতে হবে। সামনের বার যদি পুজো নিতে চাও, তা হলে দশ দ্রুম পাঠ্ঠে দিও।’

জলে ডোবার আগে মা দুগগা বলেচিলেন, ‘ তথাস্তু।’

ঢপ দিয়ে যাননি। এ বার গণেশ পুজোর দিন সকালে ঘুম থেকে উটে দেকি, বাঘ ছালের একটা ব্যাগে ট্যাকাটা মামণি পাঠ্ঠে দিয়েচেন। ব্যাগের ভিতর একটা চিরকুট । তাতে লেখা, ‘ শোনো বাছা, লক্ষ্মী আর সরস্বতী এ বার আমার সঙ্গে  যাচ্ছে না। তোমাদের ওখানে যা চলছে, মেয়েরা যেতে বাছা ভরসা পাচ্ছে না। বলছে, আগে তুমি গিয়ে সব ঠিকঠাক করে এসো। পরের বছর যাব কি না, ভাবব।’

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *