আজকের পৃথিবীতে সমস্ত মিডিয়া আর সামাজিক মাধ্যম অনবরত নিয়ম করে রোজ আমাদের সৌন্দর্যের আর স্মার্টনেসের সংজ্ঞা ঠিক করে দিচ্ছে,তার প্রকাশ সামাজিক মাধ্যমে, বিজ্ঞাপনে, সেলিব্রিটি ফ্যাশন, লাইফস্টাইলে আর আমাদের চারপাশের তথাকথিত আত্মীয় বন্ধুদের কটাক্ষ যার অভিঘাতে বিপর্যস্ত হচ্ছে আত্মবিশ্বাস,বেড়ে উঠছে হীনমন্যতা যাকে সজোরে সপাটে চ্যালেঞ্জ করার সময় এসেছে।নিজেকে ভালোবেসে ,নিজের চেহারাকে,বুদ্ধিমত্তা এবং সে অর্থে সাধারণত্বর জন্য সবার সামনে ছোট না হয়ে সামাজিক চাপকে সজোরে চ্যালেঞ্জ করা।
বডি পজিটিভ- এটি দুনিয়াজুড়ে নিজের চেহারা ও বুদ্ধি সম্পর্কে আস্তে আস্তে একটি আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে।যেখানে নিজস্ব আত্মবিশ্বাস,শরীর নিয়ে লজ্জা কুন্ঠাহীন নির্ভীক থাকার দীপ্তি।সমাজের আর সমাজমাধ্যমের ঠিক করে দেওয়া আওয়ার গ্লাস ফিগার,দুধে আলতা ত্বক,উচ্ছল স্মার্টনেসের সংজ্ঞাকে সজোরে চ্যালেঞ্জ করে নিজে যেমন ঠিক তেমনভাবে সমাজকে সেভাবেই গ্রহণ করতে হবে এই আত্মপ্রত্যয়।এবং শুধু তাই নয় ,আশেপাশে বাকিদেরও এইভাবে ভাবতে বাধ্য করা যাতে এটা একটা আন্দোলনের চেহারা নেয়।যে কোনো অনুষ্ঠান,পার্টিতে ‘এ মা কি রোগা হয়ে গেছিস,একি এতো মোটা হয়ে গেছিস’ টিপ্পনিকারীদের উত্তরে কুঁকড়ে না গিয়ে চ্যালেঞ্জ করা যে একদম ঠিক এবং খুব ভালো আছি।
মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব
জন্মাবধি এবং বড় হতে হতে আর তার পরেও নিজের চেহারা,শিক্ষা,স্মার্টনেস এবং সাধারণত্ব নিয়ে ক্রমাগত অপমান শুনে মনের গভীরে একটা হীনমন্যতা যা থেকে স্থায়ী বিষাদবোধ তৈরী হতে পারে এটা সেই মেয়েটির চারপাশে এমনকি সবচেয়ে দুঃখজনক ওয়ান সময় তার বাবা মায়েরাও বুঝতে পারে না যেটা তার যে কোনো কাজ ও নিজের ব্যক্তিত্বের জন্য দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।আর ছোটবেলায় তার বোঝারও ক্ষমতা নেই যে এর বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়,কেউ কেউ হয়তো পারে কি বেশিরভাগের মনের ভেতর একটা হেরে যাওয়া ভাব তৈরী হয় যার থেকে বেরোনো কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয় ।এই দিন যাতে সমূলে বদলানো যায় আজ সেই সদর্থক মনোভাব একটা আন্দোলন তৈরী করছে।
বিজয়ী আত্মবিশ্বাস
রোজ সকালে উঠে মনের গভীর অন্তস্থল থেকে আত্মপ্রত্যয় যে আমি কারোর থেকে কম যাই না,আমি যেমন আমি তেমন আর এই পৃথিবীকে তেমনভাবেই আমাকে গ্রহণ করতে হবে।সরমালা ঠাকুর বলেছিলেন ওনার বড় মেয়ে ছোটবেলায় মোটা আর তেমন করে সাজগোজ করতনা বলে উনি মাঝে মাঝেই সেই নিয়ে কথা বলার মধ্যে একদিন সেই কন্যা ঘুরে তার মাকে বলেছিল যে যদি তার নিজস্বতাকে তার মাই যদি গ্রহণ না করতে পারে তাহলে এই সমাজ কি করে করবে ? অত্যন্ত লজ্জিত হয়ে উনি মেয়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন।এই বিষয়কে চ্যালেঞ্জ করা,নিজেকে সমাজের তথাকথিত সৌন্দর্য্যের,বুদ্ধিমত্তার মাপকাঠিকে না তুলনা করে নিজের আত্মপ্রত্যয় আর কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস।
বডি –মাইন্ড পজিটিভিটি মুভমেন্ট আর তরুণ প্রজন্ম
এই দুটি দিক আছে। আগেকার সময়ের তুলনায় একদিকে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নিজের ফ্যাশন,স্টাইল,ফিগার নিয়ে ছবির বন্যায় নিজেকে জাহির করা যে সে স্বপ্নসুন্দরী আর তার বিপ্রতীপে আনন্দের কথা যে আজকের তরুণ প্রজন্মের অনেকেই সৌন্দর্য্যের এই প্রচলিত ধ্যানধারণাকে ছুঁড়ে ফেলে নিজে যেমন ঠিক তেমন আত্মপ্রত্যয়ের উচ্ছল প্রকাশ,যেখানে প্লাস সাইজের বিজ্ঞাপন,ফর্সা হওয়ার ক্রিমকে সপাটে প্রত্যাখ্যান করে দীপ্তিময়ী।গবেষণায় স্বীকৃত এতে মানসিক দৃঢ়তা,আত্মবিশ্বাস বেড়ে যে কোনো কাজে সফলতার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে,বন্ধু বান্ধব,আত্মীয় পরিজন এই আত্মবিশ্বাস দেখে কটূক্তি করতে বিরত থাকে এবং আজকের প্রজন্মের অনেকেই একে মান্যতা দিয়ে সদর্থক ভাবে গ্রহণ করছে।
এর পর কোনো অনুষ্ঠানে,পার্টিতে ,কাজের জায়গায় নিজের চেহারা নিয়ে কেউ কটাক্ষ করলে হীনমন্যতায় কুঁকড়ে না গিয়ে সজোরে,সপাটে এবং প্রবল আত্মবিশ্বাসী হয়ে বলুন আপনি আপনার এই নিজস্বতা নিয়ে খুব খুব ভালো আছেন আর এতে আপনার কিচ্ছু এসে যায় না।
শেয়ার করুন :