করোনাকালে মেন্টাল হেলথ ভালো রাখতে এই এক্সপার্ট টিপস জানেন ? -

করোনাকালে মেন্টাল হেলথ ভালো রাখতে এই এক্সপার্ট টিপস জানেন ?

করোনাকালে মেন্টাল স্ট্রেংথ বাড়াবার জন্য ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট রিক হ্যানসনের অমূল্য টিপস।

গত ৭ মাসের এই ভয়ঙ্কর অতিমারীতে সবার জীবন যেভাবে বিপর্যস্ত,দুর্বিষহ,স্ট্রেস আর আসন্ন ভবিষ্যতে চাকরি,ব্যবসা, জীবন যাপনের দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন সেখানে মেন্টাল হেলথ ঠিক রেখেই এই বিপর্যয়ের সামনে দাঁড়াতে হবে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেটার গুড সায়েন্স সেন্টারের সিনিয়র ফেলো,ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট  রিক হ্যানসনের  অমূল্য টিপস  :

রেসিলিয়েন্স বা মানসিক দৃঢ়তা কে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

মানসিক দৃঢ়তাই মানুষকে যে কোনও বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে। সমুদ্রে সাঁতার কাটতে গিয়ে যখন ঢেউ ধাক্কা মেরে আপনাকে ফেলে দেয় আর আপনি সেই ধাক্কা সামলে আবার এগিয়ে যান পরের ঢেউয়ের মোকাবিলা করতে এটাও তেমন। মানসিক দৃঢ়তা তৈরী হয় সাহস, সংকল্প অর্থাৎ ডিটারমাইন্ড থাকা, সংবেদনশীলতা,কম্প্যাশন এবং অবিচলিত থাকার মিশেলে। মেন্টালি স্ট্রং থাকলেই এই বিপর্যয়ের সময় আপনাকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে অন্যান্যদের চেয়ে।

কিন্তু এই মেন্টালি স্ট্রং থাকার কথা বলা সহজ,করতে পারা খুব ডিফিকাল্ট নয় এই সময়ে?

আমাদের ব্রেনের মধ্যে একটা নেগেটিভিটি বায়াস আছে,দেখা যায় প্রশংসা,উৎসাহ দেওয়া কথার চেয়ে নিন্দা,সমালোচনার দিকে মানুষের মন বেশি চলে যায় ,তাই এই বিপৎকালে,অস্থির সময়ে মন সেদিকেই বেশি যাবে সেটা স্বাভাবিক কিন্তু আমাদের মনকে সেদিক থেকে টেনে পসিটিভিটি এবং ঘুরে দাঁড়াবার  কঠিন সংকল্প নিতেই হবে।সবসময় পসিটিভ থিংকিং করতে হবে।”A Positive thinker expects opportunity in every calamity and a  negative thinker expects calamity in every opportunity .’এই করোনাকালে অজস্র মানুষ স্বাভাবিক কারণেই ভীত,সন্ত্রস্ত,সোশ্যাল মিডিয়ার ভিড়েও একা।এই সময়ে খুব সিম্পল আর ন্যাচারাল বিষয় আমাদের পসিটিভ থাকতে সাহায্য করবে।খোলা আকাশের সামনে দাঁড়ালে, ব্যালকনি থেকে গাছের ডালে একটা পাখিকে লক্ষ্য করলে,গান শোনা,পছন্দের বই পড়া।

নিজের মেন্টাল স্ট্রেংথ  কি করে বাড়ান যাবে ?

প্রথমেই বাস্তবকে স্বীকার করতেই হবে,তার মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে।চাকরি চলে গেছে ? ঠিক আছে,আমি চাকরি করছিলাম যখন তখন নিশ্চয়ই আমার কোয়ালিটি আছে, সেটাকে এখন এই নিউ নর্মাল সিচুয়েশনে কিভাবে কাজে লাগাতে পারি? রোজ নতুন অপার্চুনিটি খোঁজার জন্য কি প্ল্যান আর এক্সসিকিউশন করছি তার চেক লিস্ট, এই সাত মাসের এত খারাপের মধ্যে কি কি পসিটিভিটি তাই খুঁজে বের করতেই হবে এমন একটা কিলার ইন্সটিংক্ট ।কি করে পারব নয়,করে দেখাতেই হবে।

সাইকোলজিস্ট হিসেবে আমার প্রথম সাজেশন হলো নিজের SWOT অ্যানালিসিস করে নিজের সত্যিকারের অ্যাসেসমেন্ট করে সেই মতো প্ল্যান করা,অর্থাৎ যখন আগামী সবকিছু অনিশ্চিত তখন এই মাসের,এই সপ্তাহের প্ল্যান আর এক্সিকিউশন করা উচিত।

 এই বিষয়টা একদম নিজের মনের ভেতরে ফিক্স করে দিতে হবে। দরকার মত একটু স্লো ডাউন করুন ,সেই বিষয়ের এক্সপার্টদের পরামর্শ নিন আর নিজের কাজের ক্ষেত্রে নিয়মিত আপডেটেড থাকুন যেটা খুব জরুরি, রোজ নিজের নেটওয়ার্ক বাড়াবার চেষ্টা করে যান।

মন ঠিক রাখার কোনও শারীরিক এক্সারসাইজ ?

শান্ত থাকুন।রোজ অন্তত ১০ মিনিট ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন। নাক দিয়ে জোরে প্রশ্বাস নিয়ে কিছুক্ষন ধরে রেখে আস্তে আস্তে মুখ দিয়ে নিশ্বাস ছেড়ে নিন,এতে মন শান্ত আর হার্ট ভালো থাকবে।এছাড়া সকালে অথবা সন্ধ্যায় হাঁটার ,জগিংয়ের অভ্যাস ভাল।অযথা ফোন ঘাঁটার চেয়ে একা চুপ করে ইউ টিউবে peace music শুনতে পারেন। 

আশে পাশের,ফ্যামিলির কেউ বা অন্যরা আপনার মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে হেল্প করতে পারে ?

নিশ্চয়ই পারে। এমনকি ফিজিক্যালি দূরে থেকেও মেন্টাল কম্প্যাশনে হেল্প করতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে তাই হচ্ছেও।কিন্তু সেক্ষেত্রে খুব মন দিয়ে সেই কথা শোনা আর তা মনে রাখা খুব প্রয়োজনীয়।অনেক সময়ে সেটা আপনার নিজস্ব ভাবনাচিন্তার সম্পূর্ণ উল্টো হলেও আপনার কাজে লাগতে পারে।

এখানে একটা বিষয়ে খেয়াল রাখা দরকার সেটা হল আপনি একা নন,আপনার আশে পাশে বা দূরের শুভানুধ্যায়ীরাও কিন্তু এই সময়ে খুব স্ট্রেস আর দুশ্চিন্তায় আছেন।


পড়ুন: এখন হতাশা কাটিয়ে ভাল থাকার এক্সপার্ট টিপস জানেন?


আমাদের ব্রেনে ইন্সুলা বলে একটি পদার্থ আছে যেটা এই সময়ে মেন্টাল আর ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি কমিয়ে দিয়ে একটা ডিফল্ট মোডে নিয়ে গিয়ে আক্ষেপ আর হতাশা বাড়িয়ে তোলে যেটা মাত্র তিনটে ডিপ ব্রেথিং এক্সারসাইজে চলে যেতে পারে।

মোদ্দা কথা জীবনে জীবনে পসিটিভিটি আনতেই হবে,মেন্টালি স্ট্রং থাকতেই হবে,ছোট ছোট পদক্ষেপ একটু একটু করে হতাশা আর দুশ্চিতা থেকে আপনাকে প্রাণবন্ত করবে আর তাহলেই সব যুদ্ধ জয় করা যাবে।

বেশি দূরে যেতে হবে না ,আই পি এল এ রাহুল তেওয়াটিয়ার ইনিংস দেখে শিখুন।১৮ বলে ৯ রান থেকে ৩১ বলে ৫৩ করে ২২৩ রানের পাহাড় টপকাল।

ঋণ :ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *