সুমন্ত্র মিত্র
গতকাল ৩রা জুন সন্ধ্যা ৬.৩০ টা নাগাদ অ্যাক্রপলিসের সামনে ট্যাক্সি থেকে নেমে ব্যাগের স্ট্র্যাপ স্লিপ করার পর সামলে নিয়ে একটু পরেই আবিষ্কার করলাম ফোনটা নেই। আজকের দিনে রাস্তাঘাটে ফোন হারানোর ভয়ঙ্কর আতঙ্ক,সম্ভাব্য সীমাহীন ঝামেলার ভয়ে দিশেহারা হয়ে দেখি অ্যাক্রপলিস মলের সামনে দাঁড়িয়ে এক বলিষ্ঠ সার্জেন্ট ও সঙ্গে একজন সহকর্মী পুলিশ।ঘটনা জানানোর মুহূর্তের মধ্যে আমার ফোন নাম্বার নিয়ে ফোন করে প্রথম কথাটাই বললেন,’ সার্জেন্ট বলছি,ফোন কাটবে না।’ আমার ধারণা নিশ্চয়ই ট্যাক্সি থেকে নামার সময় ট্যাক্সিতেই ফোন পড়ে গেছে ,তাই বলাতে উনি আর আমি অ্যাক্রপলিসের সামনে থেকে সিমেন্স পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে আবার ফিরে এসে ট্যাক্সির দেখা নেই এদিকে আমার ফোনে যিনি আছেন তিনি বলছেন উনি মলের পাশে চায়ের দোকানে।এদিকে চায়ের দোকানের সামনে কোন ট্যাক্সি নেই। দেখা গেল ঐ চায়ের দোকানে একটি কিশোর ছেলে একা দাঁড়িয়ে ,কানে ফোন আমরা আসতে ইশারায় ডাকছে।
জানা গেল যে ট্যাক্সিতে নয়,নামার পরে ব্যাগের স্ট্র্যাপ স্লিপ করার সময় সেটা ঠিক করার সময় ফোনটা রাস্তায় পড়ে গিয়েছিল। ফোন ফেরৎ পেয়ে দুই ডানা লোকানো দেবদূতকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর পর দুজনের মুখের হাসিটা অনেকদিন মনে থাকবে।আর শত অনুরধেও সেই ছেলেটি নিজের নাম বললো না।
এই কলকাতা পুলিশের ব্যর্থতা,সমালোচনা নিয়ে যে কোনও সংবাদপত্রে প্রথম পাতায় বড় হেডলাইনে খবর প্রকাশ হয় কিন্তু সাফল্য যদি খুব বড় না হয় তাহলে প্রথম পাতায় জায়গা পাওয়া কেন মুস্কিল হয় এটা মিডিয়ায় ৩০ বছর কাজ করার পরেও বুঝতে পারি না। পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেরী হলে তাকে পরীক্ষার হলে পৌঁছে দেওয়া,রাত বিরেতে অসুবিধে হলে সঙ্গে সঙ্গে তার সমাধান,অসহায় অসুস্থ মানুষকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া,রাত বিরেতে একা তরুণীর সাহায্যে এগিয়ে আসা,এই অসহনীয় গরমে রাস্তায় সদা পাহারা দেওয়া এই কলকাতা পুলিশ ও তাদের কর্মকুশল ক্ষিপ্র চৌখস সার্জেন্টদের আমাদের মানে সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে আরও সন্মান,সম্ভ্রম,কৃতজ্ঞতা প্রত্যাশিত এটা বোধহয় বলার অপেক্ষা রাখে না।
ডানা লুকোনো দেবদূত সার্জেন্ট সব্যসাচী রাহা আর সেই নাম না জানা কিশোর, আপনাদের নতজানু হয়ে কুর্নিশ করছি।
শেয়ার করুন :