এখন দিন রাত আতঙ্ক,হতাশার খবরে আমরা কেউ ভাল নেই।এর ওপরে একের পর এক প্রিয়জনের চলে যাওয়ার খবর,কাজের অনিশ্চয়তা আর এক চরম দুঃসময় রোজ বাড়ছে অ্যাংজাইটি আর নার্ভাসনেস।এক মনে কাজ করছেন আর ফোনে নিদারুন দুঃসংবাদে হঠাৎ বুক দুরুদুরু শুরু,ঘাম হচ্ছে দেখে মনে করছেন এই হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে কি না।গত এক বছরে ভীষণ বেড়ে চলা এই প্যানিক অ্যাটাকের কারণ,লক্ষণ আর সেফটি টিপস-
কারণ- এখনও সে অর্থে নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পাওয়া গেলেও অনেক সময় বংশানুক্রমে,জীবনের বেশ কিছু সন্ধিক্ষণে বারবার আঘাত,হঠাৎ একা হয়ে যাওয়া,চাকরি,কাজের জায়গায় অস্থিরতা, ডিপ্রেশন, হাইপারথাইরয়েডিজম-থাইরয়েড গ্রন্থি অতিমাত্রায় অ্যাক্টিভ হয়ে পড়া, হাইপোগ্লাইসেমিয়া-হঠাৎ করে ব্লাড সুগার কমে যাওয়া,কাছের কাউকে হারানো এমন অনেক কারণে প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে।
পন্থা –
- সমস্যাটাকে চিনুন,অযথা ভয় পাবেন না।প্যানিক অ্যাটাক বিষয়টা জানুন।/ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।একবার হলে ‘আবার যদি হয়’ ভাবা বন্ধ করুন।
- কোন পরিস্থিতি এমন সমস্যা সৃষ্টি করছে তাকে চিহ্নিত করে (ট্রিগার ফ্যাক্টর) তার প্রতি অ্যালার্ট থাকতে শিখুন।ডাক্তার এবং কাছের মানুষদের সাহায্যে নিজেকে সেই ট্রিগার ফ্যাক্টরগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে অভ্যাস করুন।
- নিজেকে বোঝান যে,অবস্থা যতই বিপজ্জনক মনে হোক,আপনি কিন্তু ভয়ঙ্কর বিপদে পড়েননি আর এর থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা আছেই।
- রোজকার নিউজে মৃত্যুর,আক্রান্তের সংখ্যা দেখা একেবারে কম করে দিন।শুধু নিউজ আপডেট দিনে একবার দেখে নিন।এটা আইপিএল ক্রিকেট স্কোর নয়।সোশ্যাল মিডিয়াতে হতাশা ,আতঙ্কের পোস্ট এড়িয়ে যান আর এই নিয়ে বাড়িতে হতাশার আলোচনাকে একদম প্রশ্রয় দেবেন না।মৃত্যুর সংখ্যা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যা অনেক অনেক বেশি সেই দিকে নজর দিন।
- ডাক্তারের,মনোবিদের পরামর্শে যোগ ব্যায়াম,ধ্যান, মাসাজের সাহায্য নিন।
- ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন কারণ ডিপ ব্রিদিং এই সমস্যা কমাতে সহায়ক।
- ধূমপান,মদ্যপান,ক্যাফেন থেকে দূরে থাকাই মঙ্গল।কাশির ওষুধ খেলে সচেতন থাকুন।
- পেপার ব্যাগ ব্রিদিং।ঠোঙা বা কাগজের ব্যাগের মধ্যে প্রশ্বাস নিশ্বাস নেওয়া ছাড়া।
চিকিৎসা
প্রথমে ইসিজি,ব্লাড সুগার,থাইরয়েড টেস্ট করিয়ে দেখে নেওয়া হয় শরীর কতটা সুস্থ বা সমস্যার অন্য কোনও কারণ আছে কিনা।কোনও সমস্যা না থাকলে সাধারণত ডাক্তার অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট এবং অ্যান্টি অ্যাংজাইটি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করেন এবং সাধারণত এতে ভাল ফল পাওয়া যায়।এছাড়া সিবিটি অর্থাৎ কগনিটিভ বিহেভিরিয়াল থেরাপির সাহায্যে ট্রিটমেন্ট করা হয়।এর মাধ্যমে ডাক্তার রোগীর মন থেকে সমস্যা সৃষ্টিকারী চিন্তাভাবনা বা থট প্যাটার্ন বুঝে নেওয়া আর তা দূর করার চেষ্টা করেন।
শেয়ার করুন :