১) মন্দারমণি
লালমোহনবাবুর ভাষায় ‘বিশাল সমুদ্রের নৈকট্য’মন্দারমনির এই সময়ের যে কোনও হোটেলকে আপনিও ‘সিক্সথ ষ্টার’ বলবেন।এত নির্জন প্রকৃতি খুব বেশিদিন পাওয়া যাবে না।একটু একটু করে সবে টুরিস্টদের আসা শুরু হয়েছে।ভিড় না থাকায় এখন যেতে ভালো লাগবে।বিচ প্রায় ফাঁকা।অধিকাংশ হোটেলে ঘর পাওয়া যাচ্ছে।এই নিরালা নির্জন সি সাইড রিসোর্ট এমনিতেই বেশ পপুলার আর এখন আরো মোহময়ী।নির্জন নিরালা বিচে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ,লাল কাঁকড়া, শান্ত ,এই দূরে এই কাছে সমুদ্র,সঙ্গে সুস্বাদু ভোজন এই সময়ে আপনার মন দারুণ তাজা করে দেবে।
কীভাবে যাবেন : এই সময়ে নিজের গাড়ি করে যাওয়ায় ভাল।
কোথায় থাকবেন : মেক মাই ট্রিপ,গো আইবিবো. OYO তে চেক করে নিতে পারেন আর হোটেল ক্যান্ডেলউড পার্ক (09635428140 ), সোনার বাংলা(09800340270)।
কাছে পিঠে-উদয়পুর বন্ধ থাকলেও ঘুরে আসতে পারেন দিঘা,মোহনা,শংকরপুর।
২) বিষ্ণুপুর
সিধুজ্যাঠা বলছেন :বিষ্ণুপুর রাঢ় বাংলা,গঙ্গার (গঙ্গারীডই) তীরবর্তী রাঢ় অঞ্চলের অন্তর্গত।গুপ্ত সাম্রাজ্যের (২৪০-৫৯০) সময় থেকে বিষ্ণুপুরের উল্লেখ আছে।মল্ল রাজা বীর হাম্বির আর উত্তরসূরি রাজা রঘুনাথ ও বীর সিংহদেবের সময়কালে গড়ে ওঠে বাংলার সুপ্রাচীন ঐতিহ্যশালী টেরাকোটা মন্দির স্থাপত্য।বিষ্ণুপুর ঘরানা (ইং ১৩৭০) ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পের এক উজ্বল ধারা।
কী দেখবেন :জোড়বাংলা,নন্দলাল,রাধামাধব,কালাচাঁদ,শ্যাম রাই,রাধাগোবিন্দ, মৃন্ময়ী, সর্বমঙ্গলা,মদনমোহন মন্দির,রাসমঞ্চ,গুমঘর,পাথর দরওয়াজা।
বালুচরি শাড়ি : বাংলা শাড়ি শিল্পের ইতিহাসে মসলিনের পরেই বালুচরি।তসর সিল্ক,চিত্র,কল্কা পাড় ও বুটির জন্য বিখ্যাত।বিষ্ণুপুর মেলা,বিষ্ণুপুর উৎসব,মাটির ঘোড়া,লণ্ঠন আর দশাবতার তাস পৃথিবী বিখ্যাত।
বিষ্ণুপুর থেকে কাছেই মুকুটমণিপুর।মুকুটমণিপুরের প্রধান আকর্ষণ হলো, কংসাবতী ও কুমারী নদীর মিলনস্থলে নির্মিত বাঁধ। বাঁধের উপর দিয়ে পিচ বাঁধানো রাস্তা (প্রায় সাত কিলোমিটার) দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। মুকুটমণিপুরে নৌকো করে বনপুকুরিয়া গ্রাম।এখানের অভয়ারণ্যে অনেক হরিণ আছে। স্থানীয় বাচ্চারা গাছের পাতা (হরিণের খুব প্রিয়) আঁটি আঁটি করে বিক্রি করে, এই পাতার আঁটি দেখলেই হরিণের পাল আপনার কাছে চলে আসবে।মুকুটমণিপুরে ড্যামের কাছেই আছে মুসাফিরানা পার্ক। এখান থেকে ড্যামের অসাধারণ দৃশ্যনন্দন প্রকৃতি উপভোগ করা যায়।
কীভাবে ভাবে যাবেন :রূপসী বাংলা,পুরুলিয়া হাওড়া ইন্টার সিটি ট্রেন , নিজের গাড়ি অথবা SBSTC বাসে (7699993948) দুর্গাপুর আবার দুর্গাপুর থেকে বাসে বিষ্ণুপুর।
কোথায় থাকবেন :সেরা আস্তানা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিষ্ণুপুর ট্যুরিস্ট লজ (9732100950)অনলাইন বুকিং লিঙ্ক- https://wbtdcl.wbtourismgov.in/home) ,এছাড়া হোটেল অন্নপূর্ণা (07407504000), মেক মাই ট্রিপ,গো আইবিবোতে সার্চ করুন।জয়পুর জঙ্গলের আগে বনলতা রিসোর্ট।
ওখানকার বিখ্যাত মেচা সন্দেশ (মেচা মহল-৮১৪৫০৪৪৩৯০) আর বিষ্ণুপুর লজ, ,মোনালিসা লজের (৯৪৩৪১১৫১৭৭)পোস্ত বড়া না খেলে ঠাকুর পাপ দেবেন।
দোলাডাঙ্গা ক্যাম্প,পুরুলিয়া
যারা রোমাঞ্চকর,থ্রিলিং বেড়ানো পছন্দ করেন তাদের কংসাবতী নদীর তীরে সোনাঝুরি জঙ্গলের ভেতরে দোলাডাঙ্গা ক্যাম্প ভাল লাগবে।নির্জন নিভৃত বনছায়াস্থল এই IZIFISO Backpackers Camp।
বনের মধ্যে টেন্টে থাকার রোমাঞ্চ,পরিষ্কার বাথরুম,থাকা খাওয়া মিলিয়ে জনপ্রতি ১৩০০ টাকা।
বনফায়ারে শাল চিকেন,সাঁওতালি নাচ দেখার খরচ আলাদা।রাতের নির্জন গভীর অন্ধকার জঙ্গল, কংসাবতীর পাড়ে বসে এই ৫মাসের দমবন্ধ মন আরাম পাবে।
IZIFISO Backpackers Camp এর অনলাইনে অগ্রিম বুকিং আর যাবতীয় ইনফরমেশন পাবেন। আপডেট: বিশিষ্ট ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক,কবি কমলেন্দু সরকার খোঁজ নিয়ে জানালেন এখন দোলাডাঙার বদলে কাছের মুকুটমণিপুরে থাকার আয়োজন আর দোলাডাঙা ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।ফোন করে যাওয়া শ্রেয়।
বিশেষ ভাবে মনে রাখবেন :এই সময় বেরোতে হলে স্যানিটাইজার,মাস্ক (জনপ্রতি অন্তত ৩/৪টে),ফেস শিল্ড,গ্লাভস,হেড ক্যাপ ,ডিজপোজেবল প্লেট ,জল সঙ্গে রাখতেই হবে আর যেখানেই থাকবেন লক্ষ্য রাখবেন তারা ম্যাক্সিমাম সেফটি প্রিকশন মেন্টেন করছেন কিনা, স্থানীয় বাসিন্দারা বাইরের লোক সমাগমে আপত্তি করছে কিনা এই সব ডিটেল ফোনে আগে থেকে জেনে বেরোবেন।
তথ্যসুত্র,ছবি সৌজন্যঃজয়িতা ঘোষ,দেবজিৎ দাসগুপ্ত –উইকেন্ড ট্যুরস ফ্রম কলকাতা, WbTourism,হোটেল ক্যান্ডেলউড পার্ক,মন্দারমণি,হোটেল অন্নপূর্ণা,বিষ্ণুপুর।
শেয়ার করুন :