বিনোদ ঘোষাল
ভাই সিটটা আমাগো। সইর্যা বয়েন।
উইন্ডো সিটে সবে বসেছি তার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই এমন কথায় বক্তব্যকারীর মুখের দিকে তাকালাম। প্লেনে ঢোকার আগে চোখ পড়েছে বেশ কয়েকজন সুন্দরীর প্রতি। যথোচিত নির্মোহ থাকার চেষ্টা করেছি কারণ পূর্ব অভিজ্ঞতা। আজ পর্যন্ত কোনও মনহরণকারিণী আমার পাশে তো দুরস্ত ধারে কাছেও বসেন না। ব্যাপারটা অনেক অনুসন্ধান করার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি এটা আমার ললাটলিখন। তবে সেটা যে মন্দভাগ্য নয় তা বোঝানোর জন্যই ঈশ্বর একবার অটোতে আমার পাশে এক সুন্দরী সুবেশা এবং তন্বীকে বসতে পাঠিয়েছিলেন। গোটা রাস্তা আমি পুরো তটস্থ হয়েছিলাম। সামান্যতম স্পর্শজনিত দুর্ঘটনাও যে মান এবং প্রাণ দুই নিয়েই অবলীলায় টানাটানি করতে পারে তার ভয়েই একপ্রকার কেন্নো টাইপ হয়ে পুরো রাস্তা গিয়েছি। তিনি যখন নেমে গেলেন তখন আমার দমআটকানো শরীর পুরো ভুসস করে ছেড়ে গেল। আআহহ কী শান্তি! সেদিনই বুঝেছিলাম পার্শ্বস্থিত রূপসী অবলার চেয়ে চিমসে গোঁফওলা ঢের ভাল।
তবে ভালোরও তো একটা লিমিট রয়েছে তো রে ভাই। সইর্যা বয়েনের দিকে বিরস বদনে তাকালাম আমি। চিবুকে দাড়ি, মাথায় ফেজ, পানখাওয়া দাঁত, চেক শার্ট কটকি প্যান্ট আমার দিকে দুটো বোর্ডিং বাস বাড়িয়ে দিয়ে বলল, দ্যাহেন আমাগো আঠাইশ।
আমি বললাম আমিও আঠাশ। আঠাশ সি। ওদের পাসে লেখা আঠাশ এ আর বি। সেটাই বললাম।
সেটাই বললাম। শুনে মধ্যপঞ্চাশ বলল অ। ঠিক আসে। বলে হাতে ধরা বিগশপার্স, থলে ইত্যাদি ওপরে তুলে দিয়ে পাশে সালোয়ার কামিজ পরা মহিলার দিকে তাকিয়ে বলল জান বও।
জান! শুনে পুক করে হাসি পেল আমার। কাঠির মতো রোগা মহিলা। চোখ মুখ বসা। সত্যি বলছি একবার তাকালে আর দ্বিতীয়বার দেখার আগ্রহ থাকে না। যাইহোক জানের জনার্দন বসলেন মাঝে। জানলার ধারে আমি আর অন্যধারে মহিলা। লোকটি পাশে বসামাত্রই মেজাজ খিঁচড়ে গেল আমার। জগতে যেকয়েকটি বিষয় আমাকে অত্যন্ত বিরক্ত করে তার মধ্যে অন্যতম হল দুর্গন্ধ। এই জিনিসটির সঙ্গে আমি কিছুতেই কম্প্রোমাইজ করতে পারি না। আর বেছে বেছে আমার পাশেই। শার্ট থেকে যেমন ঘামের উৎকট গন্ধ বেরোচ্ছে যে আমার পেটে যথারীতি পাক দিতে শুরু করল। শালার কপাল আমার এত খারাপ কেন? কেন? কেনওওওও?
কয়ডায় ছাড়বে? লোকাল বাস বা ট্রেনের ক্ষেত্রে সহযাত্রী যে প্রশ্নটি অনেকসময় করেন। কলকাতা টু ঢাকা ইন্ডিগো সিক্স ই আঠেরো আটান্ন নম্বর ফ্লাইটে আমার সহযাত্রী প্লেনের ভেতর নিজের সিটে বসে আমাকে ঠিক এইপ্রশ্নটি যখন করলেন তখন আমার জীবন আরও ওষ্ঠাগত হয়ে উঠল তার মুখনির্গত গন্ধে। কোনও রাখঢাক না করে স্ট্রেট বলছি স্রেফ বমি চলে এল। হে ঈশ্বর মাঝেমাঝে তো আমার প্রতি ছোটখাটো সদয় হলেও পারো? এই যেমন ভাল সুগন্ধী মাখা কোনও মানুষ কিংবা যার মুখে চমৎকার বেনারসি জর্দা। নেই কপালে নেই। চিরকালই আমার কপাল এমন এবং এমনই চলছে। ঘড়ি দেখলাম। ঢাকা পৌঁছতে ঠিক পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু টেক অফ করতে এখনও বেশ কিছুক্ষণ সময়। ততক্ষণ সহ্য করে যেতে হবে।
আমার ভাবনা শেষ হল না তার আগেই তিনি প্রকাণ্ড শব্দ করে দুইবার হাঁচি দিলেন। না মুখে হাত দিয়ে নয়, এমনিই। হাঁচির লালামিশ্রিত বাষ্পের দুর্গন্ধে আমার বমি পেয়ে গেল। নাক চিপে অন্যদিকে তাকালাম। বাস হলে জানলা খুলে দিতাম। এখানে সেই উপায় নেই। প্লেনের জানলা খোলা যায় না। ফলে নিজের দুর্ভাগ্যকে আরও একবার গালাগাল দিতে দিতে চুপ করে বসে সময় গুণতে থাকলাম। মোবাইল বার করে ফেসবুক খুলে খুটখাট করতে শুরু করেছি দেখি পানখাওয়া মুখ আমার পাশে ঝুঁকে আমার মোবাইলে চোখ রেখেছে। আচ্ছা জ্বালা তো?
মোবাইল একটু কাত করলাম। তিনিও নাছোড়। কাত হলেন। আমার প্রোফাইলে ঝাড়ি না দিলে তার যেন ভাত হজম হবে না। মোবাইল অফ করে পকেট ভরলাম। তিনিও একবার তার সঙ্গিনীর দিকে তাকিয়ে বাঙাল উচ্চারনে জিজ্ঞাসা করলেন, জান ঠিক লাগে তো?
জান! শব্দটা কানে কট করে বাজল আমার। হাসিও পেল।
যা হোক, দীর্ঘযুগ পার করে প্লেন এবার নড়ে উঠল। ধীর গতিতে এগোতে থাকল রানওয়ের দিকে।
আল্লাহ! বলে একটি স্বস্তির শাস ছেড়ে বিড়বিড় করে কিছু একটা বলে দুই হাতের তালু দিয়ে নিজের মুখে বোলালেন। তারপর আচমকাই আমার দিকে হেসে জিজ্ঞাসা করলেন ভাই(ব উচ্চারণে) আফনের কী ঢাকায় বাসা?
আমি সংক্ষেপে উত্তর দিলাম, না।
তয়?
আফনে কী করেন? আমারে এট্টু ধরতে পারেন না? সহসাই রিনরিনে গলায় অভিযোগ ভেসে এল ‘জান’ এর কাছ থেকে।
জ্বী জান, এই ধরি। বলে আবার সহজ একগাল হাসি দিলেন তিনি।
কী ধরবে? আমার বেশ কৌতুহল হল আমার। আমি আড়চোখে তাকালাম ওদের দু’জনের দিকে। কী করতে চায় তা জানার দুরন্ত আগ্রহ জন্ম নিল আমার। দেখলাম। লোকটা তার ডান হাতটা তুলে মহিলার ঠিক ব্রহ্মতালুতে রাখল। বেশ চাপ দিয়েই। মহিলা চোখ বুজে কীসব ফিসফিস করে বলে চলেছেন। আমি কিছুই বুঝলাম না। বোকার মতো তাকিয়ে রইলাম ওদের এই কান্ডর দিকে। কী করতে চাইছে দুজনে?
আমার কৌতুহলের প্রকাশ বোধহয় বেশিই হয়েগিয়েছিল। মহাশয় আবার আমার দিকে লালছোপ দন্তরাজি প্রকাশ করে বললেন, আমার বিবিজানের আবার প্লেন উঠার সময় একটা সমইস্যা হয়। মাথা ঘুরায়। এমন কইর্যা মাথাটা চাইপ্যা থুইলে ঠিক থাহেন।
অ। টেক অফ করার জন্য ঝড়ের গতি নিল বিমান। উনি তার জানের ব্রহ্মতালু চেপে ধরে বিরবির করে মন্ত্র আওড়াচ্ছেন। শোঁওও করে প্লেন মুহূর্তে অনেকটা ওপরে উঠে গিয়ে আকাশে থিতু হওয়ার পর হাত নামালেন তিনি। তারপর লোকটা আমাকে সরাসরি বললেন, আসসালায়কুম, আসেন একটু আলাপ করি। আমি ইয়াকুব মিয়া। আর ইনি আমার বিবিজান সালেখা।
আমি দুইজনকে নমস্কার জানালাম। তারপর ঘড়ি দেখলাম। আরো মিনিট পঁচিশ। ইয়াকুব সাহেবের গায়ের আর মুখের গন্ধ আমার চারদিক আমোদিত করে তুলছে।
ঢাকায় কী কামে যায়েন?
একটা অনুষ্ঠান রয়েছে।
আফনে গান বাজনা করেন নাকি?
না সেসব কিছু না। এমনিই বন্ধুর একটা অনুষ্ঠান। আমি আসলে যাচ্ছি ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে একটা সাহিত্য সম্মেলনে যোগ দিতে। এত কথা একে বলার প্রয়োজন বোধ করলাম না।
আইচ্ছা। তাইলে ঢাকা এইপ্রথম বার যাইতাসেন?
না দ্বিতীয়বার।
আইচ্ছা। ঢাকা ঘুরবেন তো?
নাহ একদিনের প্রোগ্রাম। পরশু ফিরে আসছি।
ওহ…বলে একটু চুপ করলেন ইয়াকুব। তারপর বেশ মন খারাপ করেই বললেন, অবিশ্যি আমাগো গরীব দ্যাশ। দেখনের আছে টা কী।
কথাটা মন থেকে বললেন নাকি আমাকে ঠুকে, সেটা বুঝলাম না। আমি পালটা জিজ্ঞাসা করলাম আপনারা ইন্ডিয়া কি বেড়াতে এসেছিলেন?
না ভাই, বেড়াইনের ভাইগ্য আর আমাগো কই? আইসিলাম বিবিজানের ট্রিটমেন্ট করাইতে। এই যে গলায় কেমো পড়সে এতদিন। বড় কষ্ট ভাই।
আমি সত্যিই এমন উত্তরের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। বেশ চমকে উঠলাম। কেমো! গলায়! মানে…
ক্যানছার ভাই। পুরা দশটা মাস মিয়াবিবিতে পইড়্যাছিলাম আপনাগো বুম্বাইতে। টাটা ক্যানসার রিসাচ আসে না…ওইহানে।
ওহ…আর কিছুই বলতে পারলাম না আমি প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায়।
কী কষ্ট কইর্যা যে কাটাইসি দুইজনে এই এক বছসর তা কী কমু ভাইরে…নিজের ভিটা ছাইড়্যা, পুলা মাইয়্যা ছাইড়্যা… ।
এখন ভাবী কেমন রয়েছেন?
মিথ্যা কমু না ভাই। অনেক ভাল আসে। ডাক্তারে কইসে বাকিটা ওষুধে ঠিক হইব। ইন্ডিয়ার ডাক্তারের উপর আল্লাআলার দুয়া রইস্যে ভাই। হেয়ারা জাদু জানেন। আমার বিবিজানরে মৃত্যু থিক্যা ফিরাইয়া আনসেন তেনারা। ইয়াকুবের চোখেমুখে সেই কৃতজ্ঞতার সরল অভিব্যক্তি ফুটে উঠল।
একটা কথা আমি আর না জিজ্ঞাসা করে পারলাম না। নিজের দেশে চিকিৎসা করাতে পারলেন না?
বাংলাদ্যাশে ট্রিটমেন্ট নাই ভাই। মানে আসে, কিন্তু কঠিন ব্যামো হইলে তার ট্রটমেন্টের এখনও ব্যবস্থা হয় নাই। শুধু খরচার পর খরচা হইব কিন্তু ট্রিটমেন্ট পাইবেন না।
সেইজন্যই কি সব বাংলাদেশের মানুষ চিকিৎসা করাতে ইন্ডিয়ায় আসে?
হ আর কি?
দশমাস ছিলেন?
হ। তার চাইর মাস আগে আরও একমাস থাইক্যা গেসি।
তাহলে এলেনই যখন মুম্বাই না গিয়ে ভেলোরে যেতে পারতেন।
হ গেসিলাম তো। ওইহানেই গেসিলাম। কিন্তু ওইহান থিকাই কইল মুম্বাই টাটা ক্যানছাড় রিসার্চে নিয়া যাইতে। তাই পরের বার তৈরি হইয়া গ্যালাম।
এতদিনের ভিসা পেলেন? শুনেছি বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া আসার ভিসা পেতে ঝামেলা হয়।
হুঁ তা হয়, তবে মেডিকাল ট্রিটমেন্টের গ্রাউন্ডে পেপারস ঠিকমত জমা দিলে ভিসা পাইতে পবলেম হয় না। অনেকদিনের ভিসা পাওন যায়।
ও বলে আমি মুখ ফিরিয়ে জানলার বাইরে তাকালাম। নিচে সাদা মেঘগুলো থোকা থোকা জমে রয়েছে। তুলোর পাহাড়। ভারি সুন্দর লাগছে দেখতে।
যাক এখন উনি ঠিক হয়েছেন এটাই আনন্দের।
হ্যাঁ ভাই।
আমি আচমকাই খেয়াল করলাম প্রথমে যতটা বদ গন্ধ লোকটার গা থেকে বেরোচ্ছিল এখন আর ততটা নয়, তাহলে আমি কি অন্যমনস্ক হয়ে পড়লাম। হলেই ভাল।
আসলে সালেহা হইল আমার জান বুঝলেন কি না। ওর কিস্যু হইলে আমি ওইহানেই শ্যাষ। আমাগো শরীল আলাদা কিন্তু জান একটাই বুঝলেন কি না।
সঙ্গে সঙ্গে মহিলা চাপা গলায় ধমক দিল আহ আফনে একটু চুপ থাকতে পারেন না ক্যান? সারাক্ষণ খালি…
শুনে আবার দাঁত বার করে হাসলেন ইয়াকুব। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন শরম পাইতাসে। আইচ্ছা আর কমু না। বলে কথা বদলে ইয়াকুব বললেন আপনাগো নসিব বড় ভাল ভাই। ইন্ডিয়ার মতো দ্যাশে জন্মাইসেন। কত ব্যবস্থা, কত কিসু রইসে। এইবার তো কিছু ঘুরান হয় নাই। জান রে কইসি এরপরের বার যখন আমু ওর টেস্টের লইগ্যা তখন ঘুরুম। তাজমহল দেখুম বিবিরে লইয়্যা।
আমি বললাম হ্যাঁ সেই ভাল।
তয় ট্যাহাপয়সা জলের মতো বাইর হইসে ভাই। এই পেলেনে যাতায়াত, এতদিন ওইহানে থাকা, খাওয়া ট্রিটমেন্ট। যা ছিল প্রায় সবই শ্যাষ, তয় আমার কুনো কষ্ট নাই হ্যার লইগ্যা। ট্যাহা আজ নাই কাল আবার হইব, হাত দুইটা আল্লাহ অহনও মজবুত রাখসে, মানুষতারে যে তাজা ফিরৎ পাইলাম এইটাই আল্লাতালার দুয়া তাই না ভাই?
অবশ্যই।
ইন্ডিয়া পাশে ছিল বইল্যা আমার বিবিজান বাঁচল ভাই। আমাগো দ্যাশে ওরে বাঁচাইতে পারতাম না।
সত্যি বলতে নিজের দেশের প্রশংসা শুনতে ভালই লাগছিল। আমাদের দুজনের ভাষা বাংলা হলেও দেশ দুটো আলাদা। ফলে মনেরও কোথাও একটা কাঁটাতার বিছানো রয়েছে সেটা টের পেলাম। কিন্তু ইয়াকুব বারবার নিজের দেশকে একটু খাটোই করছিলেন আরও এমন কিছু কথা বলে যেটা আমার ঠিক ভাল লাগছিল না। সব দেশেরই ভাল মন্দ রয়েছে কিন্তু সেটা অন্যদেশের মানুষের কাছে না বলাই ভাল।
একটু পর এ্যানাউন্সমেন্ট হল সিটবেল্ট বেঁধে নিতে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ল্যান্ড।
বাংলাদেশ আইয়্যা পড়ল নাকি? হঠাৎই জিজ্ঞাসা করলেন বছর পঞ্চাশের ইয়াকুব।]হ্যাঁ এই তো বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। আমি নিচের দিকে তাকালাম ছেড়া ছেড়া মেঘের ফাঁকে বহু নিচে খুব ছোটছোট বাড়ি, আলো, রাস্তা দেখা যাচ্ছে।
ইয়াকুব আবার একটা শ্বাস ছাড়লেন। জান আইয়া পড়সি, আহ আল্লাহ। বাংলাদ্যাশের আকাশের উপড় অহন আমরা…কী অদ্ভূত তৃপ্তি নিয়ে কথাটা বললেন ইয়াকুব। ওর শ্বাস ছাড়ায় আমি এবার কোনো দুর্গন্ধ পেলাম না। আমার নাক কি তবে ওই গন্ধ সয়ে গিয়েছে?
আর ঠিক কিছুক্ষণ পর প্লেনটা যখন নিচে নামবে তখন ইয়াকুব আবার তার বেগমজানের মাথায় হাত রাখলেন। প্লেনের চাকাগুলো যখন রানওয়ে স্পর্শ করে একটা ঝাঁকুনি দিল ইয়াকুব আচমকাই বাচ্চাছেলের মতো উল্লসিত হয়ে প্রায় চিৎকার করে বলে উঠলেন আল্লাহ আমার দ্যাশের মাটি ছুঁইলাম। আআহ আআল্লাহ! আমাগো গরীব দ্যাশ ভাই। আমার দ্যাশ…
আর কিছু বললেন না ইয়াকুব। ওর চোখেমুখে একটা অপূর্ব আলো ঝলকাচ্ছিল।
আপনাদের বাড়ি কি ঢাকাতেই?
না না রংপুর। ঢাকায় হইলে আজ রাইতে আপনারে দাওয়াত না দিয়া ছাড়তাম নাকি? পদ্মার ইলিশ খাওয়াইয়া তবে ছাড়তাম। আইজ হোটেলে থাইক্যা। কাল বাসে রওনা দিমু।
প্লেন থামল, যে যার হ্ন্যাদব্যাগ বার করতে ব্যস্ত। ইয়াকুবের মোবাইলে বাংলাদেশী সিমের টাওয়ার এসে গিয়েছে। কাকে যেন ফোন করে খুব চিৎকার করে বলছে, ব্যাটা রে আইস্যা পরছি। চিন্তা করিস না। হ্যাঁ রে ব্যাটা। পৌঁছাইয়া যামু…আরে হ হ এই নে আম্মির লগে কথা ক…ফোনটা ওর স্ত্রীর দিকে বাড়িয়ে দিলেন ইয়াকুব। আমি এগিয়ে গেলাম। ওদের কথা আর শোনা হ’ল না।
শেয়ার করুন :