এই প্যানডেমিকে গত ৯ মাস ধরে আমাদের চারপাশের হতাশজনক দুঃসংবাদ,প্রিয়জন,পরিচিতদের আক্রান্ত হওয়ার চলে যাওয়ার আর নিজের পরিবারের সুরক্ষা,সতর্কতার স্ট্রেস,হতাশা আর দুশ্চিন্তায় আর ডিপ্রেশনে সবাই বিপর্যস্ত,বিদ্ধস্ত।কিন্তু এর মধ্যে সজীব,সতেজ থাকতে দরকার স্ট্রেস ফ্রি সজীব সতেজ মন।দেশে বিদেশে রিসার্চে প্রমাণিত ফল,শাকসব্জি,হোল গ্রেন, লিন প্রোটিন সমৃদ্ধ মাছ,মাংস,ডিমের ব্যালান্স ডায়েট ডিপ্রেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের শরীর মন ভাল রাখে।
MIT journalism fellow ,ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ২০ বছরের অভিজ্ঞ এলিজাবেথ অ্যান বার্নস্টাইন জানিয়েছেন নতুন রিসার্চে প্রমান পাওয়া যাচ্ছে সঠিক ডায়েট আমাদের রাগ,দুশ্চিন্তা,ডিপ্রেশন এবং অনিদ্রা রুখতে ভাল কাজ করে। ডিপ্রেশনের অসুখে যদিও অ্যান্টিডিপ্রেশন,টক থেরাপি,গবেষকরা জানাচ্ছেন সঠিক ডায়েট আর ফুড হ্যাবিটেও এই রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কাজ দিচ্ছে।
বস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটালের নিউট্রিশনাল সাইকায়াট্রিক ক্লিনিকের ডিরেক্টর উমা নাইডু তার নতুন বই ‘দিস ইজ ইওর ব্রেন অফ ফুড’ এ বিষয়ে রেখাপাত করেছেন প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জানিয়েছেন :
ডায়েট আর মুডের কোনও সম্পর্ক ?
-নিশ্চয়ই এবং প্রমাণিত।আমাদের পেটের সঙ্গে ব্রেনের গভীর যোগাযোগ আছে ভেগাস নার্ভের মাধ্যমে যেটা দুই অর্গানের মধ্যে কমিউনিকেশনের কাজ করে কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল একেক জনের শরীরের ব্যাকটেরিয়া ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রে আলাদা রেস্পন্ড করতে পারে যেটা একজন নিউট্রিশনাল সাইকায়াট্রিস্ট সঠিকভাবে আইডেন্টিফাই করতে পারেন। এছাড়া লাইফস্টাইল মেডিসিন ফিজিসিয়ান ও হেল্প করতে পারেন।
এই সময় আমাদের খাওয়া দাওয়া স্ট্রেস কমা বাড়ায় এত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কেন ?
-এই প্যানডেমিকে ক্রনিক স্ট্রেসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আমরা যে কতজন এর মধ্যে সে অর্থে অ্যাসিম্পটোম্যাটিক ক্রনিক স্ট্রেসে আক্রান্ত সেটা টেস্ট না করে বোঝা অসম্ভব।এই ক্রনিক স্ট্রেসে গাট মাইক্রোবায়োম ইনফ্লেমেশন হয় এবং ব্রেনে ইনফ্লেমেশন হয় আর ব্যাড ব্যাকটেরিয়া গুড ব্যাকটেরিয়াকে টেকওভার করে তাই ব্রেন এবং পেটের যে সুস্থ্য কম্বিনেশনকে ব্রেক করে।
সঠিক ডায়েট এই ইমব্যালেন্সকে রোধ করে এবং রিসার্চে দেখা গেছে ডায়েট চেঞ্জ করলে স্ট্রেস লেভেল চেঞ্জ হয়।ঠিক ও ভুল খাদ্যাভ্যাস আমাদের গাট ব্যাকটেরিয়াকে পজিটিভ অথবা নেগেটিভ পথে চালিত করে।
কি করে সহজে সঠিক স্ট্রেস ফ্রি ডায়েট মনে রাখা যাবে?
-এক্ষেত্রে একটা সহজ BRAIN FOODS মনে রাখলে কাজটা সহজ হবে।B অর্থাৎ বেরিস যা ফাইবার আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসের সমাহার,যেমন রাস্পবেরিস,স্ট্রবেরি,ফলসা,আমলা।R রেনবো অফ কালার্স অফ ফল আর শাকসব্জি যাতে প্রচুর ফাইবার আর নিউট্রিয়েন্টস থাকে।A হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। যেমন শাক,ব্রকোলি, টোম্যাটো,বাঁধাকপি,গাজর,কমলালেবু, কুমড়ো, আঙুর,গম,ওট্স,বার্লি। I ইনক্লুড লিন প্রোটিন।যেমন রুই,কাতলা,পমফ্রেট,চারা পোনা, ইলিশ, শিঙি,মাগুর,মুরগি।N হল নাটস।যেমন বাদাম,আমন্ড,আখরোট,পেস্তা।
ব্রেন হল এবার ফুড ।F মানে ফাইবার ,প্রথম O হেলদি অয়েল ,অলিভ,রাইস ব্র্যান, বাদাম, সানফ্লাওয়ার,পরের O ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন তৈলাক্ত মাছ,D হল ডেয়ারি আর S মানে স্পাইসেস কারণ কিছু মশলা যেমন হলুদ,দারচিনি,গোলমরিচ,কেশর,ব্রেন টনিকের কাজ করে।
এর সঙ্গে এটাও জানা দরকার যে এই সময় কি খাবার খাওয়া উচিত নয়। প্রসেসড ফুড,আর্টিফিসিয়াল সুইটনার,রেডি টু ইট ফ্রায়েড ফুড আমাদের অজান্তে ডিপ্রেসড করে তোলে।
শেয়ার করুন :