রিসার্চে প্রমাণিত পৃথিবীতে বিশাল সংখ্যক মানুষ অবহিতই নন যে তারা ইতিমধ্যে টাইপ ১ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিনা কারণ অপরিসীম উদাসীনতা।এদিকে হাই ব্লাড সুগার নিঃশব্দে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গে আঘাত হানতে শুরু করে দিয়েছে।অনেক পরে যখন জানা গেল দেখা যাচ্ছে অনেক দেরি হয়ে গেছে,তাই এই ২০ টি লক্ষণ ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে কিনা জেনে নিন-
১)ক্লান্তি ,ফ্যাটিগ-অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্তি,কাজ করতে অনীহা।অপরিসীম ক্লান্তি হাই ব্লাড প্রেসারের লক্ষণ।রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি থাকলে রক্তসঞ্চালনের গতি কমে যায়,অর্গান সেলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ঘাটতি হয় তাই ক্লান্তি আসে।
২) ঝাপসা দেখা,ব্লার্ড ভিশন- কিছুক্ষনের জন্য দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া।হাই ব্লাড সুগার আই লেন্স কে ইনফ্লেট করে।সময়মত সনাক্ত ও চিকিৎসা না করলে কিন্তু চোখের ভয়ঙ্কর সমস্যা এমনকি অন্ধত্ব হতে পারে। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির দু ধরণের।ম্যাকুলার এডেমা আর প্রলিফারেটিভ রেটিনোপ্যাথি।
৩)মাথা ব্যাথা,ধরা –হাই ব্লাড সুগারের খুব পরিচিত পূর্ব লক্ষণ।কিন্তু এটা মাইগ্রেন নয়।এটা ঠিক হাই ব্লাড সুগারের জন্য হয় না,সুগার লেভেলের তারতম্যের জন্য হয়।সুগার বাড়লে হর্মোনের এপ্নিনেফ্রিন ও নোরেপিনেফ্রিন ফ্লাকচুয়েশনের কারণে মাথা ব্যাথা হয়।
৪) ঘন ঘন টয়লেট -হাই ব্লাড সুগারের ক্ষেত্রে শরীরে রক্ত সুগারকে প্রসেস করতে পারেনা তাই সে কিডনিতে স্থানান্তরিত হয় এবং কিডনিকে বেশি সেই পরিশ্রুত রক্ত ও এক্সেস সুগারকে অ্যাবসর্ভ করতে বেশি পরিশ্রমে এর স্বাভাবিক গতিতে কাজ করতে পারে না।একে পলিইউরিয়া বলা হয়।
৫)তৃষ্ণা,বক্ষ জুড়ে-পোশাকি নাম পলিডিপসিয়া।অন্যতম লক্ষণ যে ব্লাড সুগার লেভেল বেড়ে আছে।এই পলিডিপসিয়ার কারণে পলিইউরিয়া অর্থাৎ বেশি তৃষ্ণায় বেশি জল খেয়ে বেশিবার টয়লেটে।এতে রক্তে বেশি জল আর কম সোডিয়ামের কারণে হাইপোন্যাট্রেমিয়া হয়।
৬) খিদে বেড়ে যাওয়া-এমনিতে মনে হবে খুব ভালো লক্ষণ কিন্তু এটা হাই সুগারের একটা প্রধান লক্ষণ।যতই খাবার খাওয়া হোক একটু পরেই আবার খিদে পাওয়া।খাবার অনিয়ম,স্ট্রেস,ডিপ্রেশনের কারণে এর বৃদ্ধি।ব্লাড সুগার লেভেল হাই থাকার কারণে সেই সুগার শরীরে যেতে পারছেনা আর তাই সেল তাকে এনার্জিতে কনভার্ট করতে পারছে না।
৭) মুখের ভেতর শুকনো ভাব,ড্ৰাই মাউথ-মুখে স্যালাইভার অভাবে হয়।শুকনো ঠোঁট,জিভ শুকিয়ে যাওয়াও হাই ব্লাড সুগারের লক্ষণ।নিয়মিত সঠিক এক্সারসাইজ করলে এ থেকে নিরাময় হতে পারে।
৮) নিঃস্বাসে কস্ট- খুব উচ্চ শর্করার ক্ষেত্রে এটা একটি লক্ষণ যা থেকে বোঝা যায় বেশ কিছুদিন ধরেই ব্লাড সুগারের মাত্রা বেশি।দীর্ঘদিন অবহেলা করলে ডায়াবেটিক কোমায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৯) মনোসংযোগে ব্যাঘাত-মেমোরি লস,কনসেন্ট্রেশন আর কনফিউশন প্রব্লেম অনেক রোগের কারণ যেমন অতিরিক্ত মদ্যপান,ডিপ্রেশন,স্ট্রেস।মস্তিকের স্মৃতি,চিন্তার স্বচ্ছতা, মনোসংযোগের ব্যাঘাত ঘটে হাই ব্লাড সুগারের কারণে।
১০)তলপেটে ব্যাথা,পেটের সমস্যা-জি আই ট্র্যাক্টে প্রভাব ফেলে,পাকস্থলীর কাজের গতি কমে যায়।হাই ব্লাড সুগার শরীরের হজমতন্ত্রের কাজের ক্ষতি করে।
১১)কাটা সারতে সময়- শরীরে কোনো কাটা ছেঁড়া হলে সেটা ঠিক হতে নর্মাল টাইমের চেয়ে বেশি সময়ে লাগা আর একটি লক্ষণ।
১২) ঘন ঘন অসুখ বিসুখ– একটুতেই কোনো কিছুতে আক্রান্ত হয়ে যাওয়া উচ্চ শর্করার একটি লক্ষণ।বডির ইমিউনিটি কমে গেলে এমন হয়।
১৩)ড্ৰাই স্কিন- যদি লক্ষ্য করা যায় যে ত্বক শুকিয়ে যাচ্ছে বা একটু চুলকানি ভাব হচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে এটা উচ্চ শক্রর কারণে হতে পারে।
১৪)অসাঢ়,ব্যাথা ভাব– মাঝে মাঝে হাতে পায়ে ঝিঁ ঝিঁ,ব্যাথা,অসাঢ় ভাব একটি পূর্বলক্ষণ।
১৫)ইম্পোটেন্স ,ইনফার্টিলিটি -পুরুষদের ক্ষেত্রে একটা বড় কারণ হাই ব্লাড প্রেসারের সিম্পটম।
১৬)ফ্রুটি স্মেলিং ব্রেথ -পরিভাষায় ডায়াবেটিক কেটোঅ্যাসিডোসিস।মুখে যদি এমন গন্ধ থাকে,পেট ব্যাথা,জ্বর এমন সামান্য অসুখের কারণ যদি সনাক্ত না করা যায় সেটা প্রাণসংশয়ী হতে পারে।
১৭)হাই ফিভার-জ্বর হলে যদি সেটা খুব বেড়ে যায় আর নামতে অসুবিধে হয় সেটা একটা লক্ষণ কারণ ইমিউন সিস্টেম দুর্বলতার কারণ।
১৮) স্ট্রোক-ডায়াবেটিক আর হাই ব্লাড প্রেসারের রোগীদের সাধারণ চেয়ে দু থেকে চার গুন বেশি সম্ভাবনা থাকে স্ট্রোক আক্রান্ত হওয়ার।ব্লাড সুগার ব্লাড ভেসেলসে ব্লাড ক্লট করে ভেইন আর আর্টারি ব্লক করে দেয়।
১৯)হার্টের অসুখ -ওপরের আর নানা লক্ষণে বোঝা যায় যে বিপদ আসন্ন।বুকে মৃদু ব্যাথা,অস্বাচ্ছন্দ্য,অত্যধিক ক্লান্তি হলেই দেরি না করে ব্লাড সুগার লেভেল টেস্ট করিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।
২০)হাই ব্লাড প্রেসার -হ্যাঁ হাই ব্লাড প্রেসার হাই ব্লাড সুগার লেভেলের কারণ।
শেয়ার করুন :