গরমে আরামের ফ্যাশন -

গরমে আরামের ফ্যাশন

সাবর্ণী দাস

কতটা পথ পেরোলে তবে পথিক বলা যায় ?কত গরম পড়লে তবে কী গরম বলা যায়।প্রত্যেক বছরে গ্রীষ্মকাল এলেই মনে হয় ওরে বাবা এবারে কী গরম পড়েছে।তাই এই গরমে কীভাবে কোন পোশাকে অফিস – কাছারি- আড্ডা -বিয়েবাড়ি সব জায়গায় আরামে ,ফুরফুরে থাকা যায় তার টিপস রইল।  

অফিসের সাজ

অফিস মানের ফর্মাল পোশাক।সে ওয়েস্টার্ন হোক বা খাঁটি ভারতীয়।গরম এবং রোদের কথা মাথায় রেখে বেছে নিতে হবে ফ্যাব্রিক আর জামার কাট।

হালকা এবং ব্রেথেবল কাপড় বেছে নিন

গরমে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত কাপড়ের উপাদানে।সুতি,লিনেন,খাদির মত প্রাকৃতিক ফ্যাব্রিক শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং ঘাম শোষণ করে। এই ঋতুতে সিনথেটিক  বা পলিয়েস্টার একদম এড়িয়ে চলা উচিত।অফিসের সাজের জন্য সালোয়ার কামিজ বেশ মানায়।তবে খুব ফিটিং বা আঁটোসাঁটো কমিয়ে এড়িয়ে চলুন।অল্প ঢিলে যেমন এ -লাইন,আমব্রেলা কাটের জামা শরীরে হওয়া খেলবে।এড়িয়ে চলুন চুড়িদার ,লেগিংস।লোয়ার্স যেন সবসময় পাতলা সুতির কাপড়েরই হয়।ফ্লেয়ারি টপ, পালাজো, কুর্তা বা কেফতান স্টাইলের পোশাক যেমন ফ্যাশনেবল, তেমনি স্বস্তিদায়ক।

গরমে শাড়ির কথা শুনলে অনেকের ভ্রু কুঁচকে ওঠে কিন্তু ঠিকঠাক ফ্যাব্রিক বেছে নিলে

গরমে শাড়ির থেকে আরামদায়ক পোশাক আর হয় না।সুতির নানারকম প্রাদেশিক শাড়ি বেছে নিতে পারেন।একরঙা সরুপাড় শাড়ি,ব্লকপ্রিন্ট,ফেব্রিকওয়ার্ক,বাটিক,অল্প বুটির ধনেখালি,দক্ষিণ ভারতীয় সুতির শাড়ি বেছে নিন। গরমকালে তরতাজা থাকতে স্কিন ফ্রেন্ডলি ফ্যাব্রিক ব্যবহার করা শ্রেয়। 

রঙে আনুন সতেজতা

গ্রীষ্মে হালকা এবং উজ্জ্বল রঙ যেমন – সাদা, প্যাস্টেল গোলাপি, পিচ, মিন্ট সবুজ—চোখেও ঠান্ডা লাগে। প্যাস্টেল শেডস  এখন খুব ইন ট্রেন্ডে। এগুলো শুধু দেখতে সুন্দরই নয়, মনকেও প্রশান্তি দেয়। গরমের দিনে এই রঙের প্রভাব অনেকটাই আরামদায়ক।    

মিনিমাল মেকআপ ও অ্যাকসেসরিজ

গরমে ভারী মেকআপ সহজেই গলে যেতে পারে, তাই মিনিমাল লুকই সবচেয়ে কার্যকর। পাশাপাশি হালকা রোদচশমা, স্কার্ফ এবং স্ট্র হ্যাট আপনার লুক সম্পূর্ণ করবে।বিবি ক্রিম,ওয়াটারপ্রুফ মাস্কারা এবং টিন্টেড লিপি বাম এগুলিতে  আপনি গ্রীষ্মকালীন পারফেক্ট মেক আপ লুক পেয়ে যাবেন।এক্ষত্রে কমই বেশি।

 উইকেন্ড বা ছুটির ডে টাইম আড্ডা 

চড়া তাপমাত্রা আর গরম হাওয়ার সঙ্গে হাবেভাবে মিলে যায় বোহেমিয়ান লুক।বোহেমিয়ান ফ্যাশন মানে ঢিলেঢালা জামাকাপড়,রঙের রায়ট আর খুব ক্যাজুয়াল ধরণের পোশাক আশাক।

যেমন বানজারা স্টাইলের রংবেরঙের স্কার্টের সঙ্গে পরা যেতে পারে এক রঙা ঢিলে টপ।     

কটন কার্গো নি লেন্থ প্যান্টস এখন ইন থিং।তার সঙ্গে ছোট লেন্থের ফুরফুরে টপ দারুণ মানাবে।

রংচঙা লো ক্রচ প্যান্টস এখন খুব পপুলার।সঙ্গে একরঙা টপ বা স্প্যাগেটি।এরসঙ্গে কন্ট্রাস্ট কালারের স্কার্ফ।

বেছে নিন স্কার্ট।স্কার্টের লেন্থ যেমনই হোক এই সময়ে বডি হাগিং বা পেন্সিল স্কার্ট একেবারেই নয়।ঘের দেওয়া নি লেন্থ বা লম্বা স্কার্ট পরার মজাই আলাদা।

ওয়েল টোনড লং লেগ্স হলে শর্টসের জুড়ি নেই।কটন ফ্লোরাল প্রিন্টেড,একরঙা বা চেক শর্টসের সঙ্গে ট্যাঙ্ক টপ বা স্প্যাগেটি দারুণ মানাবে।   

বিয়েবাড়ি,উৎসবে সন্ধের সাজ

উৎসবের সাজে শাড়ির জুড়ি নেই।শাড়ির আড়ালে আপনার পা মনের সুখে হাওয়া খেতে পারবে,আঁচলের আড়ালে চুরি করে ঢুকে পড়বে মিষ্টি বাতাস।গরমে সন্ধের সাজের জন্য আপনার ওয়ার্ডরোবে রাখতে পারেন ঢাকায় টাঙ্গাইল,ব্রোকেড বোর্ডের কটন বেনারসি,কেরালা কটন,চান্দেরি,মাহেশ্বরী ইত্যাদি।

স্লিভলেস,হল্টারনেক ,সুতির টিউব ব্লাউজ,ওয়াইড ওপেন ব্যাক ব্লুজ খুব আরাম দেবে।

অনেকের শাড়ির থেকে সালোয়ার কামিজ বেশি পছন্দের।তারা বুটি দেওয়া বা এমব্রয়ডারি করা উজ্জ্বল রঙের কটন কামিজ পড়তে পারেন।একরঙা কটন কামিজে বৈচিত্র আনে চান্দেরি ওড়না।              

পায়ের যত্ন ভুলবেন না

গরমে স্যান্ডেল বা ফ্ল্যাট চপ্পলের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। খোলা পায়ের জুতো পা রাখে ঠান্ডা ও আরামদায়ক। লেদার বা কর্ক সোল স্যান্ডেল পায়ে ঘাম জমতে দেয় না এবং দীর্ঘক্ষণ হাঁটার পরও আরাম দেয়।অফিসের জুতো সাধারণত ফর্মাল হয়।তবে এর মধ্যে মেয়েরা আরামদায়ক জুতো বাছতে পারেন।পুরো ঢাকা না হয় পিপ টো স্ট্র্যাপ দেওয়া নিতে পারেন।ফর্মাল হিসেবে দিব্যি চলে যায়।অন্য সময়ে ফ্লিপ ফ্লপ,ফ্ল্যাটস,কোলাপুরি,গ্ল্যাডিয়েটর,টাই আপ নানা ধরণের পরতে পারেন।       

  

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *