ব্রেন রট অসুখ এবং আরোগ্য -

ছবি -ডিআইডাব্লিউ -আইজেন

ব্রেন রট অসুখ এবং আরোগ্য

নিউপোর্ট ইনস্টিটিউটের মেন্টাল হেলথ এক্সপার্ট টিপস।

এতদিনে জানা গেছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস ২০২৪ বছরে এই ব্রেন রট কে ‘ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার ‘ আখ্যা দিয়েছে।ব্রেন রট বলতে এমন একটা অবস্থা যা দীর্ঘক্ষণ ডিজিটাল আসক্তি ও নির্ভরতার কারণে  মানুষের মানসিক এবং বৌদ্ধিক উৎকর্ষ নষ্ট করে বেশ বড় ক্ষতি করছে,এর নেশায় মানুষ তার স্বাভাবিক চিন্তা ভাবনা এবং দৈনন্দিন অনেক কাজ না করে রাতদিন ডিজিটাল নেশায় আক্রান্ত।

ব্রেন রট।যদিও এখনও একে চিকিৎসা শাস্ত্রে গভীর অসুখের কুখ্যাতি দেয়নি তা হলেও দীর্ঘসময় ধরে নানা রকম একঘেয়ে মোটা দাগের অর্থাৎ বিলো কোয়ালিটি ডিজিটাল কন্টেন্টে আসক্ত হওয়ার জন্য আমাদের অলক্ষ্যে অন্য অনেক বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে।সোশ্যাল মিডিয়া,স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম,রিলস,টিক টক ভিডিও ঘন্টার পর ঘন্টা স্ক্রল  করতে করতে আমরা নিজেদের অজান্তে এক ভয়ঙ্কর মহামারির দিকে দৌড়চ্ছি।

ব্রেন রট আমাদের কি মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে :

মানসিক জড়তা :কোন কিছু গঠনমূলক,কাজের চিন্তাধারাকে দীর্ঘসময় কুয়াশাচ্ছন্ন করে রাখা।

আলস্য: এক ভাবে এক জায়গায় ফোনে নিমগ্ন,জগৎ সংসার ভুলে,শারীরিক ভাবে স্থবির।   

রিডিউসড অ্যাটেনশন স্প্যান: কোন বিষয়ে দীর্ঘসময় মনোযোগের ব্যাঘাত।

কাজ করতে বাধা: যে কোন কাজ করতে গেলে তার পরিকল্পনা এবং সেই কাজ ঠিক ভাবে করার মানসিকতায় বাধা।   

সমস্যা সমাধানে বাধা : দীর্ঘসময় এই ব্রেন রটের কারণে ধৈর্য্যচ্যুতি যে কোন কাজে কোন সমস্যা এলে সেটার সমাধানে যে সময়,পরিশ্রম  এবং বুদ্ধিপ্রয়োজন তাকে বাধা দেয় এই আসক্তির কুপ্রভাব।

সিদ্ধান্তহীনতা: এর জেরে অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

ভুলে যাওয়ার ব্যারাম:এর জন্য অনেক জরুরি কথা মনে পড়ছে না।

স্মৃতিভ্রংশ : পুরোনো কথা মনে পড়ছে না।

মুড সুইং: কথায় কথায় রেগে যাচ্ছেন অথবা বেশ আনন্দের সময়ে হঠাৎ অজানা আতঙ্কে শিউরে উঠছেন। 

১২টি উপায়ে ব্রেন রট সমস্যা সমাধান :

নিউপোর্ট ইনস্টিটিউটের মেন্টাল হেলথ Mental Health এক্সপার্ট অ্যাডভাইস

১) সোশ্যাল মিডিয়া টাইম সেট :একদম কঠোরভাবে সারাদিনে কতক্ষণ কাজ ছাড়া স্ক্রিন টাইম সেটা  ঠিক করে নেওয়া।

২)মননশীলতা : একটা সচেতন, সহনশীল মানসিকতা।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জীবনযুদ্ধ এবং বাড়ি ফিরে শান্ত,সচেতন মনোভাবের অভ্যাস।

৩)প্রতিদিন এক্সারসাইজ: করতেই হবে।নিদেনপক্ষে ৩ কিলোমিটার হাঁটা আর ৩ লিটার জল খাওয়া।

৪)বই পড়া: যদি এই অভ্যাস ছেড়ে দিয়ে থাকেন তাহলে আজ থেকে আবার শুরু করুন।

৫)মাল্টিটাস্কিংয়ে লাগাম : হ্যাঁ।এটা এখনকার ‘মন্ত্র’ হতে পারে কিন্তু নিয়মিত এই মাল্টিটাস্কিংয়ের চাপ কমাতে হবে।

৬)ডিজিটাল ডিটক্স : দিনের কিছু সময়ে মোবাইল অথবা স্ক্রিন টাইম ছাড়া থাকা।ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যসচেতন মানুষরা শুরু করে দিয়েছেন।

৭)নতুন কিছুর অভ্যাস :যে বয়েসেই হোক নতুন কিছু অথবা ছোটবেলার ফেলে আসা খেলা ধুলো,গান বাজনা ,ছবি আঁকা আবার শুরু করা অথবা নতুন কিছু শখ যেমন ইন্ডোর প্ল্যান্টস।

৮)আড্ডা : হোয়াটস্যাপ,ফেসবুক চ্যাট নয়,নিখাদ আড্ডা,আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মেলামেশা।

৯)প্রকৃতির কাছে :সকালে হাঁটার সময় অথবা দিনের,সপ্তাহে যতটা সময় পাবেন প্রকৃতির কাছে,গাছ গাছালি,উন্মুক্ত আকাশের নিচে থাকা।

১০)সৃষ্টিশীল থাকা:যে ভাবেই হোক,দিনের কিঁছু সময় লেখালেখি করুন না ,হোক না হাবিজাবি অথবা ফেলে আসা সাহিত্যচর্চা।

১১) ঘুম :পরিমিত ঘুম আবশ্যিক।রোজ অন্তত ৭ ঘন্টা।

১২) পরিমিত ডায়েট: শুধু স্বাস্থ্যসর্বস্ব নয় ,পরিমিত খাবার বা ব্যালেন্সড ডায়েট।                           

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *