১৫টি পুজোয় বেড়ানোর স্পট -

ছবি-ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া

১৫টি পুজোয় বেড়ানোর স্পট

দৃষ্টিনন্দন দাক্ষিণাত্য।

দুর্গাপূজোর কয়েকটা দিন যদি ভিড়ভাট্টা ও প্যান্ডেলের হট্টগোলের বাইরে কিছুটা শান্তি, প্রকৃতি আর সংস্কৃতির পরশে কাটাতে চান, তবে দক্ষিণ ভারত হতে পারে আপনার আদর্শ গন্তব্য। মন্দিরনগরী থেকে সবুজ পাহাড়, ব্যাকওয়াটার থেকে বালুকাবেলা—দক্ষিণ ভারতের নানা প্রান্তে আছে অপরূপ দশটি গন্তব্য, যেগুলো পুজোর ছুটিতে ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।

ছবি-ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া

. মহাবলীপুরম (তামিলনাড়ু): পাল রাজবংশের অধীনে নির্মিত মহাবলীপুরম ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী। সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত পাথরের মন্দির, রথ ও গুহাচিত্রগুলি প্রাচীন দ্রাবিড় স্থাপত্যশৈলীর শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। এখানে মহাভারতের নানা ঘটনা উৎকীর্ণ রয়েছে ভাস্কর্যে। ‘শোর টেম্পল’ হলো শৈব উপাসনার এক বিস্ময়কর নিদর্শন।দেখার জায়গা: শোর টেম্পল, পঞ্চ রথ, অর্জুন’স পেনান্স, টাইগার কেভ।

কোথায় থাকবেন: টিটিডিসি রিসোর্ট , র্যাডিসন ব্লু রিসোর্ট,টেম্পল বে,চ্যারিওট বিচ রিসোর্ট,এমজিএম বিচ রিসোর্ট।  কীভাবে যাবেন: চেন্নাই থেকে গাড়িতে ১.৫ ঘণ্টা। নিকটতম বিমানবন্দর: চেন্নাই।বিকেলের দিকে শোর টেম্পলের পেছনে সমুদ্রে  সূর্যাস্ত এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা।

বিশেষ আকর্ষণ:মন্দিরের আলোকসজ্জা ও পুজো, সমুদ্রের ধারে স্থানীয় খাবার, ফিশ কারি,প্রন মশলা ,ক্রিস্পি ক্র্যাব ফ্রাই।সিরক,অ্যারাবিয়ান গার্ডেন রেস্টুরেন্ট।

ছবি- আনস্প্ল্যাশ ডট কম

. মাদুরাই (তামিলনাড়ু): মদুরাইকে বলা হয় “তামিল সাংস্কৃতিক রাজধানী”। এখানে অবস্থিত মীনাক্ষী সুন্দরেশ্বর মন্দির প্রায় ২৫০০ বছরের পুরনো। মন্দিরের গর্ভগৃহ, চিত্রমণ্ডপ ও গোপুরমে পৌরাণিক কাহিনির নিখুঁত বর্ণনা ফুটে উঠেছে। মদুরাই ছিল প্রাচীন সাঙ্গম সাহিত্যের কেন্দ্রও।দেখার জায়গা: মীনাক্ষী সুন্দরেশ্বর মন্দির, গাঁধী মিউজিয়াম, তিরুমালাই নায়ক প্রাসাদ।

কীভাবে যাবেন: মাদুরাই বিমানবন্দর বা রেলপথে সহজগম্য। চেন্নাই বা কোয়েম্বাটুর থেকে ট্রেন বা বাস।

বিশেষ টিপস: রাতে মন্দিরের রীতিনীতিতে অংশ নিন—অন্যরকম অভিজ্ঞতা।

কোথায় থাকবেন: অ্যাস্টোরিয়া হোটেল, হেরিটেজ মাদুরাই, ফরচুন পান্ডিয়ান হোটেল,হোটেল সুপ্রিম।

বিশেষ আকর্ষণ:মিনাক্ষী মন্দিরের দুর্গাপুজো ও আলোকসজ্জা।

খাবার : কোনার মেস,পেরিয়ার,সিম্মাকালের কারি দোসা,জানকীরাম,ইয়ানাইক্কাল,আমসাবালি।   

ছবি- পিন্টারেস্ট

৩. কন্যাকুমারী (তামিলনাড়ু): ভারতের দক্ষিণতম প্রান্তে অবস্থিত কন্যাকুমারী পৌরাণিক মতে দেবী পার্বতীর কুমারী রূপে তপস্যার স্থান। এখানেই আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের মিলন হয়। বিবেকানন্দ রক স্মারক এই স্থানের আধ্যাত্মিক মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত একসাথে দেখা যায় খুব অল্প জায়গায়, কন্যাকুমারী তার অন্যতম।দেখার জায়গা: বিবেকানন্দ রক, থিরুভাল্লুভার মূর্তি, সানরাইজ পয়েন্ট, গাঁধী মন্ডপ।কোথায় থাকবেন: সি ভিউ,স্পর্শা কন্যাকুমারী। কীভাবে যাবেন: তিরুবনন্তপুরম থেকে ট্রেনে বা গাড়িতে ২.৫ ঘণ্টা।বিশেষ টিপস: সূর্যোদয় মিস করবেন না, ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সানরাইজ দৃশ্য।

ছবি- আই স্টক

৪. মুন্নার (কেরল): মুন্নার এক সময় ব্রিটিশদের প্রিয় গ্রীষ্মকালীন আশ্রয় ছিল। এখানে তিন নদীর মিলনস্থলে বিস্তৃত চা-বাগান, গিরি ও ঝরনার অপার শোভা দেখা যায়। এরাভিকুলাম পার্কে বিরল প্রজাতির নীলগিরি তাহার সংরক্ষিত। প্রাকৃতিক নিসর্গের মধ্যে শান্তি ও প্রশান্তির এক আদর্শ ঠিকানা।দেখার জায়গা: এরাভিকুলাম ন্যাশনাল পার্ক, টপ স্টেশন, চা-মিউজিয়াম, ম্যাট্টুপেট্টি ড্যাম। কীভাবে যাবেন : কোচি এয়ারপোর্ট থেকে কাছে ,অনেক বাস,গাড়িও পাওয়া যায়।কোচি থেকে ৪ ঘণ্টার ড্রাইভ।কোথায় থাকবেন: টি কান্ট্রি,স্পাইস জাঙ্গল রিসোর্ট। বিশেষ টিপস: এখানকার ফ্রেশ টি কিনতে ভুলবেন না।

ছবি-ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া

৫.কুমিলি –ব্রিটিশ কলোনিয়াল ঐতিহ্যশালী গ্রাম।তারও আগে থেক্কামকুর ও পুন্জার রাজাদের অধীনে ছিল ছবির মতন সুন্দর এই গ্রামে,এখানকার যোধা কালচারাল ভিলেজ,মশলা সরণি বা স্পাইস রুট,স্পাইস হার্বাল গার্ডেন ঘুরে ফিরে নৈসর্গিক প্রকৃতি দেখতে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যেতে হয়। কীভাবে যাবেন –মুন্নার থেকে বাসে বা গাড়িতে ৩ ঘন্টা ,মাদুরাই এয়ারপোর্ট থেকে বাসে ও গাড়িতে ৩ ঘন্টার পথ। কোথায় থাকবেন– পেরিয়ার হেরিটেজ হোম স্টে,কফি ইন।

৬.পেরিয়ার ওয়াল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি-ভারতের অন্যতম সুন্দর হাতি আর বাঘের অভয়ারণ্য।অবিরাম শৈল শিখর এবং মশলার সুগন্ধে ভরা বাগিচায় ঘেরা থেক্কাডী স্বপ্নময় পরিবেশ গড়ে তোলে।থেক্কাডীর পেরিয়ার ফরেস্টটি ভারতে সুন্দরতম যে কয়টি বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম। এই জেলা ঘিরে ছড়িয়ে থাকা অপূর্বচিত্রের মত বাগিচা এবং পাহাড়ী শহরগুলি  ট্রেকিং এবং পাহাড়ি পথে চলার জন্য পাখির নীড়ের মত আকর্ষণ করে।এশিয়ান হাতি, বাংলার বাঘ, ভারতীয় বাইসন, সম্বর হরিন, ভারতীয় বুনো কুকুর, লেপারড, বার্কিং ডিয়ার এবং মসৃন-লোম যুক্ত ভোঁদড়। পেরিয়ার লেক-এ ভ্রমণ করার সময় এগুলির দেখা মেলে। নীলগিরি থার উঁচু পাহাড়ী এলাকায় থাকে আর অবলুপ্ত প্রায় লায়ন-টেইল্ড ম্যাকাওকে চিরহরিৎ বনভূমিতে দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে নৌকো নোঙর করে সেখানে এক গাছ থেকে আরেক গাছে নীলগিরি লেঙ্গুড় এবং বনেট ম্যাকাও পাখিদের লাফালাফি দেখতে পাওয়া যায়

যোগাযোগ – ফিল্ড ডিরেক্টর (প্রজেক্ট টাইগার) অফিস অব দয় ফিল্ড ডিরেক্টর এস এইচ মাউন্ট, কোট্টয়ম কেরল, ইন্ডিয়া -686 006 ফোন: +91 481 2311740 ইমেল: fd@periyartigerreserve.org ওয়েবসাইট: www.periyartigerreserve.org ডেপুটি ডিরেক্টর (প্রজেক্ট টাইগার) পেরিয়ার টিগার রিসার্ভেই, থেক্কাডী কেরল, ইন্ডিয়া -685 536 ফোন: +91 4869 222027 ইমেল: dd@periyartigerreserve.org

৭. আলেপ্পি (কেরল): আলেপ্পি কেরলের ব্যাকওয়াটার সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। প্রাচীন কালের “ভেনিস অব দ্য ইস্ট” নামে খ্যাত, এটি ঐতিহ্যবাহী হাউসবোট এবং ক্যানাল-ভিত্তিক জীবনধারার জন্য বিখ্যাত। এখানকার জলজ উৎসব, যেমন নেহরু ট্রফ বোট রেস, কেরলের লোকজ সংস্কৃতির পরিচায়ক।দেখার জায়গা: ব্যাকওয়াটার হাউসবোট ট্রিপ, আলেপ্পি বিচ, মুল্লাকাল রাজরাজেশ্বরী মন্দির। কোথায় থাকবেন: হাউসবোটেই রাত কাটাতে পারেন, নয়তো রহিম রেসিডেন্সি। কীভাবে যাবেন: কোচি বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে ১.৫ ঘণ্টা।বিশেষ টিপস: পূজোর সময়ে হাউসবোট অগ্রিম বুক করে রাখুন।

৮. কোচি (কেরল): কোচি বহু শতাব্দী ধরে পর্তুগিজ, ডাচ, আরব ও ব্রিটিশদের বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। এখানকার ফোর্ট কোচি অঞ্চল ঐতিহাসিক স্থাপত্য, সাইনাগগ, চার্চ ও চাইনিজ ফিশিং নেট দিয়ে সমৃদ্ধ। এটি ভারতের প্রথম ইউরোপীয় উপনিবেশিত শহর হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।দেখার জায়গা: ফোর্ট কোচি, ম্যাটঞ্চেরি প্যালেস, জিউইশ সাইনাগগ, চাইনিজ ফিশিং নেট। কোথায় থাকবেন: ওল্ড হারবার হোটেল,তাজ মালাবার রিসোর্ট। কীভাবে যাবেন: কোচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বা ট্রেনে।বিশেষ টিপস: ফোর্ট কোচির কফিশপগুলো দারুণ, একটায় বসে সময় কাটাতে ভুলবেন না।

ছবি-ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া

৯. হাম্পি (কর্ণাটক): এক সময়ের শক্তিশালী বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানী হাম্পি আজ ধ্বংসস্তূপ হলেও তার মধ্যে জ্বলজ্বল করে প্রাচীন সৌন্দর্য। গ্রানাইট পাথরে খোদাই করা মন্দির ও বাজার, বিশাল রথ ও স্তম্ভ—সবই সেই গৌরবগাথা বহন করে। এটি হিন্দু স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন ও  ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইট।দেখার জায়গা: ভিট্থল মন্দির, হাতি স্থল, হেমকুটা পাহাড়, বিজয় মন্দির। কোথায় থাকবেন: ইভল্ভ ব্যাক হাম্পি, হেরিটেজ রিসোর্ট। কীভাবে যাবেন: হোসপেট থেকে অটো বা গাড়িতে ৩০ মিনিট।বিশেষ টিপস: গাইড নিয়ে ঘুরলে ইতিহাস আরও স্পষ্টভাবে বুঝবেন।

১০. মাইসোর (কর্ণাটক): মাইসোর রাজাদের শহর—এটি কর্ণাটকের সাংস্কৃতিক রাজধানী। এখানে দশেরা উৎসব রাজকীয়ভাবে পালিত হয়। মাইসোর প্যালেস, যা বৈদ্যুতিক আলোয় আলোকিত হয় উৎসবকালে, দক্ষিণ ভারতের অন্যতম সুন্দর রাজপ্রাসাদ। চামুণ্ডী পাহাড় ও মাইসোর সিল্ক এর ঐতিহ্য বহন করে।দেখার জায়গা: মাইসোর প্যালেস, চামুণ্ডী হিল, বৃন্দাবন গার্ডেন। কোথায় থাকবেন: হোটেল সন্দেশ,দ্য প্রিন্স।  কীভাবে যাবেন: ব্যাঙ্গালোর থেকে ট্রেন বা গাড়িতে ৩ ঘণ্টা।বিশেষ টিপস: মাইসোর সিল্ক ও স্যান্ডালউডের জিনিস কিনতে ভুলবেন না।

১১. উটি (তামিলনাড়ু): ব্রিটিশদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই পাহাড়ি শহরকে বলা হয় “কুইন অব হিল স্টেশনস।“ নীলগিরি রেঞ্জের কোলে অবস্থিত উটি তার শীতল জলবায়ু, পাহাড়ি চা-বাগান, ও টয় ট্রেনের জন্য জনপ্রিয়। এটি কংর জাতির প্রাচীন বাসভূমিও বটে, যাদের নিজস্ব লোকজ সংস্কৃতি আজও জীবন্ত।দেখার জায়গা: বোটানিক্যাল গার্ডেন, উটি লেক, ডডাবেটা পিক, টয় ট্রেন রাইড। কোথায় থাকবেন: স্টারলিং উটি ফার্ন হিল, অ্যাকর্ড হাইল্যান্ড। কীভাবে যাবেন: কোয়েম্বাটোর থেকে গাড়িতে ৩ ঘণ্টা।বিশেষ টিপস: টয় ট্রেনের টিকিট অগ্রিম কেটে রাখুন।

ছবি- আই স্টক

১২. আরাকু ভ্যালি (আন্ধ্রপ্রদেশ): বিশাখাপত্তনমের কাছের এই ছোট পাহাড়ি উপত্যকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আদিবাসী সংস্কৃতির নিদর্শন। বোর্রা কেভসের প্রাকৃতিক চুনাপাথরের গুহা দর্শনীয়। এখানকার কফি ও চকলেট উৎপাদন স্থানীয় গ্রামীণ অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। বৃষ্টিভেজা মেঘলা পরিবেশ আর পাহাড়ি বাতাস মন ছুঁয়ে যায়।দেখার জায়গা: বোর্রা কেভস, কফি মিউজিয়াম, পাতালগঙ্গা জলপ্রপাত। কোথায় থাকবেন: এপিডিসি হারিটা রিসোর্ট,হিল রিসোর্ট আরাকু। কীভাবে যাবেন: বিশাখাপত্তনম থেকে ট্রেনে বা গাড়িতে ৩-৪ ঘণ্টা।বিশেষ টিপস: কফি ও চকলেট এখানকার স্পেশালটি।

১৩) কুমারাক্কম-গড’স ওন কান্ট্রি কেরলের কোট্টায়মের ১৩ কিলোমিটার দূরে বিখ্যাত ভেম্বানান্দ লেকের কাছে নিরালা নির্জন কুমারাকম।হাউসবোট,বিশাল শান্ত লেক আর বার্ড স্যাংচুয়ারির জন্য প্রসিদ্ধ।১৪ একর ঘেরা এই বার্ড স্যাংচুয়ারিতে প্রচুর পরিযায়ী পাখির আস্তানা।হেরোন,এগ্রেট,ওয়াটারফাউলস,সাইবেরিয়ান স্টর্ক আরও অনেক প্রজাতি।

কুমারাক্কমের  অপার্থিব নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিন ‘জীবদ্দশায় একবার বেড়িয়ে আসতেই হবে’ আখ্যা দিয়েছে যখন তখন এই অপরূপ প্রকৃতিকে প্রত্যক্ষ্য না করা বোধহয় অপরাধের পর্যায় পড়ে।কুমারাক্কম  ট্যুরিজমের বিশেষত্ব হল এর হাউসবোট।এই অপরূপ হাউসবোটগুলি ঐতিহ্যশালী ‘কেটু  ভালাম’ স্থাপত্যশৈলীতে তৈরী।নারকেল গাছ ঘেরা অপার্থিব সবুজ প্রকৃতির মধ্যে নীল ব্যাকওয়াটার জলে হাউসবোটে ঘুরে পরিযায়ী ও দেশি পাখিদের অপরূপ সৌন্দর্যে জীবনের ক্লান্তি,হতাশা,স্ট্রেস ভুলে স্বর্গীয় শান্তি ও আনন্দ উপভোগ করতে চলে আসুন এই কুমারাক্কমে। 

বিশেষ আকর্ষণ -হাউসবোট,বার্ড স্যাংচুয়ারি,ভেমবানন্দ লেক,ব্যাকওয়াটার,বে আইল্যান্ড ড্রিফ্টউড মিউজিয়াম,পাথিরামানাল আইল্যান্ড,জটায়ু রক,সেন্ট মেরিস চার্চ। কোথায় থাকবেন-কুমারাকম লেক রিসোর্ট,ব্যাকওয়াটার ব্রুক,ইল্লিক্কলাম লেকসাইড কটেজ,কেটিডিসি কুমারাকম গেটওয়ে,ব্যাকওয়াটার হেরিটেজ হোমস্টে,বিস্ময়,কোডিয়ান্তরা হেরিটেজ হোম এছাড়া আরও অনেক হোটেল আর হোম স্টে। কীভাবে যাবেন– প্লেনে-কোচিন এয়ারপোর্ট থেকে ৮৫ কিলোমিটার,ত্রিভান্দ্রাম এয়ারপোর্ট থেকে ২৫০ কিলোমিটার,ট্রেনে-কোট্টায়াম থেকে ১৬ কিলোমিটার এছাড়া কোট্টায়াম থেকে বাস আর ট্যাক্সির সুবন্দোবস্ত আছে ।

ছবি- আই স্টক

১৪.কুর্গ: দক্ষিণ ভারতের স্কটল্যান্ড- কর্ণাটকের কোদাগু জেলায় অবস্থিত কুর্গ, যার প্রকৃত নাম কোডাগু, “দক্ষিণ ভারতের স্কটল্যান্ড” নামে পরিচিত। চা-কফির বাগান, সবুজ পাহাড়ি বনাঞ্চল, ঝরনা ও মেঘে ঢাকা ভোর,সব মিলিয়ে এটি প্রকৃতি প্রেমীদের স্বর্গ। কাবেরী নদীর উৎপত্তি এই অঞ্চলে। এখানকার স্থানীয় কোডাভা সংস্কৃতি, ঐতিহ্যবাহী খাবার ও অতিথিপরায়ণতা সত্যিই মন ছুঁয়ে যায়।

কীভাবে যাবেন:ট্রেনে: কাছাকাছি রেলস্টেশন হল মাইসোর (প্রায় ১১৫ কিমি)। কলকাতা থেকে সরাসরি মাইসোর এক্সপ্রেসে যাওয়া যায়।ফ্লাইটে: নিকটবর্তী বিমানবন্দর বেঙ্গালুরু বা মেঙ্গালুরু (প্রায় ২৬০ কিমি)। সেখান থেকে গাড়িতে কুর্গ।সড়কপথে: বেঙ্গালুরু/মাইসোর থেকে গাড়িতে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টার পথ।

কোথায় থাকবেন:রোমাঞ্চপ্রেমীদের জন্য: জঙ্গল লজেস,কুর্গ ওয়াইল্ডারনেস রিসোর্ট,পরিবার নিয়ে: ক্লাব মাহিন্দ্রা মাদিকেরি,হেরিটেজ রিসোর্ট কুর্গ।বাজেট পর্যটক: জোস্টেল কুর্গ,বেলা হোমস্টে।

ভালো খাবার : কুর্গ কুইজিন (মাদিকেরি), কোডাভা স্টাইলের পর্ক কারি,ব্যাম্বু শুট ডিশ ট্রাই করুন।রেইনট্রি রেস্টুরেন্ট -কফি ও কুর্গি স্পেশাল থালি।বিনস ‘ন ব্রিউস – স্থানীয় কফি ও কেকের দারুণ জায়গা।

ছবি- আনস্প্ল্যাশ ডট কম

১৫.কোদাইকানাল: পাহাড়ঘেরা প্রেমের শহর-তামিলনাড়ুর পালানি পাহাড়ে অবস্থিত কোদাইকানাল এক সময় ব্রিটিশদের গ্রীষ্মকালীন আবাস ছিল। এখানকার হ্রদ, ঝরনা, ঘন বন ও পাইন গাছের সারি এক অদ্ভুত মায়া সৃষ্টি করে। কোদাই লেক, ব্রায়ান্ট পার্ক, সাইলেন্ট ভ্যালি ও পিলার রক,এ সবই ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় গন্তব্য।

কী ভাবে যাবেন:ট্রেনে: কাছাকাছি রেলস্টেশন কোদাই রোড (৮০ কিমি)। মাদুরাই, তিরুচিরাপল্লি থেকে সহজে সংযোগ।ফ্লাইটে: নিকটবর্তী বিমানবন্দর মাদুরাই (১৩৫ কিমি)।

গাড়িতে: মাদুরাই/কোয়েম্বাটোর/চেন্নাই থেকে বাস বা ক্যাব সহজলভ্য।

কোথায় থাকবেন: প্রাকৃতিক দৃশ্য চাওয়া পর্যটকরা:দ্য কার্লটন,স্টার্লিং কোদাই লেক।

বাজেটের মধ্যে : ভিলা রিট্রিট,জোস্টেল কোদাইকানাল।রোম্যান্টিক গেটওয়ে: কোদাই রিসোর্ট হোটেল,লিলি’স ভ্যালি রিসোর্ট।

ভালো খাবারের স্পট: ক্লাউড স্ট্রিট – উডফায়ার্ড পিজ্জা, পাস্তা ও কফি,অ্যাস্টোরিয়া ভেজ,তাওয়া ভেজ।

অতিরিক্ত টিপস:কফি ও চকলেট: দুই জায়গাতেই হ্যান্ডমেইড চকলেট ও অর্গানিক কফি ট্রাই করতে ভুলবেন না।

স্থানীয় গাইড: কুর্গে স্থানীয় ট্রেক বা স্পাইস গার্ডেন ট্যুরে গাইড নেওয়া যেতে পারে।

শেষকথা

পূজোর ছুটি মানেই শুধু ঢাক-কাঁসর আর অঞ্জলির ভিড় নয়—সে হতে পারে আত্মশুদ্ধির, প্রকৃতির সাথে একাত্ম হওয়ার বা সংস্কৃতির নান্দনিক রূপ আবিষ্কারের সময়। দক্ষিণ ভারতের এই ১৫টি গন্তব্য আপনাকে দিতে পারে ঠিক সেই অভিজ্ঞতা।

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *